টাকার মান কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
প্রকাশের সময় : 2019-10-24 12:56:57 | প্রকাশক : Administration
দীর্ঘদিন আটকে রাখার পর ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমাতে শুরু করেছে সরকার। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে অনেকটা বাধ্য হয়েই এই কাজটি করা হচ্ছে। এক দিনেই প্রতি ডলারে ১৫ পয়সা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চীন, ভারত, ভিয়েতনামসহ প্রতিযোগী দেশগুলোর মতো রপ্তানিকারক ও প্রবাসীদের সুবিধা দিতে এই পথ বেছে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলার বেশ খানিকটা শক্তিশালী হবে বলে আভাস দিয়েছেন ব্যাংকাররা।
‘দীর্ঘদিন ডলার-টাকার বিনিময় হার ধরে রাখা ঠিক হয়নি’ মন্তব্য করে অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর বলেন, “অনেক পিছিয়ে গেছি আমরা। আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো বিশ্ববাজার দখল করতে তাদের মুদ্রার মান অনেক কমিয়েছে; আমরা করিনি। এখন আমাদের রপ্তানি আয় কমে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছি না।”
তিনি বলেন, “নগদ সহায়তা দিয়ে রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব নয়। এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত। এই মুহুর্তে যেটা করতে হবে সেটা হল ডলারের বিপরীতে আমাদের টাকার মান কমাতে হবে। যে কাজটি আমাদের কমপিটিটর দেশ চীন, ভারত ও ভিয়েতনাম প্রতিনিয়ত করছে। ক’দিন আগে চীন তাদের মুদ্রার মান কমিয়েছে। আমাদেরও এখন সেই কাজটি করতে হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এক বছর আগে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের দর ছিল ৮৩ টাকা ৮০ পয়সা। অল্প অল্প করে বেড়ে ২০১৯ সালের এপ্রিল শেষে তা ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা হয়। এর পর থেকে টানা ছয় মাস টাকা-ডলারের বিনিময় হার ‘এই’ একই জায়গায় স্থির রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, মূলতঃ দুটি কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমছে। প্রথমতঃ ইউরোপের দেশগুলো আমাদের রপ্তানির প্রধান বাজার। সেখানে এক ধরনের অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। সে কারণে সে দেশগুলোর মানুষ খরচ কমিয়ে দিয়েছে। তবে আমেরিকার অর্থনীতি চাঙ্গার কারণে সেখানকার বাজারে বাংলাদেশ ভালো করছে।
দ্বিতীয় কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের নিজস্ব, সেটা হচ্ছে, উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু পণ্যের দাম বাড়ায়নি বায়াররা। প্রতিযোগী দেশগুলো বাজার ধরে রাখতে তাদের মুদ্রার মান কমিয়েছে; আমরা সেটাও করিনি। সবমিলিয়েই আমরা পিছিয়ে পড়ছি।”
সবমিলিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে চীন, ভিয়েতনাম, ভারতসহ অন্য প্রতিযোগী দেশগুলোর মতো টাকা অবমূল্যায়নের পরামর্শ দেন এই অর্থনীতিবিদ। তানাহলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যাবে না। - আবদুর রহিম হারমাছি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম