বদলে যাবে গ্রামীণ সড়ক

প্রকাশের সময় : 2020-01-16 17:09:49 | প্রকাশক : Administration
বদলে যাবে গ্রামীণ সড়ক

আরিফুর রহমানঃ মানুষের দান করা জমিতে একসময় গড়ে উঠেছিল আঁকাবাঁকা গ্রামীণ সড়ক। কারো ঘরের পাশ দিয়ে, কারো উঠান ঘেঁষে ওই সব সড়ক যুক্ত হয়েছে ইউনিয়নে; ইউনিয়নের সড়ক গিয়ে ঠেকেছে উপজেলা হয়ে জেলায়। তেমন কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই ব্যক্তি বা পাড়ার প্রয়োজন মেটাতেই ছিল ওই সব গ্রামীণ সড়ক। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সময় পেরিয়েছে প্রায় পাঁচ দশক। এ সময়ে ওই সব সড়কের অনেকগুলোই প্রয়োজনের তাগিদে বড় হয়েছে। এরপরও দেশের গ্রামীণ সড়কের বেশির ভাগই রয়ে গছে সরু, কোথাও হাঁটার উপযোগী, কোথাও বা রিকশা বা হালকা যানবাহন চলার উপযোগী। উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এসব সড়ক আর প্রয়োজন মেটাতে পারছে না। ফলে বদলে ফেলা হবে সেসব সড়ক। করা হবে চার লেনের সড়ক। আর এ জন্য পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাংক ঘোষিত মধ্যম আয়ের দেশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। জাতিসংঘ ঘোষিত স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ারও স্বপ্ন দেখছে। সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গড়ে উঠেছে শিল্প-কারখানা ও বিদ্যুতকেন্দ্র। দেশের আর্থ- সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন এসেছে আমূল। সেই চিন্তা থেকে গ্রামীণ তিন লাখ ৫৪ হাজার কিলোমিটার সড়কের কাঠামো পুরোপুরি পরিবর্তন করতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রয়োজন ও চাহিদার কথা বিবেচনা করে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে চার লেনের সড়ক দেখতে পাবে সাধারণ মানুষ।

পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে দেশে নতুন যেসব গ্রামীণ সড়ক হবে, সেগুলো চার লেন করার পাশাপাশি বিটুমিনাস কার্পেটিং, বেস ও সাববেসেও পরিবর্তন আনা হবে। এসব সড়ক করতে প্রয়োজনে সরাসরি জমি অধিগ্রহণও করতে পারবে এলজিইডি। আঁকাবাঁকা সড়ক পরিবর্তন করে সোজা করা হবে। বিদ্যমান যেসব সড়ক আছে এবং ভবিষ্যতে যেসব সড়ক নির্মিত হবে, সেসব ক্ষেত্রে নতুন নকশা বাস্তবায়িত হবে। এলজিইডি থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা পর্যায়ে যেসব সড়ক রয়েছে, সেগুলোর দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ)।

উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ের সড়কগুলোর দায়িত্ব এলজিইডির। সারা দেশে এখন তিন লাখ ৫৪ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ৩৭ হাজার কিলোমিটার উপজেলায়, ৪২ হাজার কিলোমিটার ইউনিয়ন এবং দুই লাখ ৭৫ হাজার কিলোমিটার গ্রামের সড়ক। পরিকল্পনা কমিশন থেকে জারি হওয়া গেজেট ‘সড়কের নকশা কাঠামো’ দিয়ে এত দিন চলে আসছে এসব সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ। এলজিইডি কী করতে পারবে, আর কী করতে পারবে না, তা এ কাঠামোর মধ্যেই স্পষ্ট বলা আছে। সেই সড়কের নকশা কাঠামো হালনাগাদ করে নতুন প্রস্তাবনা তৈরি করেছে এলজিইডি। বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে প্রস্তাবনাটির এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনও মিলেছে। সড়কের নকশা কাঠামো পরিকল্পনা কমিশন থেকে গেজেট হওয়ার অপেক্ষায়। গেজেট জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন কাঠামো নিয়ে কাজ শুরু করবে এলজিইডি।

প্রস্তাবিত সড়কের নকশা কাঠামোটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গ্রাম পর্যায়ে এতদিন যেসব সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল, সেগুলো সর্বনিম্ন ১০ ফুট চওড়ার। ইউনিয়ন পর্যায়েরগুলো ছিল ১২ ফুট চওড়ার। আর উপজেলা পর্যায়ে সড়কগুলো নির্মাণ করা হয়েছে ১৮ ফুট চওড়া। এর বেশি চওড়া সড়ক এলজিইডি করতে পারে না। প্রস্তাবিত কাঠামোতে ১০ ফুটের সড়ক রাখা হয়নি। অর্থাৎ নতুন নকশাটি পাস হওয়ার পর গ্রাম পর্যায়ে আর ১০ ফুটের সড়ক নির্মাণ করা হবে না। সর্বনিম্ন সড়ক হতে হবে ১২ ফুট চওড়ার। যানবাহনের সংখ্যা ও চাপের ওপর নির্ভর করে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সড়ক হবে ১৮, ২০, ২২, ২৪ ও ৩৬ ফুট চওড়ার। অর্থাৎ চার লেন পর্যন্ত সড়কও করতে পারবে এলজিইডি, যেটা এখন শুধু সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর করতে পারে। নতুন নকশাটি পাস হলে এলজিইডিও চার লেনের সড়ক বাস্তবায়ন করতে পারবে।

তবে তা শুধু প্রয়োজন ও চাহিদার ওপর ভিত্তি করে করা হবে। একই সঙ্গে জলবায়ু সহিষ্ণু সড়কও নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে একটি সড়কের বেস (কার্পেটিংয়ের নিচের অংশ) হয় ১৫০ থেকে ২২৫ মিলিমিটারের মধ্যে, সাববেস (বেসের নিচের অংশ) হয় ১৫০ থেকে ৩০০ মিলিমিটারের মধ্য। নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে সড়কের বেস হবে ২০০ থেকে ২২৫ মিলিমিটার।

সাববেস হবে ২০০ থেকে ২৭৫ মিলিমিটার। গ্রামীণ সড়কের কাঠামো পুরোপুরি পরিবর্তনের প্রয়োজন কেন হলো এমন প্রশ্নের জবাবে এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মীর তানভীর হোসাইন বলেন, ‘দেশে দ্রুত নগরায়ণ ঘটছে। গ্রাম ও ইউনিয়ন পর্যায়ে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। গ্রামে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়েছে। গাজীপুর, চট্টগ্রাম নারায়ণগঞ্জসহ অনেক ইউনিয়নে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। নতুন নতুন স্থলবন্দর হচ্ছে। কিন্তু আমাদের সড়ক তো সেই ১০ ফুটেই রয়ে গেছে।’ - কালের কন্ঠ

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com