পদ্মা সেতুর কাজে বিশেষ গতি অপ্রতিরোধ্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাঙালী

প্রকাশের সময় : 2018-06-10 10:35:32 | প্রকাশক : Admin
�পদ্মা সেতুর কাজে বিশেষ গতি  অপ্রতিরোধ্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাঙালী

সিমেক ডেস্কঃ পদ্মা সেতুতে কাজের গতি এখন ক্রমেই বাড়ছে। মাওয়া প্রান্ত থেকে জাজিরা প্রান্ত জুড়ে শুধুই কাজ আর কাজ। মূল সেতুর কাজে এখন বিশেষ এক গতি পেয়েছে। একে একে ৪টি স্প্যান বসে গেছে। এর চেয়ে বড় অগ্রগতি হচ্ছে পদ্মায় এখন পাইল বসছে সমানে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নদীতে ১৪০টি পাইল বসে গেছে। আরও ১০টি পাইলের বটম সেকশন বসেছে। মাওয়া থেকে জাজিরার দিকে তাকালেই এখন স্পষ্ট চিত্রটি চোখে পড়ে।

সেতুর এ্যালাইমেন্ট জুড়ে কাজ আর কাজ। সেখানে বড় বড় ক্রেন ছাড়াও নানা ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার চলছে। ৫ম ও ৬ষ্ঠ স্প্যান স্থাপনের জন্য খুঁটিগুলো সম্পন্ন করার কাজ চলছে। একযোগে চলছে অন্যান্য কাজও। সেতুর শেষ প্রান্তে জাজিরার ৪২ নম্বর খুঁটি (পিয়ার) তৈরি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে এই খুঁটির ওপর এবং ৪১ নম্বর খুঁটি জুড়েই বসবে ৫ম স্প্যানটি। আর এর পাশে জাজিরা প্রান্তের সংযোগ সেতুর কাজ এগিয়ে চলেছে। দেড় কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ এই সংযোগ সেতুর (ভায়াডাক্ট) ১৯৩টি পাইলের ওপর ৪০টি ক্যাপ তৈরি হচ্ছে। তার ৩০টি ক্যাপই হয়ে গেছে। আর মাওয়া প্রান্তে অনুরূপ সংযোগ সেতুর ১৭২টি পাইলের মধ্যে ১৪০টি পাইল বসে গেছে। মাওয়া প্রান্তে এখন হুলস্থুল কাজ। এই প্রান্তের ২ নম্বর পিয়ার সম্পন্ন। ৩ নম্বর পিয়ারের কাজও চলমান রয়েছে। তিন পিয়ারের কাজ শেষ হলেই বসবে ‘১-বি’ নম্বর ৬ষ্ঠ স্প্যান।

পাশের ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারের ক্যাপিং কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাছাড়া অন্যান্য পিলারের কাজও এগিয়ে চলছে। মাওয়া প্রান্তে ৬, ৭ ও ৮ এই তিন পিলারে, পদ্মার মাঝের চরের ১০ ও ১১ নং এবং জাজিরা প্রান্তের ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১ ও ৩২ নং পিলারসহ মোট ১১টি পিলারের ডিজাইনে নতুন নকশা এখনও হাতে আসেনি। তবে এই ১১টির ডিজাইন চূড়ান্ত; ৭টি করে পাইল বসবে। সে কারণে কাজ শুরু করতেও বাধা নেই বলে দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন। তাই এই নক্সা কাজের বিলম্বের কোন বাধাঁ হচ্ছে না।

কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত দ্বিতল পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। সেতুর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন আর ওপর হবে সড়কপথ। সেতুর নির্মাণ শেষ হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে সরাসরি যুক্ত হবে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে। পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানোর পাশপাশি স্প্যানের ওপরের স্লাভ তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। কুমারভোগের বিশেষায়িত ওয়ার্কশপের উত্তর প্রান্তে চলছে এই কাজ। রেলওয়ের স্লাভ তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। এ পর্যন্ত প্রয়া ৩৬০ স্লাভ তৈরি হয়েছে।

এ ছাড়া এখনও ট্রায়ালে রয়েছে রোডওয়ে ডেক্সস্লাভ, যার ওপর দিয়ে বাস চলবে। ট্রায়াল রিপোর্ট পাওয়ার পরই শীঘ্রই এই রোডওয়ে ডেক্সস্লাভ তৈরির কাজও শুরু হবে। ওয়ার্কসপের ভেতরে এই স্লাভ তৈরি ছাড়াও চীন থেকে খন্ডখন্ড আকারে জাহাজে করে আসা স্প্যানগুলো জোড়া লাগানোসহ নানা ধরনের কাজ চলছে। চলছে পাইলের স্ট্রিলের টিউব তৈরির কাজও। তবে সেতুতে ব্যবহারের বেশির ভাগ টিউবই তৈরি হয়ে গেছে। এখন নতুন ডিজাইন অনুযায়ী নতুন সাইজের টিউব তৈরি হচ্ছে।

৪র্থ স্প্যান বসানোর পর ৬শ’ মিটার দৃশ্যমান হওয়ার পর পদ্মার দু’পাড়ে লাখ লাখ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। ৪টি স্প্যান বসানো হয়েছে। আর এ সেতুর কাজ শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকাসহ পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ স্থাপন করবে এ সেতু। এতে অর্থনৈতিক চাকা ঘোরার পাশাপাশি অসংখ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

চারিদিকে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। আর পদ্মাপাড়ে এর মাত্রাটি অনেক বেশি। মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১ সফল উৎক্ষেপণের ঐতিহাসিক ঘটনা। সেই রেশ না কাটতেই সকালের ঘুম ভাঙতেই ৪র্থ স্প্যান স্থাপনের খবরে আনন্দের মাত্রা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ তর তর করে অনন্য উচ্চতায় এগিয়ে যাওয়ার বার্তা জানাচ্ছে। জানান দিচ্ছে-বাঙালীর অপার সম্ভবনার।

এটা যে কত গর্বের, কত ভাললাগার তা সাধারণের সঙ্গে কথা বলেই বোঝা যায়। পদ্মা সেতু বাঙালী গর্বের, অহঙ্কারের এক বীরত্বগাথা। যারা এতদিন ভাবছিল পদ্মা সেতু আদৌ হবে কী না, পদ্মা সেতু একের পর এক ¯প্যান বসানোর ফলে বাস্তবে রূপ নেয়ায় তাদের সকল সংশয় কেটে গেছে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও প্রজ্ঞাপূর্ণ সিদ্ধান্তেই ‘পদ্মা সেতু’, ‘মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১’, ‘সমুদ্র জয়’, স্বল্প উন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরসহ ধাপে ধাপে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চারিদিকে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছে, বদলে যাচ্ছে জনপদের চেহারা। অপ্রতিরোধ্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাঙালী।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com