ভালোবাসার অসমাপ্ত গল্প
প্রকাশের সময় : 2020-03-11 12:29:26 | প্রকাশক : Administration
- ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি! তোমাকেও ভালোবাসতে হবে।
- ভালোবাসি না ভালোবাসি না ভালোবাসি না! আর কখনো ভালোবাসবো না।
- কি বললা। তুমি কেন আমাকে ভালোবাসবে না। আমি দেখতে খারাপ? কোন দিক দিয়ে আমার কম আছে।
- কারণ তোমাকে আমার ভালো লাগে না। আমি যেমন মেয়ে আমার লাইফ পার্টনার করে চাই তুমি তেমন না। একদম আলাদা।
- তুমি কেমন মেয়ে চাও। কেমন করলে তুমিও আমাকে ভালোবাসবে।
- আমি তোমাকে কখনওই ভালোবাসবো না।
- কিন্তু কেন???
- আমার ইচ্ছে তাই।
- না তোমার ইচ্ছে না। তোমাকে আমাকে ভালোবাসতেই হবে।
- না আমি তোমাকে ভালোবাসবো না।
- ওকে আমিও দেখে নিবো। কিভাবে ভালোবাসা আদায় করতে হয় আমার খুব ভালো করে জানা আছে।
- ওকে যা ইচ্ছে করতে পারো কিন্তু ফলাফল শূন্যই হবে।
মেঘা রাগে আগুন হয়ে চলে গেল। সাব্বিরকে অসম্ভব ভালোবাসে কিন্তু সাব্বির কোনো পাত্তাই দিতে চায় না। কারণ মেঘা একদম অন্যরকম। ছেলেদের মতো করে সে চলে। জিন্স পড়ে, গায়ে শার্ট, মাথায় ক্যাপ। তাকে দূর থেকে দেখলে একটা ছেলেই মনে হবে। আর এসব সাব্বির একদমই পছন্দ করে না।
একটু চঞ্চল মেয়েদের এটাই সমস্যা। একটু অন্যভাবে চলে কিন্তু এদের প্রেমেই ছেলেরা বেশি পড়ে। সাব্বিরও পড়েছে কিন্তু সে আগে মেঘাকে নিজের মনের মতো করবে তারপর বলবে নিজের ভালবাসার কথা। ভার্সিটির সামনে সাব্বির বসে আছে। তখনি একটা মেয়ের আগমন। দূরে তাই পুরাটা বুঝা যাচ্ছে না।- দোস্ত আমার কিন্তু মেয়েটার সাথে হয়ে গেছে। (সিপন)
- কি হয়েছে গেছে। (সাব্বির)
- প্রেম"
- ওহ, আমি তো ভাবছি বিয়ের আগেই বাবা হতে যাচ্ছিস।
- উল্টা ভাবস ক্যান। কিরে মেয়েটা তো এই দিকেই আসছে
- আসলেই তো। আরে এটা মেঘা না।
- হুম মেঘাই তো।
- কেমন লাগছে। হুম, ঐ তুই হা করে আসিস কেন। যা এখান থেকে। (মেঘা)
- যাচ্ছি যাচ্ছি। (সিপন)
সাব্বির খুব অবাক হলো মেঘাকে শাড়ি পড়া দেখে। মনেমনে ভাবতে লাগলো এমন ভাবেই সে মেঘাকে দেখতে চায়। সাব্বির মেঘার রূপের অথৈ সাগরে ভেঁসে বেড়াচ্ছে। সে এখনই জোড়ে চিৎকার করে বলতে চাইছে ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।
- হাসো কেন?
- তোমাকে দেখে।
- আমাকে দেখে হাসার কি আছে।
- আজকে কোনো অনুষ্ঠান নেই তুমি শাড়ি পড়ে এসেছো কেন।
- আমার ইচ্ছে হইচে তাই।
- হা হা সুন্দর লাগছে হু হু হু, খুব সুন্দর লাগছে।
- সুন্দর লাগছে বলতে কি হাসতে হয় নাকি।
- তোমার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে আমার হাসি আসছে।
- সত্যি কি আমাকে খারাপ লাগছে।
- আরে না না খুব সুন্দর লাগছে। আমি তো প্রেমে পড়ে গেছি। হি হি হি।
- আমাকে নিয়ে মজা করছো।
- না তো মজা কেন করব।
- তাহলে এমন হাসছো কেন।
- হাসি আসতেছে আমি কি করব কাঁদবো না কি ব্যা ব্যা করে।
- (চুপ করে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে মেঘা। চোখের কোনো হালকা পানিও জমে গেছে। মনে হচ্ছে বৃষ্টি নামবে। অতঃপর বৃষ্টি নেমেই আসলো।)
- আরে তুমি কাঁদছো কেন (শব্দহীন কান্না চলছে মেঘার চোখের কাজলে কালো রেখা টেনে দিল মেঘার গালে)
- তুমি কাঁদো কেন??? ( কান্না আসতে আসতে তীব্র হচ্ছে, ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগলো)
- তুমি কি বাচ্চা নাকি কাঁদছো কেন কান্না বন্ধ কর। সবাই দেখছে কিন্তু।
সাব্বিরের কোনো কথা শুনছে না, কেঁদেই চলেছে। কিভাবে কান্না থামাবে কোনো উপায়ও খুঁজে পাচ্ছে না। শেষমেশ মেঘাকে সোজা বুকে নিয়ে নিল।
- এবার তো কান্না বন্ধ করো ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।
( তাও কাঁদছে)
- মেঘা কান্না বন্ধ করো আমার শার্ট ভিজে গেছে তো।
- ভিজুক।
- আমার ঠান্ডা লেগে যাবে।
- এমন করে হাসছিলে কেন। কতো কষ্ট করে তোমার জন্য সেজেগুজে আসছি আর তুমি হাসো।
- তা তো তোমাকে রাগাতে।
- আমাকে রাগাতে নাকি কাঁদাতে।
- না রাগালে কি কাঁদতে তুমি?
- আমাকে কাঁদাতে ভালোলাগে তাই না।
- কি বলে পাগলি তোমার কান্না থামাতে তো বুকে নিলাম তোমাকে।
- ঢং করো না। আমি জানি আমাকে কাঁদাতে তোমার ভালোলাগে।
- সত্যি তোমাকে কাঁদাতে নয় রাগাতে ভালোলাগে।
- হুম তাহলে এতোদিন ভালবাসি বলোনি কেন???
- ভালবাসি বললে কি এই সাজটা দেখতে পেতাম।
- তার মানে তুমিও আমাকে ভালবাসতে।
- আবার জিগায়।
- আই লাভ ইউ বলো
পাপা পাপা আমাকে আজকে বেড়াতে নিয়ে যাবে। হুমম আম্মু নিয়ে যাবো। সত্যি পাপা। হুম সত্যি। তিন সত্যি বলো। সত্যি সত্যি সত্যি তিন সত্যি আজকে আমার অবনী মামণিকে বেড়াতে নিয়ে যাবো। আই লাভ ইউ পাপা, উমমমমমমমম্মা। আই লাভ ইউ টু মামণি, উমমমমমমমম্মা।
শরীর পুরা শক্তি দিয়ে জড়িয়ে ধরে পাপার গালে চুমু দিলো অবনী। সাব্বিরও দিলো অবনীর কপালে। ছোট্ট অবনী। মেঘার শেষ স্মৃতি। অবনীকে নিয়ে সাব্বির আজো বেঁচে আছে। অবনীকে জন্ম দিতে গিয়েই মেঘার জীবনাবসান ঘটে। পাঁচবছর হয়ে গেল মেঘা পৃথিবী ছেড়ে সাব্বিরকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে গেছে আর দিয়ে গেছে আজকের ছোট্ট পাঁচ বছরের অবনীকে।
মেঘার কথা ভাবতে ভাবতেই সাব্বির অতীতে হারিয়ে ছিল। কিন্তু সাব্বির একা নয়, ছোট্ট অবনী আছে সাব্বিরের। তার স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে সাব্বির আরেকটা বিয়ে করেনি। কারণ সৎ মা কেমন হয় কে জানে সেই ভয়ে সাব্বির নতুন কাউকে মেঘার স্থানটি দেয়নি। কম সময়ের ভালোবাসার স্মৃতি দিয়ে জীবন পাড় করা খুব সহজ কাজ নয়!!! - বিডিআপ২৪ডটকম