একটি আশা জাগানিয়া প্রকল্প
প্রকাশের সময় : 2020-10-01 11:30:27 | প্রকাশক : Administration
রাজন ভট্টাচার্যঃ যানজট কাটিয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে গাজীপুরের দ্রুত সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে এগিয়ে চলছে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে কাজের গতি কিছুটা মন্থর হলেও প্রকল্প থেমে নেই। যানজট নিরসনে এটি আশা জাগানিয়া প্রকল্পের অন্যতম। নির্মাণ কাজ শেষ হলে শুধু ঢাকা-গাজীপুর জেলার যাত্রীরাই উপকৃত হবেন না এর সঙ্গে বৃহত্তর ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইলসহ গোটা উত্তরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের পথ সুগম হবে।
এখন মহাখালী থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা যেতে কখনও তিন ঘণ্টার বেশি লাগে। বিআরটি সড়ক ব্যবহার করে সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টায় এইটুকু সড়ক অতিক্রম করা সম্ভব হবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার দাবি পরিবহন সংশ্লিষ্টসহ এই মহাসড়কে চলা সাধারণ যাত্রীদেরও। সাড়ে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বিআরটি প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি এখন ৪২ ভাগ।
বিআরটি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাসের মাধ্যমে ঘণ্টায় ২৫ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট অনেকটাই কমে যাবে। যাতায়াতে সময় কম লাগার কারণে প্রতিটি বাস আগের তুলনায় বেশিবার যাতায়াত করতে পারবে। এর মাধ্যমে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের পথ সুগম হবে। যাত্রীরা দ্রুত কর্মস্থলে পৌঁছার ফলে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, যা অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে।
পাশাপাশি যাত্রীরা অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবেন এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। এছাড়া ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাসের টিকেট বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত টাকা সরকারের রাজস্ব খাতকে শক্তিশালী করবে। বিআরটি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাস মালিক, ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও পথচারীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যে শুল্ক প্রদান করবে তার ফলে সরকারের অর্থনৈতিক পরিধি ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে। ফলে জাতীয় অর্থনীতি ও জিডিপি বৃদ্ধি পাবে।
২০১২ সালে বিআরটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পে থাকছে, চার দশমিক ৫ কিলোমিটার এলিভেটেড ফ্লাইওভার ও সেতু। যার মধ্যে ৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার ৬ লেন বিশিষ্ট এবং ১ কিলোমিটার ২ লেন বিশিষ্ট। থাকছে ৬টি এলিভেটেড স্টেশন ও ১০ লেন বিশিষ্ট টঙ্গী সেতু। ছয়টি উড়াল সড়ক ও আন্ডারপাস। জলজট নিরসনে প্রকল্পের আওতায় টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকল্পে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য পৃথক লেন থাকছে। দ্রুতগতির যান চলাচলের জন্য সড়কের মাঝ বরাবর দুই লেন পৃথক করা হবে।
২০১২ সালে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। প্রথমে ঠিক হয় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত এটি নির্মাণ করা হবে। উদ্দেশ্য গাজীপুর থেকে দ্রুত সময়ে ঢাকায় চলাচল। এরপর দাতা সংস্থার অর্থায়ন সাপেক্ষে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে বিআরটির আরেকটি অংশ। এ আশায় ২০১৭ সালের অক্টোবরে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় সেতু কর্তৃপক্ষ। - জনকন্ঠ