গভীর সমুদ্রবন্দরের স্বপ্ন পূরণ

প্রকাশের সময় : 2020-10-14 15:14:27 | প্রকাশক : Administration
গভীর সমুদ্রবন্দরের স্বপ্ন পূরণ

হাসান নাসিরঃ আকার বাড়ছে দেশের অর্থনীতির, বাড়ছে আমদানি-রফতানির পরিমাণ, গড়ে উঠছে অনেক অর্থনৈতিক অঞ্চল। ক্রমবর্ধমান আমদানি- রপ্তাতানির চাপ সামাল দিতে প্রয়োজন বড় বন্দর। বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সরকার হাত দিয়েছে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ কাজে। কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে উঠছে গভীর সমুদ্র বন্দর।

এই বন্দর হবে আগামীর বন্দর, যা দিয়ে সেবা প্রদান করা যাবে প্রতিবেশী দেশগুলোকেও। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ প্রক্রিয়ায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হবে খুব শীঘ্রই। এরপর হবে ঠিকাদার নিয়োগ। এগোচ্ছে বন্দরের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া। ২০২৬ সালের মধ্যে গভীর সমুদ্র বন্দর চালু করার টার্গেট নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে সরকার।

করোনার কারণে কয়েক মাসের জন্য স্থবিরতা থাকলেও কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া সন্তোষজনক। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদন পেয়েছে জাপানের প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোয়ি। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়ে যাওয়ার পরই ডিটেইল প্ল্যান বা বন্দরের ডিজাইন করবে নিপ্পন। তারপর ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে কাজ শুরু হয়ে যাবে। তবে এখনও মাঠ পর্যায়ের কাজ থেমে নেই।

বিশেষ করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য কোল জেটি নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। যা গভীর সমুদ্র বন্দরকেই এগিয়ে নিচ্ছে। ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ। দেশের অর্থনীতির আকার বাড়ার কারণে আমদানি-রপ্তানি যে গতিতে বাড়ছে তাতে চট্টগ্রাম বন্দরের একার পক্ষে চাপ সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। বর্তমানে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯২ ভাগ সম্পাদিত হয়ে থাকে এই বন্দর দিয়ে।

দেশে গড়ে উঠছে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, যার মধ্যে চট্টগ্রামে মীরসরাই, সীতাকুন্ড ও ফেনীর সোনাগাজী মিলিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর হবে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম। এই শিল্প নগরে গড়ে উঠতে শুরু করেছে দেশী-বিদেশী অনেক শিল্প কারখানা। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করার কাছাকাছি পর্যায়ে।

অনেক সুদূরপ্রসারী চিন্তায় একটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছেন সরকার। যা এখন আর স্বপ্ন নয় বরং দৃশ্যমান হতে চলেছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা, যার বেশিরভাগই দেবে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। বাকি অর্থের যোগান দেবে সরকার এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

কর্ণফুলী চ্যানেলে অবস্থিত এ বন্দর সমুদ্র থেকে বেশ উজানে। জেটি পর্যন্ত পৌঁছতে একটি জাহাজকে দুটি বিপজ্জনক বাঁক অতিক্রম করতে হয়। ঝুঁকির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে ১৯০ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভিড়তে পারে না। তাছাড়া যে ড্রাফটের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ে তাতে সর্বোচ্চ ২২শ’ থেকে ২৩শ’ কন্টেনার বহন করা যায়। গভীর সমুদ্র বন্দরে আসতে পারে একসঙ্গে ১২-১৩ হাজার টিইইউএস কন্টেনার ধারণ করা জাহাজ। এই বন্দরে চীন ও সিঙ্গাপুর থেকে সরাসরি বড় জাহাজ আসতে পারবে।

১২ মিটার ড্রাফটের বেশি জাহাজ যে বন্দরে ভেড়ানো যায় সেই বন্দরকে গভীর সমুদ্র বন্দর হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারে। জাপানী সংস্থা জাইকা ২০১৬ সালে যে সার্ভে করে তাতেই মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা সম্ভব বলে বেরিয়ে আসে।

মাতারবাড়িতে এখন ৩৫০ মিটার চওড়া এবং ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। জেটি নির্মাণের কাজও চলছে। চ্যানেল নির্মাণের এই কাজ এগিয়ে নিচ্ছে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্প। সেখানে জাহাজ ভিড়বে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে। মাতারবাড়িকে খুব সহজেই জলপথ, স্থলপথ ও রেলপথের সঙ্গে সংযুক্ত করা সম্ভব হবে। সেখানে বন্দর হলে ত্রিমুখী যোগাযোগ অপেক্ষাকৃত সহজ হবে।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com