আমনে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কৃষক

প্রকাশের সময় : 2020-11-26 11:59:23 | প্রকাশক : Administration
আমনে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কৃষক

ওয়াজেদ হীরাঃ নিশ্চিত ফসল বলা হয় আমনকে। আর সেই আমন ধানে এখন সবুজ ফসলের মাঠ। শস্যভান্ডার সমৃদ্ধ করতে কৃষকের নিশ্চিত ফসল আমন থেকে আসবে দেড় কোটির বেশি মেট্রিক টন চাল। করোনায় বিশ্বে খাদ্য নিয়ে আশঙ্কার কথা বলা হলেও দেশের মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তায় স্বস্তিতে রাখতে চায় সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক দফার বন্যায় অনেক ফসলহানি হলেও আগামীর খাদ্য নিয়ে কোন সমস্যা হবে না।

বোরো ধানের বাম্পার উৎপাদন শেষ হওয়ার আগেই আমনের আরও দেড় কোটি টন চাল যুক্ত হচ্ছে। গত বছর বোরোসহ উৎপাদন হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ চার কোটি টন খাদ্য। ফলে খাদ্য নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা নেই। আমনের নিশ্চিত ফসল ঘরে আনতে কাজ করছে সরকার, আর মাঠে সোনার ফসলের যত্ন নিচ্ছেন কৃষকরা। এরপর থেকেই পরবর্তী ফসল হিসেবে আউশ আমনকে বিশেষ করে আমনকে গুরুত্ব দেয় সরকার। সরকারের গুরুত্বের অংশ হিসেবে নানা ধরনের প্রণোদনাও দেয়া হয়। গাঢ় সবুজ হওয়া ধানের চারায় কোথাও ফুল এসেছে। কোথাও পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক। কেউ আগাছা পরিষ্কার করছেন কেউ বা জমিতে সার দিচ্ছেন। সামনের দিনগুলোতে আমনের ফলনও ভাল হবে এবং বোরোর মতো ভাল দাম পাবে সে আশায় স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরাও।

সরকার এর পক্ষ থেকে আউশে ৬ কোটি টাকার প্রণোদনা, ভালমানের বীজ, সার ইত্যাদি দেয়া হয়েছে। আবার আমনেও বীজের দাম কমানো হয়েছে দশ টাকা। এবার আউশের আবাদ বেড়েছে, ফলন খুবই চমৎকার। এই বছর আমনে বাড়ানো হয়েছে জমি ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা। চলতি ২০২০-২১ মৌসুমে বোনা ও রোপা আমন মিলিয়ে মোট ৫৯ লাখ ১ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হলেও চাষ হয়েছে আরও বেশি জমিতে।

সরকার নির্ধারিত জমির চেয়েও বেশি জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। অর্জিত হয়েছে ৫৯ লাখ ৩ হাজার ৪০১ হেক্টর অর্থাৎ ১৫৮৬ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। এ বছর চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৪ হাজার ৩৯৮মেট্রিক টন। এবার আমনের ফলন ধরা হয়েছে বোনা আমনে হেক্টর প্রতি ১.২ টন আর রোপা আমনে হেক্টর প্রতি ২.৭৩ টন। এছড়াও গড় ফলন ধরা হয়েছে ২.৬৪ টন।

ফলে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৪ হাজার ৩৯৮মেট্রিক টন আসবে। গত অর্থবছরের ২০১৯-২০২০ মৌসুমে বোনা ও রোপা আমান মিলিয়ে মোট ৫৮ লাখ ৭৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল আর চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ কোটি ৫৩ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও চাল বেশি উৎপাদন হয়েছিল। এক কোটি ৫৫ লাখ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছিল।

নভেম্বরের মধ্যে আউশ ও আমনের উৎপাদন যুক্ত হলে বাংলাদেশে আপাতত খাদ্য ঘাটতির কোন আশঙ্কা থাকবে না। চালের উৎপাদন গতবছরের তুলনায় প্রায় ৩.৫৪ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বোরো ও আমন মৌসুমের উদ্বৃত্ত উৎপাদন থেকে হিসাব করে, জুন পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে ২০.৩১ মিলিয়ন টন চাল ছিল। আগামী নভেম্বর পর্যন্ত চাহিদা মেটানোর পরেও ৫.৫৫ মিলিয়ন টন চাল দেশের অভ্যন্তরে উদ্বৃত্ত থাকবে। ২০১০ সালে যেখানে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল চতুর্থ।

বর্তমানে সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, গবেষণা ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। যা বাংলাদেশের জন্য বিশাল একটি অর্জন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় মাইলফলক। এবছর রেকর্ডসংখ্যক জমিতে আউশ আবাদ করা হয়। ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে আউশ ধান কাটা। এবার আউশ ধানে বাম্পার ফলন ঘরে তুলেছে কৃষক।

এবার ৩৭ লাখের বেশি টন চাল পাওয়া গেছে আউশ থেকে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। ফলে বন্যায় কিছুটা ক্ষতি থাকলেও বাম্পার ফলনে ক্ষতি পুষিয়ে আরও বেশি চাল এসেছে। বন্যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ক্ষতি পুষিয়ে যেন আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য বিভিন্ন প্রণোদনার কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়।

করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতিতে স্থবিরতা এসেছে। এ অবস্থায় করোনার অভিঘাত মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সব ধরনের ফল-ফসলের আবাদ বাড়াতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নতজাত তৈরিসহ নানা ধরনের দিক নির্দেশনায় এই সাফল্য আসছে।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com