বয়স ৯৫; সাইকেল চালিয়ে ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছেন জাহিরন

প্রকাশের সময় : 2021-01-20 15:17:05 | প্রকাশক : Administration
বয়স ৯৫; সাইকেল চালিয়ে ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছেন জাহিরন

সিমেক ডেস্কঃ দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে বাইসাইকেল চালিয়ে গ্রামের অসহায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছেন এক নারী। বয়স তার ৯৫। কিন্তু উদ্যম, সাহস, কর্ম দক্ষতা একটুও কমেনি। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ভারত সীমান্ত ঘেঁষা তালুক দুলালী গ্রামের জহিরন বেওয়া। এ বয়সে বাড়ীর বারান্দায় কিংবা কোন গাছের ছায়ায় বসে নাতি-নাতনিদের রূপকথার গল্প শোনানো অথবা তাদের উচ্ছল খেলাধুলা দেখে সময় কাটানোর কথা। কিন্তু তা না করেই প্রতিদিন ছুটে বেড়াচ্ছেন গ্রামের পর গ্রাম মাইলের পর মাইল। কারো অসুস্থতার সংবাদ পেলেই নাওয়া-খাওয়া ভুলে বাইসাইকেলে চড়ে ছুটে যান সেই রোগীর বাড়িতে চিকিৎসা সেবা দিতে।

তালুক দুলালী গ্রামের মৃত সায়েদ আলীর স্ত্রী জহিরন বেওয়া। স্বামী মারা যান ১৯৬৮ সালে। এরপর শারীরিক ও মানুষিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। তিন -ছেলে আর দুই মেয়েকে নিয়ে তার সংসার। আট বছর আগে বড় ছেলে দানেশ আলী ৬৮ বছর বয়সে মারা যান। ছোট ছেলে তোরাব আলীর বয়স ৫৯। সংসারে এই সংগ্রামী নারী এখনো সচল, সজাগ আর কর্মউদ্যমী হয়ে বেঁচে আছেন।

সমাজের প্রচলিত রীতিনীতি ভেঙে ১৯৭৩ সালে জহিরন পরিবার পরিকল্পনার অধীনে স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পরে চুক্তিভিত্তিক মাসিক মজুরিতে কাজে যোগ দেন। নিজ গ্রামসহ আশ-পাশের গ্রামগুলোতে সাইকেল চালিয়ে গ্রামবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতেন। ২শ থেকে ৩শ অবশেষে ৫শ টাকা মাসিক মজুরি পেয়ে ১০ বছর চাকরি করে অবসরে যান জহিরন।

চাকরি বাদ দিলেও অর্জিত অভিজ্ঞতা বাদ দেননি তিনি। তাই বাড়িতে বসে না থেকে আবারো গ্রামবাসীর স্বাস্থ্যসেবায় মনোযোগী হয়ে উঠেন জহিরন। এখনো কাজ করছেন হাসি মুখে। গ্রামের লোকজনের কাছে তার বেশ সুনাম রয়েছে। কেউবা জহিরন দাদি, কেউবা নানি আবার কেউবা জহিরন আপা বলে সম্বোধন করেন তাকে।

ভেলাবাড়ী গ্রামের স্কুলশিক্ষিকা রাবেয়া সুলতানা জানালেন, গেলো ৪৪ বছর ধরে জহিরন বেওয়াকে দেখছি বাই সাইকেল চালিয়ে গ্রামের পর গ্রাম মাইলের পর মাইল ঘুরে ঘুরে গ্রামের অসহায় মানুষগুলোকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছেন।

জহিরন বলেন, আমি শুধু সাধারণ রোগ যেমন-জ্বর, মাথা ব্যথা, বমি শারীরিক দুর্বলতাসহ রোগের চিকিৎসা দিয়ে থাকি। এর জন্য আমাকে কোন টাকা দিতে হয় না। তবে আমি বাজারমূল্যে তাদের কাছে ঔষধ বিক্রি করি। এতে প্রতিদিন গড়ে দেড়শ’ টাকা আয় হয়।

তিনি বলেন, আদিতমারী উপজেলার ৩০টি গ্রামে দু’ হাজারের বেশি পরিবারের সঙ্গে রয়েছে আমার নিবিড় যোগাযোগ। আমি প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে কমপক্ষে ৭টি গ্রামে ৭০টি বাড়িতে যাই। তাদের খোঁজখবর নিই। তার দাবি, গেলো ৫০ বছরে তিনি কোন রোগে আক্রান্ত হননি। সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি নারীর প্রতি অবিচার রোধ, শিক্ষা আর পছন্দানুযায়ী পেশা নির্বাচনের সুযোগ নিয়েও কাজ করছেন তিনি। - সূত্রঃ অনলাইন

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com