নতুন পরিচয়; নতুন সম্ভাবনা
প্রকাশের সময় : 2021-03-18 11:45:21 | প্রকাশক :
কাওসার রহমান: সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। বাংলাদেশী বাঙালি হিসেবে এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে? আরও একবার আমরা আনন্দে আত্মহারা হয়েছিলাম। সেটি ছিল ২০০০ সালের ২৬ জুন। ওই দিন আমরা দশম টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে আইসিসির সদস্য পদ লাভ করেছিলাম। অবশ্য ১৯৯৭ সালে ১৫ জুন বিশ্ব ক্রিকেট দরবারে ‘ওয়ান ডে স্ট্যাটাস’ পেয়েছিলাম আইসিসি’র (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) কাছ থেকে।
বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে তার চেয়েও মর্যাদাকর সম্মান আমরা পেলাম ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে। গরিব দেশগুলোর (এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশ) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর তালিকায় স্থান পাওয়ার গৌরব করে। ক্রিকেটের ওই অর্জনগুলো আমাদের সম্মানিত করেছে। কিন্তু জাতিসংঘের দেয়া এই মর্যাদা আমাদের স্থায়ীভাবে সম্মানিত করবে বিশ্ব সভায়।
আমরা অনেকটাই নিশ্চিত ছিলাম জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) চূড়ান্ত সুপারিশে বাংলাদেশ এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে চলে আসছে। কারণ, এই উন্নয়নের জন্য যে সকল শর্ত পূরণ করা প্রয়োজন তা বাংলাদেশ গত টানা তিন বছর ধরে পূরণ করে আসছে। এই উত্তরণের জন্য একটি দেশের মাথাপিছু আয় কমপক্ষে ১ হাজার ২৩০ মার্কিন ডলার হতে হয়, সেখানে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৮২৭ ডলার।
মানবসম্পদ সূচকের মানদণ্ড যেখানে ধরা হয় ৬৬ পয়েন্ট, সেখানে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ৭৫.৩। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে কোন দেশের পয়েন্ট ৩৬-এর বেশি হলে স্বল্পোন্নত এবং ৩২ পয়েন্টে নামলে উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জন করবে বলে ধরা হয়। সেখানে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ২৫ দশমিক ২।
১৯৭৫ সালে জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পেয়েছিল স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা, ঠিক ৪৩ বছর পর তারই সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। এই খবরটি ছিল বাংলাদেশের জনগণের জন্য আত্মমর্যাদার বিশ্ব স্বীকৃতি। জাতিসংঘের দেয়া এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের আপামর জনগণের মনোবলকে নিঃসন্দেহে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে।
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন বাংলাদেশের আত্মমর্যাদা। এখন কেউ আর বাংলাদেশকে অবজ্ঞার চোখে দেখতে পারবে না। আন্তর্জাতিক আর্থিক খাতে আস্থা ফিরে পাবে বাংলাদেশ। ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিকভাবে মানদণ্ড দেবে বাংলাদেশকে। ফলে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে। বিদেশী বড় বড় কোম্পানি বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে। যার ফলে সঙ্গত কারণেই ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, বেকারত্ব কমে যাবে। রাজস্ব আয় অনেক গুণ বেড়ে যাবে। (সংকলিত) লেখক : সাংবাদিক