প্রত্যাশার চেয়ে অগ্রগতি বিদ্যুত খাতে
প্রকাশের সময় : 2018-08-29 21:02:21 | প্রকাশক : Admin
সিমেক ডেস্কঃ সব সূচকেই প্রত্যাশার চেয়ে অগ্রগতি এসেছে বিদ্যুতখাতে। বর্তমান সরকারের সাড়ে নয় বছরের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফলে দেশের ৯০ ভাগ মানুষের ঘরে এখন জ¦লছে বিদ্যুতের বাতি। ঘুরছে পাখা, চলছে টেলিভিশন ফ্রিজ আরও কত কী। সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ২০২১ এর মধ্যে দেশের সব ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু বিদ্যুত বিভাগ প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়ার কাজটি সেরে ফেলতে চায়।
বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছেন, সারাদেশের সব ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে তার মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষের জীবন মান উন্নয়নে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা যথাযথভাবে শেষ করা সম্ভব হবে চলতি বছরের মধ্যে। এ জন্য বিদ্যুত বিভাগের সকল কর্মী নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। উৎপাদন-সঞ্চালন এবং বিতরণে যে আমূল পরিবর্তন এসেছে তাকে ধরে রাখতে চায় সরকার। বিদ্যুতখাতের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পগুলোও বাস্তবায়ন করতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে মন্ত্রণালয়।
বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। আর এখন উৎপাদন ক্ষমতা ১৮ হাজার ৯৫৩ (ক্যাপটিভসহ) মেগাওয়াট অতিক্রম করেছে। তবে গ্রিড সংযুক্ত বিদ্যুত কেন্দ্রর উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার ৯৫৩ মেগাওয়াট।
সংকটের প্রেক্ষিতে সরকার বিদ্যুত উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার সমন্বিত উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন কৌশল বাস্তবায়নে মনোযোগী হয়। সরকার কর্তৃক প্রণীত বিদ্যুত উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৪ হাজার মেগাওয়াট। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে বিদ্যুত খাতের উন্নয়ন বাজেটের আকার ২০০৯ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে নয় গুণের বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ বাজেট বৃদ্ধির সুফল এখন জনগণের কাছে সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রের সংখ্যা ২৭টি থেকে ১২১টিতে উন্নীত হয়েছে। সর্বোচ্চ বিদ্যুত উৎপাদনের রেকর্ড ২০০৯ সালের ৩ হাজার ২৬৮ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে ১১ হাজার ৩০৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। বিগত নয় বছরে নতুন করে এক লাখ ৯৫ হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যুত গ্রাহক সংখ্যা দুই গুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়ে দুই কোটি ৯৯ লাখ ছাড়িয়েছে। সার্বিকভাবে বিদ্যুত সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর পরিমাণ ৪৭ শতাংশ হতে ৯০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
বলা হয় বর্তমান সরকার বিদ্যুত খাতে শুধু সংখ্যাগত উন্নয়নেই জোর না দিয়ে এ খাতের গুণগত মান উন্নয়নেও সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়েছে। এতে বিদ্যুত খাতে সিস্টেম লস ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এসেছে। বিগত নয় বছরে বিদ্যুত খাতের বাজেট বাস্তবায়ন সক্ষমতাও দৃশ্যমানভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯ সালের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে বরাদ্দ দুই হাজার ৬৭৭ কোটি টাকার তুলনায় বর্তমান অর্থবছরে বরাদ্দ ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকায় উন্নীত হলেও অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই আরএডিপির শতভাগ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হয়েছে। গত জুনের হিসেবে দেখা গেছে জাতীয় অগ্রগতির তুলনায় বিদ্যুত বিভাগের অগ্রগতি প্রায় ৭ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ বিদ্যুত খাতে বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে অন্যান্য খাতের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তারা মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় বিদ্যুত খাত সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। চলমান কার্যক্রমসমূহের সফল ও সময়ানুগ বাস্তবায়ন নিশ্চিতের মাধ্যমে সাফল্যের এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা।