রাজনীতির রঙ বদলাচ্ছে

প্রকাশের সময় : 2018-11-07 17:11:06 | প্রকাশক : Admin

সিমেক ডেস্কঃ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতির রঙ বদলাচ্ছে। প্রতিদিনই কিছু না কিছু নতুন উপাদান যোগ হচ্ছে। চলছে নতুন মেরুকরণ। প্রকাশ্যে যেমন নানা তৎপরতা চলছে, তেমনি গোপন তৎপরতাও। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি কূটনীতিকদের ভূমিকা দৃশ্যমান। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের নাক গলানোর সুযোগ নেই। এটা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।

কিন্তু আমাদের রাজনীতিকরাই বিদেশি কূটনীতিকদের লাই দিয়ে মাথায় চড়িয়েছেন। কিছু হলেই তারা ওদের কাছে ছুঁটে যান। ওরাও মজা পেয়ে গেছেন। এখন অনেক সময় তারা ‘গার্জেন’ সুলভ আচরণ করেন। তবে বিদেশিদের বুঝতে হবে, বাংলাদেশ এখন আর আগের বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশ এখন আর ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘোরে না। বাংলাদেশ নিজের টাকায় পদ্মা সেতু তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে।

দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির সমস্যা হলো তারা এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে দেখতে পায় না; অথবা দেখলেও এই পরিবর্তিত বাস্তবতা মেনে নিতে পারে না। তারা ক্ষমতার বাইরে আছে এক যুগ ধরে। এই এক যুগের পরিবর্তনটা স্বীকার করতে চায় না বলেই তারা রাজনীতিতে ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, ভুল পথে চালিত হচ্ছে। বিএনপি যে এখনও নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত না দিয়ে নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে, তাতে তারা লাভবান না হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিএনপি নিজের সংকট কাটানোর জন্য, নড়বড়ে ঘরে শক্ত খুঁটি দেওয়ার জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে শামিল হয়েছে বিরাট আশা নিয়ে। এখন ঐক্যফ্রন্টের এক খুঁটি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলছেন, তারেক রহমানকে বাদ দেওয়ার জন্যই নাকি কামাল হোসেনকে আনা হয়েছে! বিএনপির নেতাকর্মীরা কি খুব উদ্বুদ্ধ হবেন মইনুল হোসেনের এই কথায়?

‘ডঃ কামাল কাওয়ার্ড, ব্যারিস্টার মইনুল বরিশ্যাইল্যা, বেশি কথা কয়’! এই কথাটা জাফরুল্লাহ চৌধুরীর। জাফরুল্লাহ ঝোঁপ বুঝে কোপ মারায় ওস্তাদ। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের কুশীলবদের অন্যতম প্রধান কখন যে কী বলতে চান, সেটা দেবতারাও জানে না! হাওয়া বুঝে পাল খাটানো এই মাঝির একটাই লক্ষ্য, সুযোগ বুঝে হালুয়া-রুটির স্বাদ নেয়া। এবং ভাব বুঝে চুপ থাকা। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন জেলে যাবার পর থেকেই জাফরুল্লাহ একেবারেই চুপ।

এসব দেখে বিএনপির মধ্যে যে এখন কত রকম ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলছে, তা বলা বাইরের কারো পক্ষে কঠিন। তবে দলটি যে এক ধারায় চলছে না, সেটা ঠিক। বিএনপিতে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে-বিপক্ষে মত আছে। এক পক্ষ এটা নিয়ে আশাবাদী হলেও আরেক পক্ষ হতাশ। বিশেষ করে ফ্রন্টের দুই মাস্টারমাইন্ড ডঃ জাফরুল্লাহ ও ব্যারিস্টার মইনুলকে নিয়ে এখন চরম বিপাকে আছে বিএনপি। কামাল হোসেনের কথাবার্তাও বিএনপির নেতাকর্মীদের খুব উৎসাহিত করতে পারছে বলে মনে হয় না। অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ঐক্যফ্রন্ট কি বিএনপির অ্যাসেট, না লায়াবিলিটি?

ডঃ কামাল হোসেন দেশের প্রবীণ বুদ্ধিজীবীদের একজন, প্রথিতযশা আইনবিদ, ভাল রাজনীতিবিদ বলতে দ্বিধা নেই। কিন্তু ৪০ বছরের ইতিহাসে তিনি কখনও ক্ষমতায় যেতে পারেননি। তার ইচ্ছা থাকলেও সে সুযোগ অর্জন করতে পারেননি। দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার ভাল সম্পর্ক নেই; যা একজন নেতার মধ্যে থাকাটা স্বাভাবিক। অতীত সময়ে তার নির্বাচনেও সেটা প্রমাণিত। যোগ্যতা-দক্ষতার মাপকাঠিতে বিচারের কোন সুযোগ নেই। ডঃ কামাল হোসেনের চেয়ে বিএনপির ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জনপ্রিয়তা বেশি।

বিএনপি আশা করছে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায়ে ডঃ কামালকে নিয়ে জনমত ও আন্দোলন গড়ে তুলবে ঐক্যফ্রন্ট। কবে এই আন্দোলন হবে? কবে দাবি আদায় হবে? এমন অবস্থায় আন্দোলন করে দাবি আদায় করে নির্বাচনে যাওয়ার চিন্তা করলে সেটা হবে অনেক ‘লেট’।

সরকারের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি-কর্তৃত্বপরায়ণতার অভিযোগ এনে বিএনপি খুব সুবিধা করতে পারবে না। কারণ এ সব অভিযোগ বিএনপির বিরুদ্ধেও আছে। বিএনপির আমলে দুর্নীতি হয়েছে, মানুষ বিদ্যুত পায়নি। এ আমলে দুর্নীতি হলেও মানুষের ঘর আলোকিত হচ্ছে। অবকাঠামোগত উন্নতি মানুষ নিজের চোখেই দেখছে। মানুষ না খেয়ে নেই, কষ্টে নেই। কষ্টে আছে বিএনপি। তারা ভুল পথে পরিচালিত হয়ে আন্দোলনের নামে সহিংসতা-সন্ত্রাস করতে গিয়ে মামলামোকদ্দমায় জড়িয়েছে। এখন বিএনপির কষ্ট লাঘবের জন্য মানুষ কি নিজেরা কষ্টে থাকার দিনে ফিরে যেতে চাইবে?

বিএনপি তাদের সুবিধামতো অবস্থায় নির্বাচন করতে চায়। তাহলে আওয়ামী লীগ কেন তাদের সুবিধামতো অবস্থায় নির্বাচন করতে চাইবে না? সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, এই প্রচারণা বিএনপির জন্য আত্মঘাতী হয়েছে বা হবে। এখন শেখ হাসিনা বা তার সরকার পরাজিত হওয়ার জন্য ‘সুষ্ঠু’ নির্বাচন দেবেন, এমন আদর্শ রাজনৈতিক পরিস্থিতির কবর তো বিএনপিই দিয়েছে। বিএনপি একুশে আগস্ট করতে পারলে আওয়ামী লীগ তাদের ক্ষমতায় ফিরে আসার মতো সুবিধাজনক অবস্থায় একটি নির্বাচন কেন করতে পারবে না?

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com