ব্যক্তিগত উদ্যোগে পথচারীদের জন্য বিনামূল্যে পানি
প্রকাশের সময় : 2019-06-13 18:00:47 | প্রকাশক : Administration
আসিফ হাসান কাজলঃ রাজধানীর অভিজাত এলাকা ধানমন্ডির ৪ নম্বর রোডের ২২/১ নম্বর বহুতল অট্টালিকার সামনে সকাল থেকেই দেখতে পাওয়া যায় একটি নীল রঙ্গের পানির ট্যাংকি। পানি ভর্তি ট্যাংকির সামনে গ্লাস হাতে দাঁড়িয়ে আছেন দুইজন পথচারী। রিকশাচালক থেকে শুরু করে তৃষ্ণার্ত পথচারী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে ভীড় জমায় পানি পান করতে।
কারণ হিসেবে গফুর নামের এক রিকশাচালক বলেন, “এখানে পানি খাইতে টাকা লাগেনা, যিনি আমাদের জন্য এই ব্যবস্থা করেছেন তার জন্য আমি মন ভরে দোয়া করি”। এভাবেই গত ৩ বছর যাবৎ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কে পথচারীদের পানির তৃষ্ণা নিবারণ করে আসছেন সিলেটের মেয়ে নাজমিন সুলতানা।
২২/১ নম্বর বাসায় ৩ তলার একটি ফ্লাটে বসবাসকারী নাজমিন সুলতানা এই উদ্যোগের ব্যাপারে প্রতিবেদককে জানান, আমার নানা বলতেন ক্ষুধার্তকে খাবার দাও ও তৃষ্ণার্তকে পানি পান করাও। কথাটি আমার কাছে মনে হয়েছিল একটি ম্যাসেজ বা বার্তা। নানাজান আজ বেঁচে নেই কিন্তু তাঁর কথাটি আমার আজও মনে পড়ে। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই পথচারীদের জন্য তার এই উদ্যোগ।
আব্দুল সোবহান (৩৫) নামের এক রিকশাচালক জানান, নিউমার্কেট এলাকা থেকে ভাত খেতে তিনি প্রতিদিন এখানে আসেন। তিনি বলেন, এই রাস্তায় গাছপালা বেশী ও বিনামূল্যে পানি পান করার ব্যাবস্থা থাকায় এখানে এসেই দূপুরের খাবার খেতে তার ভাল লাগে। বাড়ির নিরাপত্তা প্রহরী আব্দুস সালাম বলেন, প্রতিদিন ৫০-১০০ জন মানুষ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে আসেন পানি পানের জন্য। গরম বেশি পড়াতে সারাদিনে ৪ বার ট্যাংকিতে পানি ভরেছি।
এমন উদ্যোগে স্থানীয়রা জানান, নাজমিন আপার দেখাদেখি পাশের বাড়ির সামনেও গত এক বছর থেকে আরও একজন ব্যক্তি পথচারীদের জন্য পানি পানের ব্যবস্থা করেছেন। ঢাকার যেসব নাগরিকের কাছে এই শহর শুধুই ইট-কাঠের তৈরি, এই নগরীর যেসব মানুষ এখনো ভাবে সবাই সবার পথে ছুটে চলেছে কিন্তু কেউ কারও নয়। এই ধরনের মানবিক গল্প তাদের জন্য একটি শিক্ষা।
সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম এমন ঘটনায় বলেন, এমন ঘটনা সত্যিই প্রশংসনীয়। সামাজিক দ্বায়বদ্ধতা থেকে ও মানবিক উন্নয়নে সকল সামর্থ্যবানদের এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণে এগিয়ে আসার তিনি আমন্ত্রণ জানান।