কানাডায় যখন প্রথম আসি

প্রকাশের সময় : 2019-07-25 18:28:13 | প্রকাশক : Administration
কানাডায় যখন প্রথম আসি

সিমেক ডেস্কঃ  মেগাসিটি টরেন্টোকে বলা হয় দমকা বাতাসের শহর আর এর কারণ লেক অন্টারিও। আয়তনের দিক থেকে লেক অন্টারিও হচ্ছে সব চেয়ে ছোট।  টরেন্টো শহরের নান্দনিক মেগাসিটি ভিউ, টরেন্টো ওয়াটার ফ্রন্ট, লেকের মাঝে টরেন্টোর বিখ্যাত সেন্টার আইল্যান্ড বিনোদন পার্ক ইত্যাদি আকর্ষণীয় স্পট সৃষ্টিতে লেক অন্টারিওর ভূমিকা অপরিসীম। আয়তনে ছোট হলেও পানি ধারণ ক্ষমতায় লেক অন্টারিও কিন্তু সবচেয়ে ছোট  অর্থাৎ পঞ্চম নয় বরং চতুর্থ। লেক অন্টারিওর আয়তন ১৮৯৬০ বর্গকিলোমিটার। লেকটি ৩১১কিমি লম্বা আর গভীরতা ২৪৪ মিটার এবং পানির পরিমাণ ৩৯৩ কিউবিক মাইলস। কানাডার জনবহুল প্রদেশ অন্টারিও আর লেক অন্টারিওর নামের অর্থ চিকচিকে পানির হ্রদ অর্থাৎ  Lake of shining Waters.

ধারণা করা হয় প্রায় ৭ হাজার বছর আগে ফার্স্টনেশন বা ইন্ডিয়ানরা লেক অন্টারিওর পাশে বসতি স্থাপন করেন। কানাডায় বেঁড়ে উঠা সভ্যতা, কৃষ্টি আর সংস্কৃতির হৃষ্টপুষ্টতায় লেক অন্টারিও ভূমিকা অনন্য সাধারণ। সেন্ট লরেন্স নদী কানাডায় সভ্যতা উন্মেষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এক্সপ্লোরারগণ অর্থাৎ বাইকিং বা ফরাসী বা ব্রিটিশসহ অনেকেই সেন্ট লরেন্স নদী পথকেই নতুন দেশ, প্রদেশ কিংবা বানিজ্যপথ আবিস্কারে বাহন হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

লেক অন্টারিওর সাথে জড়িয়ে আছে আরেকটি নদী, নায়াগ্রা নদী। এটি লেক অন্টারিওকে সংযুক্ত করেছে লেক ইরির সাথে। পানির প্রবাহে নায়াগ্রা নদীকে ধরা হয় ইনলেট/প্রবেশ পথ অর্থাৎ লেক ইরি থেকে নায়াগ্রা নদীর মাধ্যমে পানি পৌঁছে লেক অন্টারিওতে। ৫৮ কিলোমিটার লম্বা নায়াগ্রা নদীর উৎপত্তি লেক ইরি থেকে আর মিশে গেছে লেক অন্টারিওতে। সেন্ট লরেন্স নদীর উৎপত্তি লেক অন্টারিও থেকে আর এটি হচ্ছে আউটলেট বা নির্গমন পথ; এই পথে পানি আটলান্টিক মহাসাগরে পতিত হয়।

লেক ইরি যুক্তরাষ্ট্র আর কানাডার মাঝে; অবস্থানে মনে হয় আধাআধি ভাগাভাগি। কানাডাতে অন্টারিও প্রদেশের হ্যামিলটন, নায়াগ্রা শহর  লেক ইরির কাছাকাছি শহর। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের বাফেলো, ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ড, মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট এর মত বড় শহরগুলো লেক ইরির তীরে। ইরির  আয়তন ২৫৭০০ বর্গকিলোমিটার। লেকটি ৩৮৮কিমি লম্বা আর ৬৪ মিটার গভীর এবং  পানির পরিমাণ ১১৭ কিউবিক মাইলস।

নিয়মিত ভ্রমণের কারণে  হিলটন গ্র“পের হোটেলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা হয়েছে অসংখ্যবার। নিয়মিত গ্রাহক হিসেবে পয়েন্ট জমে কয়েকরাত ফ্রি থাকার সুযোগে ২০১৪ সালের দিকে দ্বিতীয়বার। নায়াগ্রা জলপ্রপাত দর্শনের সময় জলপ্রপাতের খুব কাছে অবস্থিত হোটেল হিলটনের টপ ফ্লোরে এক্সিকিউটিভ সুইটসে স্বপরিবার দুদিন থাকার ব্যবস্থা করলাম যাতে  হোটেলের উঁচু টাওয়ার  থেকে যুক্তরাষ্ট্র আর কানাডা উভয় প্রান্তের নায়গ্রা জলপ্রপাত উপভোগ করা যায়।

জলপ্রপাত উপভোগ শেষে মন্ট্রিয়ল ফেরার আগে ভাবলাম বাফেলো হয়ে লেক ইরির রূপ দেখে আসি। সকালেই হোটেল থেকে চেক আউট  করে নায়াগ্রা জলপ্রপাত সংলগ্ন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন পার হয়ে দুপুরে লাঞ্চ করলাম বাফেলো শহরের এক রেস্তোরায়। লাঞ্চ শেষে  লেক ইরির সৌন্দর্য দেখতে লেকের তীর ঘেঁষে ড্রাইভ করলাম অনেকক্ষণ। গ্রীষ্মের ঝলমলে দিনে লেকের কোল ঘেঁষে কোন পার্ক থেকে তীরে আছড়ে পড়া খানিকটা উত্তাল কিন্তু চিকচিকে ঢেউের সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে হলে প্রসারিত দৃষ্টিতে নীরবে প্রকৃতির কাছে সমর্পিত হতে হয়। 

এরকমই একটা অনুভূতিতে লেক ইরি দর্শন শেষে সন্ধ্যার আগেই রওয়ানা দিয়ে ৮-৯ ঘণ্টার ড্রাইভে শেষরাতে মন্ট্রিয়ল ফেরা। আরো আগে আকাশ থেকেও দেখা মিলেছে লেক ইরির। টোকিও থেকে টরেন্টো আসাযাওয়া করতে হয়েছে অসংখ্যবার। কখনো কখনো ওহাইওর ক্লিভল্যান্ড বিমানবন্দর থেকে টরেন্টোর পিয়ারসন বিমানবন্দরে  নামতে হয়েছে। এই রুটটি মূলত লেক ইরির উপর দিয়ে। নীচুতে উড়ার প্রপেলার বিমান থেকে লেক ইরির শান্ত রূপটিই দেখা যায়, উত্তাল রূপটি নয়।

অন্টারিওর ছোট একটি শহর তারা, টরেন্টো থেকে ২০০ কিমি উত্তর পশ্চিমে আর লেক হিউরন থেকে মাত্র ১৫ কিমি পূর্বে অবস্থিত। টরেন্টো থেকে ঘণ্টা দুয়েকের ড্রাইভের শেষের দিকে জন-মানব বিহীন নির্জন প্রান্তর ধরে ছুটে চলে পৌছতে হয় তারায়। লেক হিউরন দর্শনে সবচেয়ে সুবিধে অন্টারিওর অন্যতম শহর লন্ডন থেকে। মন্ট্রিয়ল থেকে বা টরেন্টো থেকে এয়ার কানাডার ফ্লাইটে টোকিও যাবার পথে অনেক সময় লেক হিউরনের উপর দিয়ে উড়তে হয়েছে। আকাশ থেকে দেখা হিউরন আর পাতাল থেকে দেখা হিউরনের মাঝে পার্থক্য আছে বৈকি।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com