প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে সুখবর
প্রকাশের সময় : 2019-08-28 16:54:43 | প্রকাশক : Administration
সিমেক ডেস্কঃ ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৬০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। রেমিটেন্সের এই অংক মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ২১ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেশি অর্থ দেশে পাঠানোয় অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সূচক বেড়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। এছাড়া বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার খবরে রেমিটেন্সে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে জানিয়েছেণ তারা।
রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীরা দেশে বেশি অর্থ পাঠানোয় মে মাসে ১৭৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিটেন্সে আসে; যা ছিল মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তার আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, ১৫৯ কোটি ৭২ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সাড়ে ৯ শতাংশ রেমিটেন্স বেশি পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরেও ভালো প্রবৃদ্ধি নিয়ে শুরু হয়েছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এছাড়া প্রণোদনা দেওয়ার কারণেও রেমিটেন্স বাড়ছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম।
গত বছরের জুলাই মাসে ১৩১ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, রেমিটেন্সে প্রণোদনা দিয়ে একটি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরফলে প্রবাসীরা দেশে বেশি অর্থ পাঠাবেন। অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখবেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, প্রস্তুতির অভাবে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের উপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া এখনও শুরু করা যায়নি। যখনই শুরু করা হোক না কেন ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথমদিন অর্থাৎ ১ জুলাই থেকেই ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবেন প্রবাসীরা। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এটা আমরা বাজেটে পাস করেছি। কিন্তু সিস্টেম এখনো ডেভেলপ করতে
পারিনি। প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সিস্টেম আপডেট করতে আরও দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে।
“সামনে ঈদ, অনেকেই ধারণা করছেন, এখন দেশে কেউ রেমিটেন্স পাঠালে তারা প্রণোদনা পাবে না। এটা কিন্তু ঠিক না। যেহেতু বাজেটে পাস হয়েছে সেহেতু এখন রেমিটেন্স পাঠালেও দুই শতাংশ প্রণোদনা, ছয় মাস পরে হলেও পাবে। এখন পাঠালেও পাবে, পরে পাঠালেও পাবে।” সিস্টেম ডেভেলপ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক দ্রুত কাজ করছে বলে জানান মুস্তফা কামাল।
গত বছরের জুলাই মাসে ১৩১ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংক সবশেষ রেমিটেন্সের যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম জুলাইয়ে ১৫৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হল বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্স। বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। জিডিপিতে তাদের পাঠানো অর্থের অবদান ১২ শতাংশের মত। স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই রেমিটেন্স বাড়ছে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
রেমিটেন্স বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়নও (রিজার্ভ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মে-জুন মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে আসে। রেমিটেন্স বাড়ায় তা ফের ৩২ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করেছে। - সূত্রঃ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম