নিজেকে দিন একটুখানি সময়

প্রকাশের সময় : 2019-09-12 23:26:43 | প্রকাশক : Administration
নিজেকে দিন একটুখানি সময়

শাকিল আহমেদঃ আমরা সকলেই চাই ভাল থাকতে, সুস্থ থাকতে। সবাই মনে মনে চায় আরও বেটার ফিল করতে। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, বাড়ছে প্রযুক্তি, বাড়ছে ব্যস্ততা। প্রযুক্তি আমাদের কাজকে সহজ করে দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের ক্রমেই দূরে ঠেলে দিচ্ছে প্রকৃতির কাছ থেকে। যান্ত্রিক জীবনে আমাদের ব্যস্ততা এতই বাড়ছে যে মনে মনে চাইলেও আমরা আমাদের প্রায়োরিটি’গুলোকে এলোমেলো করে ফেলছি। আমরা যত ব্যস্ত হচ্ছি, ততই আমাদের স্বাস্থ্য, ফিটনেস রুটিন, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস, মানসিক সুস্থতার বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করে চলছি।

ফেসবুক বা ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে হয়ত বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সকলেই আছে, কিন্তু কয়জনের সঙ্গে আমরা দেখা করার সময় বের করতে পারছি? পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল, মেনিকিউর-পেডিকিউর হয়ত করছি। কিন্তু ঘাসে পা রেখে খালি পায়ে শেষ কবে হেঁটেছি মনে করতে পারছি না হয়ত। কবে শেষবার ফুলের ঘ্রাণ বা পাকা ধানের ঘ্রাণ নিয়েছি বলতেই পারব না হয়ত। দামী হোটেলে গিয়ে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে চেক-ইন দিয়েছি। কিন্তু নিজের হাতে রেঁধে দাওয়াত করে খাওয়ানোর মাঝে যে অনুভূতি তার কি কোন বিকল্প আছে?

ঘুম ভাঙার পর থেকে ফের ঘুমোতে যাবার আগে পর্যন্ত আমরা কেবল ছুটেই চলি। আর দিনশেষে আক্ষেপ করি কিছুই ভাল লাগে না আমার। এই একই অবস্থা প্রায় কমবেশি সবার। কিন্তু জীবনযাপনে সামান্য কিছু পরিবর্তন কিন্তু আমাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

ঘুম ভাঙার পরপরই আপনি কী করছেন, সেটাই কিন্তু আপনার সারাদিন ঠিক করে দেয়। ঘুম ভেঙে চোখ মেলেই যদি পাশ থেকে স্মার্ট ফোনটা তুলে নিয়ে ইমেইল, মেসেজ, নোটিফিকেশন চেক করতে শুরু করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু আপনি আবার সেই আগের দিনের স্ট্রেস সাইকেলে ফিরে যাবেন।

এগুলো না করে জেগে ওঠার পরের ৩০ মিনিট সময় ব্যয় করুন প্রার্থনা, মেডিটেশন অথবা ভাল কোন বইয়ের কয়েকটা পাতা পড়ে। নিজেকে এই সময়টুকু দেয়ার মাধ্যমে আপনার শরীর ও মন রিলাক্স হবে। সুযোগ থাকলে কিছুক্ষণ পরিষ্কার বাতাসে হেঁটে আসতে পারেন। যাদের সকালে জগিং বা ব্যায়ামের অভ্যাস আছে তারা তো সেটা করবেনই। যারা করেন না তারাও ১০ মিনিটের জন্য হালকা কোন ব্যায়াম করতে পারেন। সকালের এই কিছুক্ষণ সময় আপনাকে সারা দিনের স্ট্রেস মোকাবেলা করার জন্য ভেতর থেকে প্রস্তুত করবে।

ভাবছেন, ভিড় তো রাস্তায় হয়, সেটা আপনি কীভাবে কমাবেন? কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন জীবনও নানা চিন্তা-ভাবনা, অপ্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে ভরে যায় কিন্তু। সেটাও এক ধরনের ভিড়।

আমরা অনেকেই প্রচুর জিনিস কিনতে ভালবাসি, কিন্তু ব্যবহার করি খুব কমই। তাই নিজের চারপাশ থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলুন। যতটা সম্ভব নিজের চারপাশ গুছিয়ে রাখুন। নিজের ওয়ারড্রব থেকেই কিছু পুরনো কাপড় সরিয়ে ফেলুন না। জমিয়ে না রেখে দিয়ে দিন কোন দুস্থ মানুষকে। কতটা কম জিনিস নিয়ে ভালভাবে বেঁচে থাকা যায়, সেটা না হয় একবার যাচাই করে দেখুন।

মন থেকে অপ্রয়োজনীয় চিন্তা দূর করুন। প্রায়োরিটিগুলোকে একের পর এক সাজান। অনেক কাজ একসঙ্গে না করে একটি কাজই ভালভাবে শেষ করুন। প্রতিনিয়তই এখন আমরা পরিবেশ থেকে কেমিক্যাল শরীরে নিয়ে নিচ্ছি। দূষিত বায়ু, ফরমালিন যুক্ত খাবার ইত্যাদি আমাদের ঘিরে রেখেছে। তাই কেমিক্যালের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করুন। সেটা ঘর পরিষ্কারের জিনিসই হোক বা নিজের পার্সোনাল কেয়ার প্রোডাক্ট। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। ধীরে হলেও কার্যকর এবং পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীন ফল পাবেন।

খাদ্যাভাসের পরিবর্তন আপনাকে যেমন রোগ থেকে দূরে রাখবে তেমনি আপনাকে রাখবে ভেতর থেকে ফিট। ধূমপান, এ্যালকোহল, অতিরিক্ত চিনি, লবণ, ঘন ঘন চা-কফি, চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ফাস্টফুড খাওয়ার অভ্যাস কমিয়ে দিন। যেসব খাবার রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে সেগুলো খান। ছোট-খাট অসুখে চট করে গাদা গাদা ট্যাবলেট খাওয়ার অভ্যাস দূর করুন। খাবারের মেনুতে ভেষজ উপাদান রাখুন।

মাসের শেষে নিজেই নিজেকে ছোট্ট উপহার দিন। নিজের হারিয়ে যাওয়া শখ নতুন করে খুঁজে বের করুন। পছন্দের খাবার নিজের হাতে রেঁধে খাওয়ান আপন মানুষদের। বছরে একবার সম্ভব হলে বেরিয়ে আসুন শহরের কোলাহল থেকে দূরে কোথাও। দামী ট্যুর প্যাকেজ বা কোন দর্শনীয় স্থানেই যেতে হবে সে রকম কিছু নয়, নিজের গ্রামেই ঘুরে আসুন না একবার। প্রকৃতি আর আপনজনদের সান্যিদ্ধে দেখবেন নিজের মনটা আপনা আপনি খুশিতে ভরে উঠেছে।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com