আলোর পথের সাহসী দুই যাত্রী

প্রকাশের সময় : 2019-11-06 19:37:26 | প্রকাশক : Administration আলোর পথের সাহসী দুই যাত্রী

সিমেক ডেস্কঃ প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্যে দিয়েও কার্যকর স্থানীয় সরকার গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা এবং নারীশিক্ষা, সার্বজনীন শিক্ষা ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সহিংসতাপূর্ণ পরিবেশেও অসাধারণ অবদান রাখায় হাবিবা সারাবিকে এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।’ ম্যাগসাইসাই পুরস্কারের জন্য মনোনীত আফগান নারী প্রশাসক হাবিবা সারাবি সম্পর্কে, ‘বিরুদ্ধ স্রোতের সাহসী যাত্রী’ এ মন্তব্য করেছে ম্যাগসাইসাই ফাউন্ডেশন। আফগানিস্তানের প্রথম নারী গভর্নরের পাশাপাশি এবার সম্মানজনক এ পুরস্কার পেয়েছেন মিয়ানমারের আর একজন নারী সমাজ সংগঠক লেহপাই সেং। লেহপাই প্রসঙ্গে ম্যাগসাইসাই ফাউন্ডেশনের মন্তব্য করে যে, ‘জাতিগত বিভক্তি ও সহিংসতার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সমাজেও সংলাপের মাধ্যমে অহিংসতার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে উৎসাহব্যঞ্জক ও অসাধারণ নেতৃত্ব দিয়েছেন লেহপাই, যা মিয়ানমারকে শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে।’ এ দুই নারীর সঙ্গে ফিলিপাইনের চিকিৎসক আর্নেস্তো ডোমিঙ্গো এবং ইন্দোনেশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন ও নেপালের সংগঠন ‘শক্তিসমূহ’ গুলোকে এবারের ম্যাগসাইসাই পুরস্কারের জন্য মনোনীত  হয়েছে। হাবিবা সারাবি (৫৭) আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশের নারী গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০০৫ সালে। চরম সহিংসতাপূর্ণ দেশটির প্রত্যন্ত ওই প্রদেশ শাসনের দায়িত্ব পালন করছেন দক্ষতার সঙ্গে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্থানীয় সরকারকে কার্যকর করে তোলা ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। হাবিবা সারাবি গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই ওই প্রদেশে গণশিক্ষা ও নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগের চাইতে অনেক বেড়ে যাওয়া অবশ্যই হাবিবা সারাবির সাফল্যেরই সাক্ষ্য দেয়।  ১৯৫৭ সালের ৫ ডিসেম্বর আফগানিস্তানের হাজারা নামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে জন্ম হাবিবা সারাবির। ২০০৫ সালে দেশটির প্রথম নারী গভর্নরের দায়িত্ব নিয়ে সমাজে শিক্ষার প্রসারে, নারীদের অধিকার রক্ষার কাজে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন তিনি। এর আগে দেশটির মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন হাবিবা। কাবুলে উচ্চবিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করে মেডিসিন বিষয়ে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। স্নাতক হয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বৃত্তি পেয়ে ভারতে গিয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিন সন্তানের জননী হাবিবা সারাবির স্বামীর নাম মোহাম্মদ আরেফ। স্বাস্থ্য, কৃষি খাত ও শান্তি রক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য তাই মিলেছে পুরস্কার। ২০০৮ সালে বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের করা পরিবেশ বিষয়ক সেরাদের তালিকায় যুক্ত হয়েছে তাঁর নাম। এছাড়া ২০০৫ সালে শিশুদের নানা কার্যক্রমে অবদান রাখায় যুক্তরাষ্ট্রের জেসন পুরস্কার পান। এখনো আগের মতোই কাজ করে যেতে চান হাবিবা সারাবি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে এগিয়ে নিতে চান সামনের দিকে। অন্যদিকে ৬৪ বছর বয়সী লেহপাই সেং বছরের পর বছর ধরে বাস্তুচ্যুতদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য ও সহায়তা করে চলেছেন। জাতিগত সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুতদের জন্য বিভীন্ন ধরনের ত্রাণ, স্বাস্থ্যসেবা সহ বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করে অনেক গুলো সংগঠনকে একত্রিত করে, নেতৃত্ব দিয়ে সংগঠন গুলোকে নিয়ে  কাজ করে যাচ্ছেন। ম্যাগসাইসাই ফাউন্ডেশনের মন্তব্য, ‘একে শান্তিপূর্ণ, ভবিষ্যৎ মিয়ানমারের ভিত্তি বলে বিবেচনা করা যেতে পারে।’ গত শতকের পঞ্চাশের দশকে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট র‌্যামন ম্যাগসাইসাই নিহত হন। নিহত প্রেসিডেন্ট র‌্যামন ম্যাগসাইসাইয়ের নামে এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। সম্মানজনক এ পুরস্কারকে এশিয়রা এশিয়ার নোবেল হিসেবে আখ্যায়িত  করে বা সম্মানিত করে। - সূত্রঃ অনলাইন