মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়া উচিত

প্রকাশের সময় : 2020-01-16 17:07:14 | প্রকাশক : Administration মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়া উচিত

আরিফ মাহবুবঃ বাংলাদেশের ভৌগোলিক চিত্রটা বেশ বৈচিত্রপূর্ণ, তিন দিকে ভারত, সমুদ্রের কাছাকাছি অংশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সমুদ্র সীমানা নিয়ে বিরোধ মিটে গেলেও নতুন যে সমস্যা বাংলাদেশের উপর চেপে বসেছে তা হচ্ছে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমার সেনা বাহিনীর এক বর্বরোচিত নির্যাতন ও গণহত্যা সংগঠিত হওয়ার কারণে প্রায় দশ লাখের মতো শরণার্থীর আগমনে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল তথা টেকনাফ ও কক্সবাজার প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত অবস্থা এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে।

শরণার্থীদের আবাসনে বাংলাদেশের যে ব্যয়ভার তা বহন করতে দেশের অর্থনীতির উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে এ বিষয়ে বিশ্বের দরবারে অনেক দেশই বেশ হম্বিতম্বি করলেও কার্যত সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন পর্যন্ত কোনো ভূমিকা রাখেনি। তাই আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম আরও বেগবান করা প্রয়োজন। ইতিমধ্যে রোহিঙ্গারা এখনও রাষ্ট্রহীন অবস্থাতেই আছে বিধায় প্রশাসনের একশ্রেণির দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়ে সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছেন, জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের কিছু কর্মকর্তাদের ইতোমধ্যে ধরা হয়েছে, কিন্তু এই সমস্যা সমাধানে চাই সঠিক পররাষ্ট্র নীতি যার মাঝে পরিলক্ষিত হবে সমস্যার আশু সমাধান।

সবচাইতে ভালো একটি সংবাদ হচ্ছে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর অগণিত নৃশংসতার অভিযোগ তুলে আফ্রিকার একটি ছোট্ট দেশ গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিসি) মামলা দায়ের করেছে, আর্জেন্টিনায় রোহিঙ্গা ও ল্যাটিন আমেরিকান কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা রাখাইন রাজ্যে অপরাধ করার জন্য সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক নেতাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিছুদিন আগেও চীন ভারতের সমর্থন না পাবার কারণে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করেছিলো। তবে এবার আশা করা যায় এর একটা সুষ্ঠু সমাধান আলোর পথ দেখবে।

বাংলাদেশের উচিত হবে আন্তর্জাতিক আদালতে ‘কনভেনশন অন দি প্রিভেনশন অ্যান্ড পানিশমেন্ট অব দি ক্রাইম অব জেনোসাইডে’র আওতায় গাম্বিয়ার পাশাপাশি মিয়ানমারে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হবার কারণে আন্তর্জাতিক আদালতে আরও একটি মামলা ঠুকে দেয়া । আর এই কারণে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের কাছ থেকে নৃশংসতা ও গণহত্যার বিবরণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণে নেমে যাওয়া।  - ফেসবুক থেকে