ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ কোটি টিকা

প্রকাশের সময় : 2021-09-08 11:18:18 | প্রকাশক : Administration ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ কোটি টিকা

তৌফিক মারুফ: করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পর থেকেই টিকা নেওয়ার আগ্রহ বেড়ে যায় মানুষের মধ্যে। একই মাসে টিকা আসার গতিও বেড়ে যায় আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে। সরকার সাময়িক সময়ের জন্য হলেও বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে টিকা পৌঁছে দেয় গ্রামে মানুষের হাতের নাগাল পর্যন্তও।

সব মিলিয়ে করোনামুক্তির আশায় মানুষের প্রধান ভরসা হয়ে উঠেছে টিকা। সরকারের টিকা বিষয়ক নীতিনির্ধারকরা আশা করছেন, আসছে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে টিকার জোগান ছাড়িয়ে যাবে ২০ কোটি ডোজ, যা দুই ডোজ হিসাবে পাবে ১০ কোটির বেশি মানুষ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম ও মডার্না সব মিলিয়ে টিকা এসেছে তিন কোটি ২০ লাখ ১৭ হাজার ৯২০ ডোজ। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৮ বছরের ওপরের ১১ কোটি ৭৮ লাখ ছয় হাজার মানুষের ৮০ শতাংশের বেশি টিকা পেয়ে যাবে। তবে বিশেষজ্ঞরা এখন থেকেই শিশুদের টিকা নিয়েও আগাম পরিকল্পনা করে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে সিনোফার্ম থেকে আসবে দেড় কোটি ডোজ করে মোট ছয় কোটি ডোজ। ডিসেম্বরের মধ্যে রাশিয়া থেকে আসবে এক কোটি ডোজ। ভারতের সেরাম থেকে আসার আশা আছে পাওনা দুই কোটি ৩০ লাখ ডোজ। ডিসেম্বরের মধ্যে কোভ্যাক্স থেকে আসার কথা রয়েছে আরো ছয় কোটি ডোজ। এ ছাড়া আরো একাধিক সোর্স থেকে নতুন একাধিক টিকাও আসার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এর বাইরে দেশে ইনসেপ্টা থেকেও সিনোফার্মের টিকা পাওয়া যাবে। তবে সেটা কত ডোজ হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। যদিও ইনসেপ্টা বলেছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে তারা উৎপাদনে যাবে। ফলে এই টিকা পেলে ডিসেম্বর নাগাদ পরিকল্পনা অনুসারে ১০ কোটি মানুষকে দুই ডোজ করে টিকা দেয়া যাবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের টিকা দেওয়ার সক্ষমতা নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। সমস্যা হচ্ছে, টিকা পাওয়া নিয়ে। আমি যে হিসাব দিলাম এর সবই আমাদের কনফার্ম কমিটমেন্ট দেওয়া, কিন্তু আমাদের তো তিক্ত অভিজ্ঞতাও রয়েছে। চুক্তি করে, টাকা পরিশোধ করেও সব টিকা পেলাম না। সামনে যদি কোনো জায়গা থেকে এমন কিছু অপ্রত্যাশিত কোনো বিপত্তি ঘটে, তখন তো আমাদের সব পরিকল্পনা ঠিক রাখা যাবে না। তবু আমরা আশাবাদী যে আর কোনো বিপত্তি ছাড়াই আমরা সময় মতো সব টিকা পেয়ে যাব এবং দেশের মানুষকে তা দিতে পারব।’

বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, দেশে আগে থেকেই সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। যার সর্বশেষ প্রমাণ মিলেছে গত ৭ আগস্ট এক দিনেই ৩০ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে। ফলে হাতে টিকা থাকলে দেওয়া কোনো সমস্যা নয় বলে তাঁরা মনে করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডাঃ বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এখনকার পরিকল্পনা অনুসারে টিকা পাওয়া গেলে এবং দেওয়া গেলে ১৮ বছরের ওপরের জনগোষ্ঠীর ৮০ শতাংশের বেশি মানুষের টিকা নিশ্চিত হবে, কিন্তু এরপর আরেকটি পরিকল্পনা করে রাখতে হবে ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য। কারণ এখনই অনেক দেশ এ নিয়ে কাজ করছে। সামনে আমাদেরও সেদিকে যেতেই হবে।’- কালের কণ্ঠ