সেবামূলক কাজে আবার আলোচনায়

প্রকাশের সময় : 2019-01-03 20:41:26 | প্রকাশক : Admin সেবামূলক কাজে আবার আলোচনায়

জাকির হোসেন: বাংলাদেশ পুলিশের এএসআই জাহিদ হোসেন বানারীপাড়া থানায় কর্মরত। এখানে আসার পর থেকেই পুলিশের এই অফিসার তার ডিউটির পাশাপাশি অবর্তীণ হচ্ছেন সমাজ কর্মীর ভূমিকায়।

পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের শ্রমিক আনিচ হাওলাদারের ছেলে মোঃ খবির হোসেন (৩৫)। কিশোর বয়স থেকে ভালোই ছিল সে, তবে কয়েক বছর কেটে যেতে না যেতেই সংসারের টানা পোড়েনের যাতাকলে পরে সমাজে চলার গতিপথ হারিয়ে মানুষিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরে। তার বড় ভাই কবিরেরও একই অবস্থা হয়।

বর্তমানে দুই ভাই বানারীপাড়া বন্দর বাজারে বসে থাকে যদি কেউ কিছু দেয় তবে নেয়। কিছুদিন আগে টিনের বাক্স কাঁধে নিয়ে পান বিক্রি করতো। তবে তাদের বেশবুশা দেখে কেউ তাদের কাছ থেকে পান কিনতেন না। কয়েকদিন রিক্সাও চালিয়েছে সেখানেও একই অবস্থা যাত্রী উঠেনা।

কারন সামাজিক পথ হারিয়ে তাদের চলাফেরা অনেকটা পাগলের মতো। মানুষ ভাবেনও তাই।

এক সকালে এএসআই জাহিদ হোসেন খবিরকে বন্দর বাজার থেকে তুলে নেয়। তখন খবির বলতেছিল, মুই হরছি কি সার মোরে দইরা নেন ক্যা। কোন কথা নেই চল আমার সাথে। নিয়ে গেল সেলুনের দোকানে, কাটালো চুল ও খান্দানি আকারের গোফ। পরে নিয়ে গেল থানার ঘাটে। খালের পাড়ে বসিয়ে রেখে একে একে সেম্পু, সাবান, নতুন শীতের পোশাক ও লুঙ্গি কিনে আনলো।  কাঁচামাল ব্যবসায়ী মোঃ কালু হোসাইনের সহযোগিতায় প্রায় ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময় নিয়ে গোসল করিয়ে পোশাক পরিয়ে হোটেলে নিয়ে যান দুপুরের খাবারের জন্য। হোটেলে বসিয়ে তাকে বললো আপনার যা পছন্দ হয় সেটা দিয়েই খাবার খান। তবে খবির বায়না ধরলো সে যা তা দিয়ে খাবেন না; খাবেন মুরগীর গোশতো দিয়ে। পরিশেষে পাগল বেশের খবিরকে সাহেবি ভাবে সাজিয়ে দিল এএসআই জাহিদ।

এর আগে তিনি নিজ উদ্যোগে উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের একটি জরাজীর্ণ রাস্তা সংস্কার ও পরিস্কার করে এলাকায় অনেক সুনাম অর্জন করার পাশাপাশি জণগনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে সনদ ও পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়াও পুলিশের এই অফিসার এলাকার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করার জন্য শিক্ষা উপকরণ দেয়া সহ সমাজের বকে যাওয়া কিশোর ও যুবকদের পথে আনার কাজে একাই ছুটে চলেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে কাউন্সিলিং করার জন্য।