আসছে টিকা চীন, রাশিয়ার টিকা পাওয়ার চেষ্টা

প্রকাশের সময় : 2020-10-01 11:32:49 | প্রকাশক : Administration
আসছে টিকা  চীন, রাশিয়ার টিকা পাওয়ার চেষ্টা

সিমেক ডেস্কঃ চীনা কোম্পানি সিনোভেকের টিকা দেশে পৌঁছালেই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ (ট্রায়াল) শুরু করবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে টিকা আনতে দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

বিশ্বের কিছু দেশ করোনার টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টা চালাচ্ছে। যেসব দেশ নিজেরা টিকা উদ্ভাবন বা উৎপাদন করতে পারবে না। তাদের অন্য দেশ থেকে টিকা কিনতে হবে অথবা আন্তর্জাতিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে টিকা সংগ্রহ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চীন, রাশিয়া, ভারত ছাড়া অন্য দেশ থেকে টিকা আনার সম্ভাব্য বিকল্প পথ খুঁজে দেখছে। কোভ্যাক্সের মাধ্যমে টিকা পাওয়ার প্রক্রিয়ায়ও বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার ভ্যাকসিনের জন্য টাকা বরাদ্দ রেখেছেন। সব দেশে আবেদন করে রাখা হয়েছে। যেখানেই আগে টিকা পাওয়া যাবে, দেশের মানুষের জন্য টিকা আনা হবে। বিভিন্ন দেশে ১৭৯টি পৃথক টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে ১৪৫টি আছে প্রাথমিক পর্যায়ে এবং পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে ৩৪টি। রাশিয়ার টিকার ব্যপারে ইতিমধ্যে অনেক দেশ আগ্রহ দেখিয়েছে। বাংলাদেশও দেখিয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার চীনের কোম্পানি সিনোভ্যাকের টিকা পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে। আইসিডিডিআরবি এই পরীক্ষা করবে। সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। রাজধানীর সাতটি হাসপাতালে ৪ হাজার ২০০ স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর চীনা টিকার পরীক্ষা হবে। আইসিডিডিআরবি এরই মধ্যে প্রায় ২৫০ মাঠ গবেষক নিয়োগ দিয়েছে। তাঁদের প্রশিক্ষণ চলছে। আইসিডিডিআরবি কর্তৃপক্ষ সাতটি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরীক্ষার প্রাথমিক প্রস্তুতির ব্যাপারে কথা বলেছেন।

আইসিডিডিআরবির সঙ্গে সিনোভ্যাকের চুক্তিতে বলা হয়েছে, পরীক্ষায় নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণিত হলে সিনোভ্যাক ১ লাখ ১০ হাজার টিকা বাংলাদেশকে বিনামূল্যে দিবে। এ ছাড়া টিকা তৈরির প্রযুক্তিও বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা হয়েছে। সিনোভ্যাকের এই টিকার নাম ‘করোনাভ্যাক’। ইতিমধ্যে ব্রাজিল ও ইন্দোনেশিয়ায় করোনাভ্যাকের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

টিকা উদ্ভাবনের ঘটনায় অনেকটা আকস্মিকভাবে রাশিয়া আলোচনায় চলে আসে। ১২ আগস্ট রাশিয়া টিকা উদ্ভাবনের ঘোষণা দেয়। তবে রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত টিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। তবে ৪ সেপ্টেম্বর চিকিৎসা সাময়িকে রাশিয়ার টিকা নিয়ে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশের পর আলোচনা অনেকটাই থেমে গেছে। বাংলাদেশ সরকার রাশিয়ার কাছ থেকে টিকা পাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করেছে। রাশিয়ার এক একটি টিকার দাম পড়বে ১০ মার্কিন ডলার বা ৮৫০ টাকা।

ভারত একই সঙ্গে টিকা উদ্ভাবন এবং অন্য দেশের উদ্ভাবিত টিকা উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার বাংলাদেশ সফরের সময় প্রতিবেশী দেশটির কাছ থেকে টিকা সহায়তার কথা প্রথম শোনা যায়। সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া টিকা উৎপাদনের চুক্তি করেছে অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রোজেনেকার সঙ্গে। আবার সেরামের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মা। তবে সেরামের টিকা বাংলাদেশে বিনামূল্যে না স্বল্পমূল্যে পাওয়া যাবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

দরিদ্র দেশের মানুষের টিকার চাহিদা মেটানোর জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, দ্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমুনাইজেশন (গ্যাভি) ও কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস (সিইপিআই) যৌথভাবে একটি উদ্যোগ গড়ে তুলেছে। এর নাম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্লোবাল অ্যাকসেস বা কোভ্যাক্স। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিনামূল্যে, স্বল্পমূল্যে টিকা কিনে মজুত গড়ে তুলবে কোভ্যাক্স। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভ্যাক্সের টিকা পাওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। কোভ্যাক্সের টিকা যৌক্তিকভাবে বিশ্বব্যাপী বণ্টনে নেতৃত্ব দেবে ইউনিসেফ।

অতীতে দেখা গেছে, টিকা উদ্ভাবনে বছরের পর বছর সময় লাগে। টিকা নিরাপদ ও কার্যকর কি না, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হতে চান। কিন্তু অর্থনীতি ও রাজনীতির চাপ থাকে বিজ্ঞানবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের আগেই কার্যকর টিকা বাজারে আসবে। অন্যদিকে বিশ্বের শীর্ষ ৯টি ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, করোনা টিকার উদ্ভাবন ও পরীক্ষায় উচ্চ নৈতিকতা ও সুষ্ঠু বৈজ্ঞানিক নীতি অনুসরণ করতে তাঁরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো যুক্তরাজ্যের অ্যাস্ট্রোজেনেকা ও গ্লাক্সোস্মিথ, জার্মানির বায়োনটেক, জনসন অ্যান্ড জনসন, এমএসডি, মডার্না, নোভাভ্যাক্স ও ফাইজার এবং ফ্রান্সের স্যানোফি।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com