মহানায়ক উত্তম কুমার

প্রকাশের সময় : 2020-10-01 11:33:54 | প্রকাশক : Administration
মহানায়ক উত্তম কুমার

শাহ মতিন টিপুঃ ভুবন ভোলানো হাসিই ছিল তার অন্যতম পরিচয়। বাংলা সিনেমার এই আইকন আজো বেঁচে আছেন কোটি হৃদয়ে। ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতার ভবানীপুরে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্মেছিলেন এই কিংবদন্তি নায়ক। তার আসল নাম ছিল অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। সিনেমায় এসে হয়ে যান উত্তম কুমার।

তার অভিনয় খ্যাতি কতটা ছিল মানুষের মুখের একটি উক্তিই এর বড় প্রমাণ। আজো কারো ঠাঁটবাট দেখলে বাঙালিদের বলতে শোনা যায়- ‘নিজেকে কী উত্তম কুমার মনে হয়?' উত্তম কুমারের জীবনের শুরুটা মোটেও মসৃণ ছিলনা। সংসারের হাল ধরতে শিক্ষাজীবন শেষ না করেই কলকাতা পোর্টে কেরানির চাকরি শুরু করেন। পরে অভিনয়ের প্রতি গভীর অনুরাগ থেকে কাজ করেন মঞ্চে।

সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসে চলচ্চিত্র জগতে প্রতিষ্ঠা পেতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। ৫০ এর দশকে ‘দৃষ্টিদান’ দিয়ে সিনেমা জীবন শুরু। এরপর প্রথম ছবি হিসেবে ‘দৃষ্টিদান’ ছবিটিও ব্যর্থ হয়। অবশেষে রূপালি পর্দায় ‘মায়াডোর’ দিয়ে উত্তম কুমারের শুরু। ‘বসু পরিবার’ ছবিটি দিয়ে খানিকটা পরিচিতি আসে। ১৯৫৩ সালে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবি দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ঝড় তোলেন উত্তম কুমার।

এই ছবির মধ্য দিয়েই বাংলা চলচ্চিত্র পায় তার সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা। শুরু হয় উত্তম যুগ। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ‘হারানো সুর’, ‘পথে হল দেরী’, ‘সপ্তপদী’, ‘চাওয়া পাওয়া’, ‘বিপাশা’, ‘জীবন তৃষ্ণা’ আর ‘সাগরিকা’-এর মতো কালজয়ী সব ছবি করে আকাঙ্খিত মুখ হয়ে ওঠেন উত্তম। একে একে অনেক সাড়া জাগানো চলচ্চিত্রের অভিনেতা তিনি। রোমান্টিক অভিনেতার চূড়ায় অবস্থান করেন উত্তম কুমার। পান মহানায়কের খ্যাতি।

শুধু বাংলা ছবিই নয়, বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন উত্তম কুমার। এর মধ্যে ‘ছোটিসি মুলাকাত’, ‘অমানুষ’, ‘আনন্দ আশ্রম’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ ও ‘চিড়িয়াখানা’ উত্তম কুমারের আরো দু'টি সেরা চলচ্চিত্র। উত্তম কুমারকে ভেবেই ‘নায়ক’ ছবি করার কথা ভেবেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ‘নায়ক’ উত্তমের ক্যারিয়ারের ১১০তম ছবি। এই ছবিটি আজো সিনেমাপ্রেমীদের মনে এক অন্যরকম আলোড়ন তৈরি করে।

‘সাড়ে চুয়াত্তর’ তাকে চলচ্চিত্র জগতে স্থায়ী আসন করে দেয়। এই ছবিতে তিনি সুচিত্রা সেনের বিপরীতে অভিনয় করেন। এই ছবির মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল উত্তম-সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত হয়। উত্তম কুমার গৌরী দেবীকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র সন্তান গৌতম চট্টোপাধ্যায় মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ক্যান্সারে মারা যান। গৌরব চট্টোপাধ্যায় উত্তম কুমারের একমাত্র নাতি। তিনি বর্তমানে টালিগঞ্জের জনপ্রিয় ব্যস্ত অভিনেতা।

১৯৬৩ সালে উত্তম কুমার তার পরিবার ছেড়ে চলে যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে বসবাস করেন। এই নায়ক ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই কলকাতার টালিগঞ্জে মৃত্যুবরণ করেন। চিরবিদায় নেয়ার পরও বাংলার মানুষের মনে থেকে গেছেন মহানায়ক হয়েই। যতোদিন বাংলা সিনেমা থাকবে তার নাম থাকবে অমর হয়ে। - রাইজিংবিডি.কম

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com