নান্দনিক চেহারা পাচ্ছে চট্টগ্রাম
প্রকাশের সময় : 2020-11-26 12:34:09 | প্রকাশক : Administration
হাসান নাসিরঃ সড়ক যোগাযোগে অভাবনীয় উন্নয়নের পাশাপাশি চট্টগ্রামকে পর্যটন নগরীর পথে বিশাল একটি ধাপ এগিয়ে নিচ্ছে আড়াই হাজার কোটি টাকার সিটি আউটার রিং রোড। সাগর তীরঘেঁষা এ সড়কের কাজ এখন একেবারেই শেষ পর্যায়ে। এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল। চলতি বছরে শেষ হয়ে যাবে মূল রিং রোডের কাজ। এরপর ছোট তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়ে গেলেই বন্দরনগরী উদ্ভাসিত হবে নতুন চেহারায়।
চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড একটি স্বপ্নের প্রকল্প। যানজট নিরসনে যেমন এ সড়কটি ভূমিকা রাখবে, তেমনিভাবে রিং রোড নির্মিত হয়ে গেলে চট্টগ্রাম এক নান্দনিক শহরে পরিণত হবে। ফৌজদারহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত যাওয়া যাবে সাগরের পাড় দিয়ে। এতে সময় কম লাগবে, উপভোগ করা যাবে সাগরের ঢেউ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি ৯২ শতাংশ। মূল সড়কে কার্পেটিং সম্পন্ন হওয়ায় যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। এখন চলছে সড়কের ধারে ব্ল−ক বসানো এবং সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। তিনটি ফিডার রোড বা সংযোগ সড়কের কাজ হয়ে গেলে মিলবে শতভাগ সুফল। ফিডার রোড-১ হল পতেঙ্গা স্টিল মিল এলাকার নারিকেলতলা দিয়ে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত। ফিডার রোড-২ মিলিত হবে বড়পুল থেকে আনন্দবাজার হয়ে বেড়িবাঁধে। আর ফিডার রোড-৩ বেড়িবাঁধ পর্যন্ত যাবে সাগরিকা হয়ে। তিন নম্বর ফিডার রোডে থাকছে ফ্লাইওভার।
চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোডের দৈর্ঘ্য ১৭ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার। এরমধ্যে মূল আউটার রিং রোডের দৈর্ঘ্য ১৫ দশমিক ২০ কিলোমিটার। বাকি ২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার হচ্ছে সংযোগ সড়ক বা ফিডার রোড। বেড়িবাঁধের ওপর নির্মিত এ সড়কের উচ্চতা ৩০ ফুট, যা চট্টগ্রাম বন্দর, বিভিন্ন শিল্প কারখানা ও স্থাপনাসহ পুরো শহরকে রক্ষার কাজও করবে।
চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রবেশ করবে কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেলে। যা চলে যাবে আনোয়ারা হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত। মীরসরাই থেকে সীতাকুন্ড হয়ে মেরিন ড্রাইভ ফৌজদারহাট এলাকায় মিলিত হবে আউটার রিং রোডের সঙ্গে। এছাড়া এরই মধ্যে ফৌজদারহাট এসে মিলেছে বায়েজিদ লিংক রোড।
যানবাহন চলাচল শুরু হয়ে যাওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়িতে এখন চট্টগ্রাম মহানগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা সি বিচ ও বিমানবন্দর পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে আধাঘণ্টার মধ্যে। এক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে লালখান বাজার থেকে শুরু হওয়া আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার। সবমিলে চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে অপার সম্ভাবনার হাতছানি দেখা দিয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোডের পরিকল্পনা অনেক আগের। ২০০৫ সালে এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করে জাপানের সাহায্য সংস্থা জাইকা। ২০০৭ সালে এ ব্যাপারে জাইকার সঙ্গে চুক্তি হয়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ৮৬৫ কোটি ২৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা। পরিকল্পনায় পরিবর্তন কয়েকদফা সংশোধনীর ফলে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকায়। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের ব্যয় ১ হাজার ৭২০ কোটি ১১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। আর জাইকা দিচ্ছে ৭০৬ কোটি টাকা। -জনকন্ঠ