সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক পদ্মা সেতু

প্রকাশের সময় : 2020-12-27 17:53:04 | প্রকাশক : Administration
সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক পদ্মা সেতু

প্রভাষ আমিনঃ পদ্মা সেতু পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সেতু নয়, তবে অবশ্যই সবচেয়ে আলোচিত সেতু। পদ্মা সেতুই একমাত্র সেতু যার প্রতিটি স্প্যান বসানো খবর হয়েছে। পদ্মার বুকে ৪২টি খুঁটির ওপর ৪১টি স্প্যানে সংযুক্ত পদ্মার দুই পাড়, আসলে আমাদের স্বপ্ন। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হয় প্রথম স্প্যানটি। ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির ওপর ৪১ নম্বর স্প্যানটি বসানোর পর মন ভরে তাকিয়ে দেখুন, একাকার হয়ে গেছে এপার ওপার।

বিশ্বব্যাংক তো ছিলই, ছিল নানামুখী ষড়যন্ত্র, গুজব। তারচেয়ে বড় কথা হলো বিশ্বের আর কোথাও পদ্মার মতো খরস্রোতা নদীর ওপর সেতু নেই। সেই অসম্ভব আজ সম্ভব হয়েছে। স্বপ্ন দেখতেও আসলে সাহস লাগে। শেখ হাসিনার সেই সাহস আছে, তিনি সেই সাহসীযাত্রায় সঙ্গী করেছেন গোটা জাতিকেই। কলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। এই সেতু হলে কাজের সুযোগ হবে ২ কোটি মানুষের। বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষা বলছে, সেতুর কারণে সরাসরি উপকৃত হবে তিন কোটি মানুষ। আর এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবি বলছে, দেশের অর্থনীতির আকার বা জিডিপি বাড়বে ১ দশমিক ২ শতাংশ। প্রতি বছর দারিদ্র কমবে ১.৯ শতাংশ হারে। সেতু শুধু পদ্মার দুই পাড়কে সংযুক্তই করবে না, বদলেও দেবে।

দুই পাড়ে সিঙ্গাপুর আর চীনের সাংহাই নগরের আদলে আধুনিক শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে। গড়ে উঠবে আধুনিক মানের হোটেল রিসোর্ট, যা পর্যটনেও যোগ করবে নতুন মাত্রা। তাছাড়া এই সেতু দিয়েই বাংলাদেশ যুক্ত হতে পারবে এশিয়ান হাইওয়েতে। পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাকে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করবে। অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চল একলাফে এগিয়ে যাবে অনেকদূর। স্থাপিত হবে শিল্প, সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান। আর শুধু অবহেলিত ২১ জেলা নয়, পদ্মা সেতু আসলে বদলে দেবে বাংলাদেশকেই।

তবে এতসব পরিসংখ্যান নয়, আমার কাছে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব অন্য জায়গায়। বিশ্বব্যাংকের টাকায় হলে হয়তো এসব তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আমি মাথা ঘামাতাম। কিন্তু পদ্মা সেতু আমার কাছে নিছক একটি সেতু নয়। পদ্মা সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক, স্বাবলম্বিতার প্রতীক। অনেক সময় টাকা থাকলেও অনেক কিছু করা যায় না, মানসিকতা আটকে রাখে। পদ্মা সেতু আমাদের সেই পরাধীনতার, ভৃত্য মানসিকতার অর্গল থেকে মুক্তি দেবে।

বিশ্বের সবাই দেখেছে, বিশ্বব্যাংককে মুখের ওপর না করে দিয়ে পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করতে পারছি। বাংলাদেশ মানে এখন ঝড়- ঝঞ্জা- জলোচ্ছ্বাস- দারিদ্র্য- মঙ্গা নয়। বাংলাদেশ এখন সম্ভাবনার নাম। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ইতিহাসে পদ্মা সেতুর আগে এবং পরে- এইভাবে ভাগ হবে। পদ্মা সেতুর পরের বাংলাদেশ সম্ভাবনার, সক্ষমতার দাপুটে বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে ভেবেই কবি লিখেছিলেন, জ্বলে পুড়ে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।

অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশ দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ধারায় বিভক্ত। সবকিছুতে আমরা আওয়ামী লীগ-বিএনপি খুঁজি। কিন্তু পদ্মা সেতুকে আমি রাজনীতির বাইরেই রাখতে চাই। দয়া করে কেউ পদ্মা সেতুর সঙ্গে গণতন্ত্রহীনতা, মতপ্রকাশে বাধা, বিরোধী দলকে দমন ইত্যাদিকে মেলাবেন না। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক হয়ে টিকে থাকবে যুগ যুগ ধরে। -ফেসবুক থেকে

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com