প্রথম বাঙালি মুসলিম নারী চিকিৎসক

প্রকাশের সময় : 2021-02-03 16:19:25 | প্রকাশক : Administration
প্রথম বাঙালি মুসলিম নারী চিকিৎসক

শাহ মতিন টিপু: ডাঃ জোহরা বেগম কাজী প্রথম আধুনিক বাঙালি মুসলিম নারী চিকিৎসক। বাংলাদেশে তিনি প্রথম মুসলিম নারী চিকিৎসাবিদ হিসেবে এক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব। অবিভক্ত ভারতবর্ষে নারী জাগরণের যে উন্মেষ ঘটেছিল, অধ্যাপক ডাঃ জোহরা বেগম কাজী সেই আন্দোলন ধারার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানে কাজের ক্ষেত্রে যোগ করেন এক নতুন মাত্রা।

তিনি একাধারে চিকিৎসক, শিক্ষক, সমাজসেবক, নারী জাগরণের পথিকৃৎ ও অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী ব্যক্তিত্ব। ১৯১২ সালের ১৫ অক্টোবর ব্রিটিশ ভারতের মধ্য প্রদেশের রাজনান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ডাঃ কাজী আব্দুস সাত্তার ও মা মোসাম্মদ আঞ্জুমান নেসা। তার আদি পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার গোপালপুর গ্রামে। একজন মেধাবী ছাত্রী হিসেবে জোহরা বেগম বাল্যকাল থেকেই প্রথম স্থান অধিকার করে সকল পর্যায়ের সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেন। ১৯৩৫ সালে দিল্লীর হার্ডিং মহিলা মেডিকেল কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে শীর্ষ স্থান অধিকার করে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রী লাভ করেন এবং ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় কর্তৃক প্রদত্ত পদকে ভূষিত হন।

জনসেবা ও সমাজকল্যাণমূলক আদর্শকে ব্রত হিসেবে নিয়ে ডাঃ জোহরা কাজী মহাত্মা গান্ধীর ‘সেবাশ্রমে’ তার চাকরি জীবন শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পূর্বে তিনি ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দেশ বিভাগের পর তিনি পূর্ববাংলায় চলে আসেন। নরসিংদী জেলার রায়পুর উপজেলার হাতিরদিয়ার জমিদার পুত্র রাজুউদ্দিন ভূঁইয়ার (এমপি) সাথে তিনি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন।

এ দেশে যখন কোনো নারী ডাক্তার ছিল না, তখন তিনিই প্রথম বাঙালি মুসলিম নারী ডাক্তার হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজে যোগদান করেছিলেন। তিনি আর্তমানবতার সেবা করেছেন, মুমূর্ষ রোগীর পাশে বিনিদ্র রজনী যাপন করেছেন। তিনি আড়ম্বরহীন জীবনযাপন করতেন এবং প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন না।

তার পোশাক-পরিচ্ছদ, চলাফেরা ছিল একদম সাদাসিধে। তিনি চিকিৎসা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসক তৈরির ক্ষেত্রে একজন সার্থক অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন। ডাঃ জোহরা কাজীর ঐকান্তিক চেষ্টার ফলে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং পরে মিটফোর্ড হাসপাতালে স্ত্রীরোগ ও ধাত্রীবিদ্যা বিভাগ খোলা হয়।

তিনি ১৯৫৫ সালে সরকারি বৃত্তি নিয়ে উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য ইংল্যান্ডে যান এবং সেখান থেকে অন্যান্য প্রশিক্ষণসহ উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে দেশে ফিরে তাঁর আগের কর্মস্থলে প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। তিনি হলি ফ্যামিলি রেডক্রস সিনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশে স্ত্রীরোগ ও ধাত্রীবিদ্যার ক্ষেত্রে যে ক'জন মহীয়সী নারী আলোরবর্তিকা নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন, ডাঃ জোহরা বেগম কাজী তাদের অগ্রগণ্য। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অনন্যসাধারণ ভূমিকার জন্য পাকিস্তান সরকার তাকে তঘমা-ই-পাকিস্তান খেতাবে ভূষিত করেছিল। তিনি একুশে পদক, বেগম রোকেয়া পদক, বিএমএ স্বর্ণপদকসহ অসংখ্য পদকপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। এই মহীয়সী চিকিৎসাবিজ্ঞানী ২০০৭ সালের ৭ নভেম্বর ইন্তেকাল করেন। -রাইজিংবিডিডটকম

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com