তার কবিতার চরণ আজো মানুষের মুখে মুখে
প্রকাশের সময় : 2021-02-17 13:59:13 | প্রকাশক : Administration
শাহ মতিন টিপু: তার বেশ কিছু কবিতার চরণ আজো মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হয়। চিরন্তনী’র মতোই এসব কবিতার লাইন মনে রেখেছে মানুষ। অসংখ্য কবিতার চরণের রচয়িতা কামিনী রায়। বরিশাল জেলার বাসন্ডা গ্রামে ১৮৬৪ সালের ১২ অক্টোবর তার জন্ম। তিনি ব্রিটিশ ভারতের প্রথম বাঙালী গ্র্যাজুয়েট।
পিতৃ প্রদত্ত নাম কামিনী সেন। বিয়ের পর স্বামী কেদার নাথ রায়ের পদবি যুক্ত হয়ে হন কামিনী রায়। বাবা চন্ডিচরণ সেন ছিলেন তৎকালীন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও বিচারক। তার কাকা নীতিশ রায় ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের জাঁদরেল ব্যারিস্টার। পরে যিনি কলকাতার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। কামিনী রায়ের বোন যামিনী সেন ছিলেন তৎকালীন সময়ের প্রখ্যাত চিকিৎসক। তিনি নেপালের রাজ পরিবারের চিকিৎসক ছিলেন।
কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে তিনি ১৮৮৬ সালে সংস্কৃত ভাষায় সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। কৈশোরেই কামিনী রায় সাহিত্য রচনা শুরু করেন এবং কবিত্ব শক্তির প্রকাশ ঘটান। তৎকালীন সময়ে কামিনী রায় নারীর ভোটাধিকার আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন তিনি। তাদের আন্দোলনের ফলেই তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে বাঙালী নারীর ভোটাধিকার প্রদান করে। কামিনী রায়কে ব্রিটিশ সরকার ‘নারী শ্রম তদন্ত কমিশন’ এর সদস্য মনোনীত করে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কামিনী রায়কে তার অসামান্য কবি প্রতিভার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ‘জগত্তারিনী’ স্বর্ণপদক প্রদান করে।
অবাক করা তথ্য হচ্ছে, তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের প্রথম নারী স্নাতক ডিগ্রীধারী। তিনি একসময় ‘জনৈক বঙ্গমহিলা’ ছদ্মনামে লিখতেন। কামিনী রায়ের জীবনের দুঃখজনক অধ্যায় হচ্ছে- বিয়ের ১২ বছর পর (১৯১০ খ্রিঃ) তার স্বামীর মৃত্যু হয়। এর তিন বছর পর শিশুসন্তান অশোকের মৃত্যু হয়। স্বামী এবং পুত্রের মৃত্যুর পর দুঃখ বেদনা নিয়েই তিনি পরবর্তী জীবন অতিবাহিত করেন। শেষ বয়সে তিনি ঝাড়খন্ডের হাজারীবাগে বসবাস করতেন। ১৯৩৩-এর ২৭ সেপ্টেম্বর ৬৯ বছর বয়সে এই বিদুষি কবির মৃত্যু হয়। -রাইজিংবিডিডটকম