সিমেক ফাউন্ডেশনের কিছু কথা
প্রকাশের সময় : 2021-02-17 14:33:04 | প্রকাশক : Administration
প্রতিটি মানুষেরই কোন না কোন কারণে বিশেষ কোন বছর মাস বা দিন স্মরণীয় হয়ে থাকে। তেমনি একটি মাস ফেব্র“য়ারী। ফেব্র“য়ারী মাস এলেই যেমনি আমাদের মাতৃভাষার জন্য রক্ত দেয়া ভাষা শহীদদের কথা মনে পড়ে; তেমনি আরও একটি কারণে এই মাসকে আমার খুবই মনে পড়ে। ময়মনসিংহের অবহেলিত গ্রাম ধলা এবং এর আশপাশের এলাকার জনগনকে কর্মমুখী এবং আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে ও নূন্যতম স্বাস্থ্য সেবা দিতে প্রথম একটি মিটিং হয়েছিল ২০১৪ সালের ৮ই ফেব্র“য়ারী। সেই থেকেই এই মাসের এই দিনটি আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন, একটি মাস।
সিমেক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিঃ সরদার মোঃ শাহীন ভাই এর সঠিক ভাবনা এবং কর্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী বিচ্ছিন্নভাবে কিছু না করে একটি সামাজিক এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কথা উঠে আসে মিটিং এ। সিমেক গ্রুপের নামের সাথে মিল রেখে প্রতিষ্ঠানটির নাম রাখা হয় সিমেক ফাউন্ডেশন। পর পর আরও কয়েকটি মিটিং হয়। মিটিং এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকায় মানুষের নানামুখী সেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। এ থেকেই জন্ম হয় আজকের এই সিমেক ফাউন্ডেশনের।
শুরুতে ফাউন্ডেশনের পথ চলা মোটেই মসৃণ ছিলনা। নানা জনের নানা মত আর নানা রকম বাজে কথার ফুলঝুড়ি সহ্য করতে হয়েছে ফাউন্ডেশকে। তাই বলে থেমে থাকেননি শাহীন ভাই, বন্ধ করে দেননি ফাউন্ডেশনের চলমান বিভিন্ন প্রকল্প। বরং পূর্ণ মনোবল নিয়ে ধলা বাজারে দুইটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে শুরু করেন সিমেক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কার্যক্রম। ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে তৈরি করেন ব্রশিউর এবং শুরু করেন নিম্নোক্ত প্রকল্প সমূহ:
১. সাহিয়া-মজিদ শিক্ষা বৃত্তি প্রকল্প
২. আবুল কালাম মন্ডল কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রকল্প
৩. আফছানা খানম সেলাই প্রশিক্ষণ প্রকল্প
৪. জনসচেতনতা মূলক প্রকল্প
৫. শোনিম শাহীন কমিউনিটি ক্লিনিক
প্রকল্পসমূহ চালানোর পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের স্থায়ী স্থাপনা নির্মানের জন্য জমি কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়। যেখানে নিজস্ব সীমানার মধ্যে শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধাসহ থাকবে আধুনিক প্রযুক্তির সব সেবা ও বিনোদন। থাকবে বড় পরিসরে সাজানো গোছানো ক্লাশরুম, লাইব্রেরী, মিলনায়তনসহ আরও অনেক কিছু।
বাস্তবায়নের জন্য দরকার কয়েক একর জমি। কিন্তু সেখানেও প্রতিটি জায়গা থেকে প্রতিটি স্তরে স্তরে আসতে থাকে হতাশাজনক খবর আর বাঁধা। অবশেষে সকল বাঁধা-বিপত্তি অতিক্রম করে ফাউন্ডেশনের জেনারেল সেক্রেটারী মোঃ ওমর ফারুক তাঁদের জমিসহ প্রায় ৬ (ছয়) বিঘা জমির ব্যবস্থা করেন। এতে ফাউন্ডেশনের একটা আশার আলো দেখা দেয়। জমির বিভিন্ন জটিলতার কারণে সেখানেও কেটে যায় প্রায় ২ (দুই) বছর।
অবশেষে সকল প্রকার জটিলতা কাটিয়ে নব উদ্যমে শুরু হয় ফাউন্ডেশনের পথ চলা। কাটানো হয় একটি পুকুর, দুঃখের বিষয় মাটির সমস্যার কারণে আজও শেষ করা যায়নি পুকুরের পাড় নির্মাণের কাজ। বানানো হয়েছে নয়নাভিরাম পুকুর ঘাট। শুরু হয় মাটি ভরাটের কাজ । আসতে থাকে ট্রাকের পর ট্রাক ভর্তি বালি। দ্রুত গতিতে চলে নির্মাণ শ্রমিকদের কাজ। আসতে থাকে কাঠ, রড, সিমেন্ট, বালিসহ আরও কত কি! এভাবে এক পর্যায়ে শেষ হয় বাউন্ডারি ওয়ালের সব পিলার ও গ্রেট ভীম নির্মাণ। তারপর গাঁথুনী শুরু হয় লাল রঙের সিরামিক ব্রিকসের। সামনে বানানো হয় বিশাল গেইট। মানুষের মুখে মুখে উঠে আসে সিমেক পল্লীর নাম। বদলে যায় অত্র এলাকার সৌন্দর্য্য। তথাকথিত ‘জালো পাড়ার’ বর্তমান নাম হতে শুরু করে সিমেক পল্লী।
ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে সয়েল টেস্টের কাজ। সিমেক গ্রুপের সুদক্ষ ইঞ্জিনিয়ারদের দ্বারা তৈরী হয়েছে বিল্ডিং তৈরীর লে আউট এবং নকশা। এখন অপেক্ষা কেবল ত্রিশাল উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমোদন। উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমোদনের পরই শুরু হবে ভবন নির্মানের কাজ।
শুরু হবে ফাউন্ডেশনের একটি স্বপ্নের বাস্তবায়নের কর্মযজ্ঞ।
ভবনের একপাশে থাকবে ভাষা শহীদের স্মরণে একটি চমকপ্রদ শহীদ মিনার আর অন্যপাশে থাকবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক স্মৃতিসৌধ। শেষ করা হবে চারদিকের চমৎকার ওয়াক ওয়ের নির্মাণ কাজ। এভাবেই একদিন শেষ হবে স্বপ্নের ফাউন্ডেশনের নির্মান কাজ ইনশাল্লাহ্।
পরিশেষে যাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম আর তীক্ষ্ণ মেধার সমন্বয়ে এই এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিমেক ফাউন্ডেশন, যে ফাউন্ডেশনের দ্বারা এলাকায় আসবে উন্নয়নের ছোঁয়া, এলাকার অবহেলিত মানুষ পাবে তাদের প্রয়োজনীয় সকল সেবা; সেই মহান মানুষ সিমেক গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং সিমেক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিঃ সরদার মোঃ শাহীন ভাই এবং তাঁর পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য প্রার্থনা করি আল্লাহ তায়ালা যেন তাঁদের সকলকে সুস্থ্য সুন্দর ও নিরাপদ জীবন দান করেন, আমিন
শামছুজ্জামান শিবলী, সিমেক ফাউন্ডেশন