পানির নিচের জাদুঘর
প্রকাশের সময় : 2021-08-25 15:41:09 | প্রকাশক : Administration
বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শনের জন্যে গ্রিসের নাম বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। দেশটির বিভিন্ন ঐতিহাসিক সম্পদ শুধু মাটির ওপরেই নয়, পানির নিচেও ছড়িয়ে আছে। সেই ঐতিহাসিক সম্পদগুলোই এখন চাইলে চোখের সামনে দেখে নিতে পারবেন সাধারণ দর্শনার্থীরা। দেশটির এজিয়ান সাগরের উত্তরে অ্যালোনিসস দ্বীপের কাছে অবস্থিত গ্রিসের প্রথম পানির নিচের জাদুঘর এনে দিচ্ছে সেই সুযোগ।
জাদুঘরটি ২০২০ সালে খোলা হলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এখনও জাদুঘর প্রদর্শনের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ মেনে চলতে হচ্ছে।
এখানে দর্শনার্থীরা এখন প্রায় ৪০ মিনিট ধরে পানির নিচের জাদুঘর ঘুরে দেখার সুযোগ পান।
জাদুঘরটির প্রায় ২৮ মিটার গভীরে প্রাচীন একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। জাহাজের কাঠ প্রায় পুরোপুরি ক্ষয়ে গেছে শুধুমাত্র কিছু ওয়াইনের পাত্র দেখা যায়। ধারণা করা হয়, জাহাজটি প্রায় আড়াই হাজার বছর পুরানো এক বাণিজ্যিক জাহাজ। অজানা কোনো কারণে অগ্নিকান্ডের ফলে জাহাজটি ডুবে গিয়েছিল বলে জনসাধারণের অনুমান।
পর্যটকেরা পানির নিচের জাদুঘরের নিদর্শন দেখে এতটাই মুগ্ধ যে তারা এখানে ভ্রমণের জন্যে ৯৫ ইউরো বা ১১০ ডলার গুণতে কোনো কার্পণ্য করেন না। বলে রাখা ভালো, এই জাদুঘরে ভ্রমণে যা ব্যয় হবে, তা নিয়মিত বিনোদনমূলক স্কুবা আউটিংয়ের খরচের চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। পানির নিচের এই জাদুঘরটি হতে পারে গ্রিসের পর্যটন শিল্পখাতের উপার্জনের বড় উৎস।
দেশটির বৃহত্তম সামুদ্রিক রিজার্ভের মধ্যবর্তী এ অঞ্চলে আরও ধ্বংসস্তুপ আবিষ্কার করা হয়েছে এবং এ জাতীয় আরও জাদুঘর উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।
জাদুঘরে আগত সব দর্শনার্থীদের অবশ্যই কিছু কঠোর নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। যেমন প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের চারপাশে কমপক্ষে ২ মিটার (প্রায় ৬ ফুট) দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আসা গ্রিক পর্যটক জর্জ গিয়াসেমিডিস বলেন, "জাদুঘরে প্রবেশের পর থেকেই ঐতিহাসিক এই নিদর্শনটি নিয়ে আমার প্রত্যাশা ছিল এবং তা সম্পূর্ণরূপে পূরণ হয়েছে।"
গভীরতা এবং প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে কেবলমাত্র দক্ষ ড্রাইভারদের খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষের আশেপাশে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে।
ঐ জাহাজের ধ্বংসাবশেষের আশেপাশে আরও চারটি ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার হয়েছে। এই নতুন আবিষ্কৃত ধ্বংসাবশেষগুলোতে যেন সহজেই ভ্রমণ করা যায় এবং অ্যালোনিসস দ্বীপটি যেন সারা বিশ্বের ডুবুরীদের কাছে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে সেটিই আপাতত প্রধান লক্ষ্য। - সূত্র: অনলাইন