কোরআনের বাঁশিওয়ালা জালাল উদ্দিন রুমি

প্রকাশের সময় : 2021-09-08 11:20:22 | প্রকাশক : Administration
কোরআনের বাঁশিওয়ালা জালাল উদ্দিন রুমি

আদিকাল থেকে কবিতা ছিল মানুষের সাহিত্য সৃষ্টির প্রাথমিক মাধ্যম। আর সব যুগেই কাব্য-সাহিত্য ছিল সমাদৃত।

কবিরা কাব্যের ভাষায় ফুটিয়ে তুলেছেন সম্প্রদায়, সমাজ, প্রেম, দেশ, জাতি ও নিজ ধর্মের গৌরবগাঁথা। পৃথিবীর শুরু লগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত যেসব কবি কাব্য-সাহিত্যের কারণে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন ‘সুফি কবি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি’।

৩০ সেপ্টেম্বর ১২০৭ সালে আফগানিস্তানে এ মহাকবির জন্ম। তিনি ছিলেন ১৩ শতকের একজন ফার্সি, সুন্নি মুসলিম কবি। তার কাব্য-সাহিত্য ও সুফি ধারার সাহিত্য জগতের এক অমর এবং অনন্য নক্ষত্র। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি এবং ‘বেস্ট সেলিং পোয়েট’বলা হয়।

মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমির অনন্য সাহিত্যকর্ম ‘মসনবি’ কাব্যে কল্পনা, বাস্তবতা, প্রেম, আধ্যাত্মিকতা, শিক্ষা, রহস্য, রূপকথা ও উপদেশসহ নানা ধরনের আয়োজন প্রায় ৮০০ বছর পরও তাকে অত্যুজ্জ্বল করে রেখেছে বিশ্বসাহিত্যে।

মসনবি’কাব্য সম্পর্কে ইরানের বিখ্যাত কবি আবদুর রহমান জামি বলেছেন,‘মাসনাবিয়ে মানাবিয়ে মৌলভী, হাস্তে কোরআনদার জবানে পাহলাবি’। অর্থাৎ মৌলভীর আধ্যাত্মিকতা মসনবি কাব্যটি হচ্ছে ফার্সি ভাষার কোরআন।

যদিও ঐশী বাণী কোরআনের সঙ্গে তুলনা করার মতো কোনো মহাগ্রন্থ বিশ্বে নেই এবং তেমন গ্রন্থ রচনা করা মানুষের সাধ্যাতীত। তবুও জালাল উদ্দিন রুমির মসনবিতে কোরআনের শিক্ষার ব্যাপক প্রতিফলন দেখা যায় বলেই মনে হয় কবি আবদুর রহমান জামির এ মন্তব্যটিকে অনেকাংশে যথাযথ বলা যায়।

কাব্য-সাহিত্যে জালাল উদ্দিন রুমির কাব্যগুলো সমৃদ্ধ চিন্তাধারার এক বিশাল সাগর। এর থেকে মণি-মুক্তা খুঁজে বের করা নাবিকের জন্য দুষ্কর। কাব্য-সাহিত্যে তার শব্দগুলো যেন গলিত লোহার টুকরোগুলোর মতোই কিংবা রং-বেরঙের পাথরের নুড়ি দিয়ে তৈরি করা মোজাইক টাইলসের মতো চকচকে।

কাব্যে রুমির নির্বাচিত শব্দাবলী মৌলিক ও মানবীয় বাস্তবতার শক্তি প্রকাশের সাক্ষ্য বহন করে। পাশ্চাত্যের কোনো একজন কবি বলেছিলেন, ‘কবিতার জগতে তাই মধুরতম হয়, যা মানুষের বেদনার কথা বলে। জালাল উদ্দিন রুমির কবিতাও তার ব্যতিক্রম নয়। বিশেষ করে জালাল উদ্দিন রুমির ‘দিওয়ানে শামস তাবরিজি’ কাব্যের গজলগুলোয় বিধৃত হয়েছে হৃদয়-জুড়ানো করুণ রসের অপূর্ব আস্বাদ। জালাল উদ্দিন রুমির কাব্য ‘দিওয়ানে শামস’ফার্সি গজল সাহিত্যের এক অনন্য সম্পদ’।

ঐতিহাসিক জুল আল আফলাকির মতে, জালাল উদ্দিন রুমির শ্রেষ্ঠ বেদনাবিধুর কবিতাগুলো রচিত হয়েছে শামস তাবরিজিকে হারানোর বিরহ ব্যথাকে কেন্দ্র করে। জালাল উদ্দিন রুমির আধ্যাত্মিক গুরু ‘শামস তাবরিজি’যেমন সূর্যের মতোই প্রজ্জ্বল হয়ে আছেন তার প্রিয় শিষ্য রুমির কবিতায়।

ফার্সি ভাষাভাষী অঞ্চল ছাড়াও ভারত উপমহাদেশে ওয়াজ-নসিহতের মজলিস এবং জ্ঞানগর্ব আলোচনায় মসনবির শ্লোকগুলো থেকে উদ্ধৃতি দেয়ার ব্যাপক প্রচলন আছে। আল্লাহতায়ালার পরিচয় তুলে ধরার সময় ভারত ও উপমহাদেশের আলেমদের মুখে শোনা যায় তার মসনবির একটি অমর শ্লোক।

শ্লোকে তিনি বলেছেন, ‘মান নাগুঞ্জাম দার জামিন ও আসমান লেকেগুঞ্জাম দার ক্বলবে মোমেনান’। অর্থাৎ আল্লাহ বলেছেন, ‘আকাশ ও জমিন আমাকে ধারণ করে না, বরং মুমিনের হৃদয়ই ধারণ করে আমাকে’।

মসনবিতে প্রায় ২৫ হাজার ধ্রুপদী শ্লোক তথা ৫০ হাজার পংক্তি আছে। মাওলানা রুমির ভাষা ছিল সাধারণ মানুষের ভাষার মতোই সহজ-সরল ও সাবলীল, অথচ সব ধরণের কাব্যিক সৌন্দর্যে ভরপুর। কাব্য-সাহিত্যে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর এই অনবদ্য কাব্য-সাহিত্যের কারণে তিনি পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত চির অমর হয়ে থাকবেন। - সূত্র: অনলাইন

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com