যুগান্তকারী নতুন শিক্ষাক্রম
প্রকাশের সময় : 2021-10-06 15:37:05 | প্রকাশক : Administration
আগামী ২০২৫ সাল থেকে পুরোপুরি নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হচ্ছে। এতে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কোন পরীক্ষা দিতে হবে না। নবম ও দশম শ্রেণীতে বিজ্ঞান, মানবিক কিংবা বাণিজ্যের মতো বিভাগ থাকবে না। শিক্ষার্থীরা একাদশে গিয়ে কোন্ বিভাগে পড়বে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। আর দশম শ্রেণীর আগে থাকছে না পাবলিক পরীক্ষা।
আগামী ২০২৪ সাল থেকে ৮ম ও ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। সেই হিসেবে ২০২৪ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের জেএসসি পরীক্ষা উঠে যাচ্ছে। এছাড়া ২০২৫ সাল থেকে ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। সেই হিসেবে ২০২৫ সালে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা উঠে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় শিক্ষাক্রমের খসড়া রূপরেখা অনুমোদন করেছেন। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই রূপরেখা উপস্থাপন করেন। তিনি বলেছেন, ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য আনন্দঘন শিক্ষা নিশ্চিত করতে এরকম শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে।
তিনি জানান, ২০২৫ সাল থেকে এ শিক্ষাক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়ন আগামী বছর থেকে কাজ শুরু হবে। আগামী বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ১০০টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু হবে। এরপর ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় বলা হয়েছে, আগামী বছর থেকে প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণী এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণীতে পাইলটিং শুরু হবে। ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে শুরু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণী এবং ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণীতে এই শিক্ষাক্রম শুরু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে পুরো শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, দশম শ্রেণীর পাঠ্যক্রম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে দুটি পরীক্ষা নিয়ে সেই দুই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল দেয়া হবে। অন্য শ্রেণীতে হবে সমাপনী পরীক্ষা, সমাপনীতে ধারাবাহিক মূল্যায়নের সঙ্গে সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। পরীক্ষা আর মূল্যায়ন এক করে দেখলে হবে না।
পুরো শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক হবে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, আনন্দময় পড়াশোনা হবে। বিষয়বস্তু ও পাঠ্যপুস্তকের বোঝা ও চাপ কমানো হবে। গভীর শেখনে গুরুত্ব দেয়া হবে। মুখস্থ নির্ভরতার বিষয়টি যেন না থাকে, এর বদলে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শেখাকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে খেলাখুলা ও অন্যান্য কার্যক্রমকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষেই যেন অধিকাংশ পাঠ গ্রহণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সূত্রমতে প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে ১০টি অভিন্ন বিষয়ে পড়ানো হবে। এরপর একাদশ শ্রেণীতে গিয়ে শাখা পরিবর্তনের সুযোগ রাখা হবে। বর্তমানে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত কিছু অভিন্ন বই পড়তে হয় এবং নবম শ্রেণীতে গিয়ে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা এসব শাখায় ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত যে ১০টি বই পড়ানো হবে, সেগুলো হলো বাংলা, ইংরেজী, গণিত, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সামাজিক বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, ধর্ম, স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। বর্তমানে এসব শ্রেণীতে ১২-১৪টি বই পড়ানো হয়। - সূত্র: অনলাইন