বদলে যাবে ঢাকার পূর্বাঞ্চল
প্রকাশের সময় : 2021-10-06 15:38:53 | প্রকাশক : Administration
২৪ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করে ঢাকার পূর্বাঞ্চল সড়ক বা ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে শহরের অভ্যন্তরের ৯১ কিলোমিটার বৃত্তাকার সড়ক পূর্ণতা পাবে। সে সময় আব্দুল্লাহপুর- গাবতলী- সোয়ারীঘাট- ডেমরা হয়ে বেরাইদ- ডুমনি দিয়ে আব্দুল্লাহপুরে খুব সহজে চলাচল করা যাবে।
ইস্টার্ন বাইপাস প্রকল্প ঢাকা শহরের পূর্বাঞ্চলের বন্যা, জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃত্তাকার এ সড়ক যোগাযোগের একটি অংশ ইস্টার্ন বাইপাস। এর দৈর্ঘ্য ২৪ কিলোমিটার। এ সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি এটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধও। বর্ষা মৌসুমে এ বাঁধ বাইরের পানি শহরের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেবে। এতে করে শহরের বন্যা, জলজট ও জলাবদ্ধতা কমবে। আর ইস্টার্ন বাইপাস নির্মিত হলে ঢাকার পূর্বাঞ্চলে সড়ক যোগাযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। ঢাকার ওপর গাড়ির চাপ কমবে। যেটা যানজট নিরসনে বড় ভূমিকা রাখবে।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৬১২ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এ বাবদ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খরচ হবে ১২ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া ওই অঞ্চলের বাঁধ নির্মাণ ও পানি নিষ্কাশন চ্যানেল তৈরি করতে খরচ হবে প্রায় আট হাজার ৭৭৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান পাউবো সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
এ প্রসঙ্গে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ রোকন উদ-দৌল্লা বলেন, ‘ইস্টার্ন বাইপাস প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অগ্রাধিকার প্রকল্প। ইতোমধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও কয়েক দফা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সে নির্দেশনার আলোকে পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ইস্টার্ন বাইপাসের ২৪ কিলোমিটার এলাকায় একসময় জলাধার ছিল। এখন তো সেখানে কোনো জলাধার নেই। তাহলে ব্রিজ বা ভায়াডাক্ট করার কোনো বিষয় তো সেখানে দেখছি না।’ তিনি বলেন, ‘ইস্টার্ন বাইপাস বাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে যদি কোনো জলাধার পড়ে, তবে সেটা রক্ষা করেই বাঁধ নির্মাণ করা হবে। কেননা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সব সময় জলাধার রক্ষার ব্যাপারে আন্তরিক। এ ক্ষেত্রে তার কোনো ব্যতিক্রম হবে না।’
এ বিষয়ে স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এ দেশের মানুষ পানি ও কাঁদামাটির সঙ্গে বসবাসে অভ্যস্ত। সে কারণে ওয়েস্টার্ন বাইপাস নির্মাণের ক্ষেত্রে আমাদের ভুল হয়েছে। ওই বাঁধ নির্মাণের কারণে শহরে পানি প্রবেশে ও বের হওয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সে সময় আমরা সরকারের এ উদ্যোগের বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু তৎকালীন সরকার আমাদের কথা শোনেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণের ক্ষেত্রেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। আমরা প্রস্তাব করেছি জলাধার সংরক্ষণ করতে হাতিরঝিলের আদলে ভায়াডাক্ট নির্মাণ করতে। তাহলে বাঁধ, সড়ক ও রক্ষা পাবে জলাধার।’ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নগর পরিকল্পনাবিদ ও ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) প্রকল্পের পরিচালক মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ইস্টার্ন বাইপাস জলাধার সংরক্ষণ করে করতে ড্যাপে সুপারিশ থাকবে। এ ক্ষেত্রে জলাধার সংরক্ষণ করতে ভায়াডাক্ট নির্মাণের পরামর্শ থাকবে।’ - সূত্র: অনলাইন