বিঘায় ধান ৫০ মণ; কৃষক খুব খুশি
প্রকাশের সময় : 2021-11-17 15:50:25 | প্রকাশক : Administration
ধানের নাম ‘ফাতেমা’। ফলন বিঘাপ্রতি ৫০ মণ। নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক কৃষকের চাষ করা ‘ফাতেমা’ জাতের ধান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এর প্রতিটি শীষে পাওয়া গেছে প্রায় হাজারটি ধান। দেশে উৎপাদিত প্রচলিত জাতের ধানের চেয়ে এই ধানের ফলন প্রায় তিনগুণ। মান্দার গণেশপুর ইউনিয়নের দোশতীনা গ্রামের সৌখিন কৃষক আশরাফুল ইসলাম বশিরের চাষ করা ওই ধান দেখতে এবং কিনতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন তার বাড়িতে।
বশির পেশায় একজন উকিল। নওগাঁ জজ কোর্টের একজন আইনজীবী তিনি। একই সঙ্গে আধুনিক চাষাবাদে রয়েছে তার ব্যাপক আগ্রহ। গতানুগতিক কৃষির পরিবর্তে নতুন জাতের এ ধান উৎপাদনে তিনি সাফল্য পেয়েছেন। লাভজনক হওয়ায় তার মতো এলাকার অনেকেই এখন এই নতুন জাতের ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
দেখতে ব্রি-২৮ ধানের মতো। অন্য ধানের মতোই এ ধানের চাষ পদ্ধতি। আউশ, আমন ও বোরো তিন মৌসুমেই এ ধানের চাষ করা যায়। তবে বোরো মৌসুমে এর উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। গাছের উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট, যা অন্য ধানের তুলনায় বেশি। গাছগুলো শক্ত হওয়ায় হেলে পড়ে না। আর এক একটি ধানের শীষে ৭৫০-১০০০টি করে ধান হয়। সাধারণ ধানের তুলনায় তিন থেকে চারগুণ বেশি।
ফলে এর উৎপাদনও অনেক বেশি। চলতি মৌসুমে তিনি দেড়বিঘা জমিতে প্রায় ৭৫মণ ধান পেয়েছেন। এ ধানে রোগ ও পোকামাকড়ের হার তুলনামূলক কম। এছাড়া চাল খুব চিকন ও ভাতও খেতে সুস্বাদু। বীজতলা তৈরি করার পর ১৫০ থেকে ১৫৫ দিনের মধ্যে ধান কাটা যায়। এই ধান ঝড়, খরা এবং লবণাক্ততা সহনীয়। ওই জাতের প্রতিটি ধানগাছের দৈর্ঘ্য ১১৫ থেকে ১৩০ সেন্টিমিটার, গুছি গড়ে আটটি, প্রতিটি ধানের ছড়ার দৈর্ঘ্য ৩৬ সেন্টিমিটার, গড়ে দানার সংখ্যা এক হাজারের ওপর।
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলিয়া গ্রামে লেবুয়াত শেখ (৪০) নিজেদের জমিতে ২০১৬ সালে প্রথম ওই ধান চাষ করেন। ওই বছর বোরো মৌসুমে তাঁর বাড়ির পাশে জমিতে হাইব্রিড আফতাব-৫ জাতের ধান কাটার সময় তিনটি ভিন্ন জাতের ধানের শীষ তিনি দেখতে পান। ওই তিনটি শীষ অন্যগুলোর চেয়ে অনেক বড় এবং শীষে ধানের দানার পরিমাণও অনেক বেশি ছিল।এরপর ওই ধানের শীষ তিনটি বাড়িতে এনে শুকিয়ে বীজ হিসেবে ব্যবহার করে এ ধান চাষ শুরু করেন। তিনি তার মায়ের নামানুসারে নাম না জানা এই ধানের নাম রাখেন ‘ফাতেমা ধান’। এই ধানের ফলন শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বকে তাক লাগাতে পারে। এই ধান খরা ও লবণ সহ্যকারী এবং সারাদেশে চাষের উপযোগী। এই ধান যদি সারাদেশে চাষ করা যায় তাহলে বার্ষিক উৎপাদন পাঁচ কোটি টন ছাড়িয়ে যাবে। - সূত্র: অনলাইন