২০ বছর পর বগুড়া বিমানবন্দর চালু

প্রকাশের সময় : 2021-12-16 08:56:44 | প্রকাশক : Administration
২০ বছর পর বগুড়া বিমানবন্দর চালু

সমুদ্র হক: অবকাঠামো নির্মাণের দুই দশকের বেশি সময়ের পর বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) আওতায় বগুড়া বিমান বন্দর চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের সিভিল এ্যাভিয়েশন খাতের সকল উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

বর্তমানে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের আটটি বিমানবন্দরের বিমান চলাচল অব্যাহত আছে। এগুলো হলো- ঢাকার হযরত শাহজালাল (রঃ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম শাহ আমানত (রঃ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রাজশাহী শাহ মাখদুম (রঃ) অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর, কক্সবাজার বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর, বরিশাল বিমানবন্দর। বগুড়া বিমানবন্দর চালু করা হলে এটি হবে দেশের নবম অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর। দেশের বিমানবন্দর চালু থাকায় রাজস্ব আয় বাড়ছে। ভৌগোলিক ও বাণিজ্যিক অবস্থান বিবেচনায় বগুড়া বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯৮৭ সালে। এরপর নব্বইয়ের দশকের শুরুতে শর্ট টেকঅফ এ্যান্ড ল্যান্ডিংয়ের (স্টল) উড়োজাহাজ চলাচলের ২২ কোটি টাকার নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়।

তারপর বগুড়া শহর থেকে প্রায় সাত কিলেমিটার পশ্চিমে বগুড়া-নওগাঁ সড়কের ধারে এরুলিয়া এলাকায় প্রায় ১১০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রকল্পের আওতায় ৬শ’ ফুট প্রস্থ্যের ৫ হাজার ফুট রানওয়ে, অফিস ভবন, টার্মিনাল ভবন, আবাসিক ভবন বিমানবন্দরে পৌঁছার রাস্তাঘাট বিদ্যুত পানি সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় সকল অবকাঠামো নির্মিত হয়।

কথা ছিল ২ হাজার সালের মধ্যে প্রকল্প কাজ শেষ হয়ে বগুড়া বিমানবন্দরে সিভিল এ্যাভিয়েশনের আওতায় উড়োজাহাজ উড্ডয়ন অবতরণ করবে। সব কিছু ঠিক থাকার পর ২০০১ সালে বিএনপি- জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে বিমানবন্দরটি বিমানবাহিনীর কাছে ন্যস্ত করে। বিমানবাহিনী সেখানে রাডার স্টেশন স্থাপন করে সামরিক বিমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করে। গেল প্রায় দুই দশক ধরে বগুড়া বিমানবন্দর এ ভাবেই চলছে।

বগুড়া বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণের পথ বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বগুড়া বিমানবন্দরকে সিভিল এ্যাভিয়েশনের আওতায় নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। এই লক্ষ্যে প্রতিটি বাজেটে বগুড়া বিমানবন্দর চালুর বিষয়টি উত্থাপিত হয়। বগুড়া বিমানবন্দরের বর্তমান রানওয়ের উভয়দিকে দেড় হাজার ফুট করে তিন হাজার ফুট সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়।

কারণ পূর্বের রানওয়ে ছিল স্টল বিমান ওঠানামার। বর্তমানে অধিক যাত্রী বহনের উন্নতমানের উড়োজাহাজ উড্ডয়ন অবতরণের জন্য অন্তত আট হাজার ফুট রানওয়ে দরকার। তারপরও বগুড়া বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়নি। কথা আছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বগুড়া বিমানবন্দরে প্রশিক্ষণ বিমানের পাশাপাশি বগুড়া-ঢাকা-বগুড়া আকাশপথে বাংলাদেশ বিমান ও প্রাইভেট বিমান সংস্থার ফ্লাইট চলবে।

কোভিড-১৯ কালের আগে প্রতিবছর ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জেলা প্রশাসকগণের (ডিসি) কয়েক দফা সম্মেলনে বগুড়ার ডিসিগণ বগুড়া বন্দরে যাত্রীবাহী ফ্লাইটের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন। এদিকে চলতি বছরের মার্চ মাসে বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু বগুড়া বিমানবন্দর চালু করতে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর কাছে লিখিত প্রস্তাবনা পাঠান।

তারপর বগুড়া বিমানবন্দর চালুর লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করে বেবিচক। এই কমিটি সম্প্রতি বগুড়া বিমানবন্দর পরিদর্শন করে। উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আকাশ পথে যোগাযোগে অধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বগুড়া বিমানবন্দরে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ওঠানামায় গুরুত্ব দেয়া হয়। বগুড়া বিমানবন্দরের রানওয়েকে ৮ হাজার ফুটে উন্নীত করা হবে। এর সঙ্গে জ্বালানি রিজার্ভার, যাত্রীগণের সুবিধা, মালামাল ব্যবস্থাপনাসহ অন্য সুবিধার জন্য অন্তত একশ’ একর ভূমি প্রয়োজন।

বিদ্যমান রানওয়ের পশ্চিমে জমি কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দেয়া আছে। মন্ত্রণালয় থেকে এখনও চিঠি আসেনি। বগুড়ার সুধীজনের মতে ষাটের দশকে হেলিকপ্টারে আকাশপথে বগুড়ার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ছিল। বগুড়ার বনানীতে হ্যালিপ্যাডে হেলিকপ্টার উড্ডয়ন ও অবতরণ করত। কপ্টার সার্ভিস ছিল লাভজনক।

পঞ্চাশ বছরে বগুড়া আরও উন্নত হওয়ায় উড়োজাহাজ ওঠানামার সার্বিক অবস্থা বিরাজ করছে। বগুড়ায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য রয়েছে আধুনিক স্টেডিয়াম। কয়েকটি ফোরস্টার হোটেল। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনারগুলো এখন বগুড়ায় হচ্ছে। দেশের প্রাচীন নগরী মহাস্থানগড়ে পর্যটক আগমনের সংখ্যা বেড়ে পর্যটকভূমিতে পরিণত হয়েছে। শীঘ্রই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ শুরু হচ্ছে। বগুড়ার লোকজন ঢাকায় দ্রুত যোগাযোগে আকাশপথের ভাবনা নিয়ে আছে।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com