স্বস্তিতে দেশের মানুষ

প্রকাশের সময় : 2022-01-12 16:36:20 | প্রকাশক : Administration
স্বস্তিতে দেশের মানুষ

স্বপ্না চক্রবর্তী: মহামারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বছরের মাঝামাঝিতে মারা যান অনেক মানুষ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব মতে, বছরের আগস্ট মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখে দেশ। তবে সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই কমতে থাকে সংক্রমণ। এরই ধারাবাহিকতায় নিয়ন্ত্রিত সংক্রমণে করোনাভাইরাস বিষয়ে স্বস্তিতেই শেষ হচ্ছে বছর।

এর অন্যতম কারণ টিকাদান কর্মসূচীর ব্যাপকতা। আর কয়েক মাসের ব্যবধানে এই কর্মসূচীতে মাইলফলক ছুঁয়েছে দেশ। ইতোমধ্যে টিকার দুই ডোজের আওতায় এসেছেন ৭ কোটির বেশি মানুষ। এক ডোজ পেয়েছেন প্রায় ১২ কোটি। টিকার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বস্তিবাসীসহ দুর্গম চরের বাসিন্দাদেরও।

তাই আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে স্কুল- কলেজসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিং কমপ্লেক্স, প্রার্থনালয়সহ সবকিছু। সর্বশেষ খুলে দেয়া হয়েছে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোও। ফলে লকডাউন- কঠোর লকডাউন বা শাটডাউনের মতো শব্দগুলো এখন সুদূর অতীত বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।

তবে আগামী বছরও ওমিক্রন-ডেলমিক্রনের প্রভাব বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর তাই সবক্ষেত্রে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন তারা। টিকাপ্রাপ্তির অনিশ্চয়তা কেটে গিয়ে এখন বাড়তি মজুদের কারণে ইতোমধ্যে বুস্টার ডোজের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ।

গত বছরের আগস্টের ১০ তারিখ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়। ফলে রোগী সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। এর আগে সংক্রমণ এত ভয়াবহ আকার ধারণ করে যে, জনসমাগম সীমিতকরণে এর আগের বছরের মতো লকডাউনও অকার্যকর বলে মনে হয় সংশ্লিষ্টদের। আর তাই জারি করা হয় কঠোর বিধিনিষেধ।

২০২০ সালে দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার সময় এর মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল রাজধানী ঢাকা। মূলত চীনসহ আক্রান্ত দেশগুলো থেকে দেশে আসা যাত্রীদের মাধ্যমেই এটি দেশে ছড়িয়ে যায়। তবে তা রাজধানী কেন্দ্রিকই ছিল। কিন্তু ২০২১ সালের শুরুর দিকেই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দেখা দেয় করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। যা দেশের বিভিন্ন সীমান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশেও প্রবেশ করে।

ফলে চলতি বছরে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগই ছিল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলগুলোতেও বাড়ে করোনার রোগী। কোথাও কোথাও রোগীদের জায়গা দিতে না পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেঝেতে রেখেও রোগীদের চিকিৎসা দেয়। তৈরি হয় চিকিৎসক সঙ্কট। এ সময় সবচেয়ে বেশি সঙ্কট তৈরি হয় অক্সিজেনের।

গত বছরেই শুরু হয় দেশে প্রথম করোনার টিকা দেয়া। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় করোনার টিকাদান কার্যক্রম। ওই সময় করোনার টিকা নিয়ে নানা সমালোচনা, গুজবের কারণে অনেকেই অনীহা প্রকাশ করেন টিকা নিতে।

ভারতের রফতানি বন্ধের ঘোষণার পরপরই টিকা পেতে নানামুখী কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করে সরকারের বিভিন্ন দফতর। এরই সুফল হিসেবে বিভিন্ন সময় চীনের সিনোফার্ম, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ও ফাইজারের টিকাও পায় বাংলাদেশ। অনিশ্চয়তা কাটিয়ে নতুন উদ্যোমে টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয় আবারও।

মহামারী করোনার কারণে প্রায় ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। খুলে দেয়া হয় স্কুল-কলেজ। এর মধ্য দিয়ে আবারও প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা সশরীরে শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত হয়ে ক্লাস করে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফিরে আসে উন্মাদনা। দেশের প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুখরিত হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের পদচারণা।

স্বাভাবিক হলো দোকানপাট, শপিংমল, গণপরিবহন, পর্যটন কেন্দ্রগুলো। করোনা তখনও না কমলেও মানুষের জীবিকা নির্বাহের তাগিদে ৮ এপ্রিল দোকানপাট, শপিংমল খোলার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই দিন এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ৯ এপ্রিল থেকে দোকানপাট ও শপিংমল সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

টিকার মজুদের সাপেক্ষে দেশে উদ্বোধন করা হয় করোনার টিকার বুস্টার ডোজের। প্রথমবারের মতো এবারও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকাই নেন বুস্টার ডোজের প্রথম ডোজ।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়ার তিন মাস পর ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর ভাইরাসটির বহুমুখী রূপ দেখে দেশের মানুষ। উর্ধ্বমুখী সংক্রমণ থেকে নিম্নমুখী আবার নিম্নমুখী পর্যায় থেকে উর্ধ্বমুখী। তবে বছরের শেষ কয়েক মাস বেশ স্বস্তিতেই রয়েছে শনাক্ত এবং সংক্রমণ পরিস্থিতি। স্বস্তিতে বছর সমাপ্তি। তবে দেশের করোনার বিস্তার যেহেতু মার্চ-এপ্রিলেই হয় সেহেতু নতুন বছরে কিছুটা আশঙ্কা নিয়েই শুরু হয়। - সূত্র: অনলাইন (সংকলিত)

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com