সোনালি আঁশের দিন ফিরছে
প্রকাশের সময় : 2022-02-17 09:33:26 | প্রকাশক : Administration
রহিম শেখ: করোনা মহামারীর মধ্যেও রফতানি আয়ে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হয়েছে এই খাত থেকেই। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে পরিবেশের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসায় বিশ্বে পাট পণ্যের চাহিদা নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে পাট ও পাটজাত দ্রব্য রফতানি করে ৩০ কোটি ৭৫ লাখ ডলার আয় করেছে দেশ।
পাটজাত পণ্য রফতানি করে সংকটে পড়া চামড়া খাতকে পেছনে ফেলে তৈরি পোশাকের পরের স্থান দখল করে নিয়েছে পাট খাত। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি করে আয় হয়েছিল ১০২ কোটি ডলার। আর পাট ও পাটজাত দ্রব্য রফতানি করে ৮১ কোটি ৬২ লাখ ডলার আয় হয়েছিল। সে হিসেবে এক বছরে চামড়ার রফতানি যতটা কমেছে, তার তুলনায় পাটের রফতানি বেড়েছে।
এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে তৈরি পোশাকসহ বড় সব খাতের রফতানি আয়ে ধস নামলেও পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয়ে বরাবরই দেখা গেছে উল্টো চিত্র। সোনালি আঁশে সমৃদ্ধ অর্থনীতির স্বপ্নে স্বাধীনতার পরের বছর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন (বিজেএমসি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রতিষ্ঠাকালে বিজেএমসির আওতায় ৭৬টি পাটকল ছিল।
চেষ্টা অব্যাহত থাকলে আমাদের এ খাতের রফতানি অনেক বাড়বে। এই মহামারীর বছরেই আমরা আমাদের হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হব। বর্তমানে দেশে পাট চাষীর সংখ্যা ৪০ লাখ। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চার কোটি মানুষের জীবিকা পাটকে কেন্দ্র করে। প্রতিবছর মৌসুমে গড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পান কৃষক।
দেশের জিডিপিতে পাট খাতের অবদান দশমিক ২৬ শতাংশ ও কৃষি জিডিপিতে তা ১ দশমিক ৪ শতাংশ। দেশে সাড়ে সাত থেকে আট লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। যেখানে কম বেশি ৮২ লাখ বেল পাটের আঁশ উৎপন্ন হয়ে থাকে। বেশি পাট উৎপাদন হয় ফরিদপুর, যশোর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও জামালপুর জেলায়।
তবে সবচেয়ে বেশি পাটের চাষ হয় ফরিদপুর জেলায়, সেখানে এবার ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। গত মৌসুমে হয়েছিল ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে। পাটনির্ভর এই জেলায় ১৯টি পাটকল আছে। সবই বেসরকারী উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে সচল রয়েছে ১৩টি। দেশের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারী খাতের করিম জুট মিল এই ফরিদপুরেই অবস্থিত।