চোখ ধাঁধানো ঢাকা-টাঙ্গাইল চার লেন
প্রকাশের সময় : 2022-02-23 12:26:43 | প্রকাশক : Administration
জিন্নাতুন নূর: পাঁচ বছর আগেও ঢাকা-টাঙ্গাইল চার লেন সড়ক নির্মাণ কাজের জন্য উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের ভোগান্তি ছিল নিয়মিত ঘটনা। মহাসড়কের স্থানে স্থানে ভাঙাচোরা ও সড়কজুড়ে পড়ে থাকা নির্মাণ সামগ্রীর জন্য দূরপাল্লাসহ আশেপাশের যাত্রীদের যানজটে কেটেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এবার স্বস্তি পেতে যাচ্ছেন উত্তরাঞ্চলসহ এই পথের যাত্রীরা।
ঢাকা-টাঙ্গাইল চার লেন সড়কের কাজ প্রায় ৯৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী মার্চেই প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে ৭০ কি.মি. সড়কে উড়াল সড়ক, ওভারপাস, ব্রিজ ও বক্স কালভার্টসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। এর ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে দ্রুতগামী যানবাহনও। ঢেউ খেলানো ঝা চকচকে এই সড়কটিতে চলতে এখন যেমন স্বস্তি মিলছে একইভাবে এর প্রথম দেখায় যাত্রীরা পাবেন চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য। এ যেন আরেক ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে!
ইমপ্রুভমেন্ট অব জয়দেবপুর চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা রোড (এন-৪) টু এ ফোর লেন হাইওয়ে’ নামক প্রকল্পটির বেশির ভাগ স্থাপনার নির্মাণ কাজ শেষ। এরই মধ্যে এই মহাসড়কে যান চলাচল শুরু করেছে। আগের দুই লেনের সরু সড়কের বদলে এখন মোট চারটি সড়ক। মাঝের দুটি দিয়ে দ্রুতগতির যান চলাচল করছে। আর পাশের দুই সড়ক তথা সার্ভিস লেনে তুলনামূলক কম গতির যানবাহন চলছে।
সড়কের মাঝে ইস্পাতের পাত দিয়ে রেলিং দেওয়া হয়েছে। বিস্তৃত সড়ক ডিভাইডারে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন ফুলের গাছ। এরই মধ্যে নির্মাণ শেষে কালিয়াকৈর উড়াল সড়কের ওপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছে। মির্জাপুরে উড়াল সড়কের কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। পুরনো সেতুগুলোর পাশে নতুন যে সেতু তৈরি হয়েছে সেখানেও সার্ভিস লেন করা হয়েছে।
সার্ভিস লেনে মূলত স্থানীয় ধীরগতির যান চলাচল করতে দেখা গেছে। প্রকল্পের বেশ কিছু স্থানে এখনো সার্ভিস লেনের কাজ চলছে। আর আন্ডারপাসগুলো দিয়ে স্থানীয় যানগুলো রাস্তার একপাশ থেকে অন্যপাশে যাতায়াত করছে। প্রকল্পটির যে অংশগুলোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে সেখানে দিনরাত শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছেন। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ইউটার্নের ব্যবস্থা না থাকলেও ঢাকা-টাঙ্গাইল ফোর লেনে ইউটার্ন নেওয়ার সুবিধা রয়েছে।
প্রকল্পের ফিজিক্যাল অগ্রগতি ৯৯ শতাংশ। এখন তিনটি উড়াল সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে। এর মধ্যে দুটির র্যামের কাজ চলছে আর অন্যটির স্লাবের কাজ চলছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় প্রকাশিত সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদনের তথ্য মতে, এই প্রকল্পের আওতায় জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কি.মি. মহাসড়কে সাতটি উড়ালসড়ক, দুটি রেলওয়ে ওভারপাস, ২৬টি স্টিল ফুটওভার সেতু, ৫৩টি সেতু এবং ৭৬টি কালভার্ট এবং ১১টি আন্ডারপাস নির্মাণ করার কথা।
এর মধ্যে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি সেতু, চারটি উড়ালসড়ক, দুটি রেলওয়ে ওভারপাস, ১১টি আন্ডারপাস এবং ৭২টি কালভার্ট নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সরকারের সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। এতে অর্থায়ন করছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এবং আবুধাবি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট।