বিসিএসে প্রশাসনে নিয়োগ পেয়েছেন ২৬০ জন প্রকৌশলী

প্রকাশের সময় : 2022-02-23 12:31:23 | প্রকাশক : Administration
বিসিএসে প্রশাসনে নিয়োগ পেয়েছেন ২৬০ জন প্রকৌশলী

মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান: বাংলাদেশের ৩৮ তম বিসিএস; বুয়েট- ৮২ জন, কুয়েট ৬৪ জন, রুয়েট ৫৯ জন ও চুয়েট ৫৫ জন প্রশাসন ক্যাডারে চাকরিতে প্রবেশ করেছেন। এঁরা সবাই দেশের প্রথম সারির প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি না করে আমলা হলেন। তাদেরকে প্রকৌশলী বানাতে সরকারের খরচ হয়েছে ১৫-২০ লক্ষ টাকা। আর আমলা বানানোর পড়ালেখার জন্য সমাজ বিজ্ঞান পড়তে হয়, যা পড়াতে খরচ হয় মাত্র ২-৩ লক্ষ টাকা। এত বেশি টাকা খরচ করে বিশেষায়িত পড়া পড়িয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগানো জাতির জন্য ভালো লক্ষণ না।

ইঞ্জিনিয়ারগণ একটা দেশের সফলতার বড় শক্তি, ইঞ্জিনিয়ার মানেই দক্ষ দেশ ও দক্ষ জনশক্তি গঠনের প্রধান চালিকাশক্তি। যেই দেশে যত দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার, সেই দেশ ঠিক ততটাই সফল এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ।

” চীনকে কে উন্নত এবং ধনী করেছে?

সেই দেশের ইঞ্জিনিয়ারগণ।

” জাপানকে কে উন্নত এবং ধনী করেছে?

সেই দেশের ইঞ্জিনিয়ারগণ।

” তাইওয়ানকে কে উন্নত এবং ধনী করেছে?

সেই দেশের ইঞ্জিনিয়ারগণ।

” হংকংকে কে উন্নত এবং ধনী করেছে?

সেই দেশের ইঞ্জিনিয়ারগণ।

” সিঙ্গাপুরকে কে উন্নত এবং ধনী করেছে?

সেই দেশের ইঞ্জিনিয়ারগণ।

” দক্ষিণ কোরিয়াকে কে উন্নত এবং ধনী করেছে?

সেই দেশের ইঞ্জিনিয়ারগণ ।

” মালয়েশিয়াকে কে উন্নত এবং ধনী করেছে?

সেই দেশের ইঞ্জিনিয়ারগণ।

এমনকি ভারতের তামিল নাড়ু কর্ণাটক প্রদেশকেও উন্নত এবং এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান সেই দেশের ইঞ্জিনিয়ারগণের।

পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি (লোক সংখ্যার দিক দিয়ে) ইঞ্জিনিয়ার চীনে। অর্থাৎ পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইঞ্জিনিয়ার চীনে।

ফলাফল: পৃথিবীর মধ্যে এক নম্বর স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ চীন। পৃথিবীর মধ্যে জনসংখ্যার (%) হারের দিক দিয়ে বেশি ইঞ্জিনিয়ার জাপানে, জাপানের প্রতি ২০ জনের একজন ইঞ্জিনিয়ার।

ফলাফল: পৃথিবীর প্রথম সারির স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশগুলোর একটি জাপান। তাছাড়া পৃথিবীর প্রথম সারির উন্নত এবং ধনী দেশগুলোর একটিও তারা। কিন্তু আমাদের দেশের ইঞ্জিনিয়ারগণ আর ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় না, তারা চায় আমলা হতে।

তারা ইঞ্জিনিয়ার হয়ে কোথায় বাংলাদেশকে ওই চীন, জাপান, তাইওয়ান, হংকং, সিঙ্গাপুর, কোরিয়া, মালয়েশিয়ার মত এগিয়ে নেবে, তা না করে আমাদের ইঞ্জিনিয়ারগণ আমলা হয়ে ধনী হয়ে তারপরে অবসর নিয়ে শেষ-মেষ কানাডা, লন্ডনে চলে যাবেন।

তারা অধিকাংশই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে আমলা হতে চায়, কিন্ত ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় না! এ যেন ব্রেইন ড্রেনেজ। নেপোলিয়ন যদি এখন বেঁচে থাকতেন তাহলে তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখে বলতেন আমাকে একটা বিসিএস দাও, আমি তোমাকে একটা ধ্বজভঙ্গ আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতিবাজ দেশ এবং জাতি দেব। এই দেশে, বিদেশ থেকে গ্রাজুয়েশন এবং পিএইচডি করা ৪/৫ বছর অভিজ্ঞতা থাকা সম্পূর্ণ মানুষের চেয়ে অনার্স পাশ করে ২ বছর ধরে মুখস্ত বিদ্যায় পারদর্শী বিসিএস পাশ করা ব্যক্তির সম্মান বেশি। তারাই দেশের বড় বড় আমলা এবং রাঘববোয়াল।

সেজন্য এই দেশের অধিকাংশ ইঞ্জিনিয়াররা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় না, তারা বই মুখস্ত করে আমলা হতে চায়। আজ আমরা একটা পরনির্ভরশীল জাতি। ৯২% পণ্যই বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। সামান্য একটা হাইওয়ে রাস্তা করতে বিদেশিদের সাহায্য নিতে হয়। একটা উন্নতমানের ভালো বিল্ডিং, কালভার্ট, ব্রীজ এর এ্যালিভেশন নকশা আর্কিটেকচার করতে বিদেশিদের সাহায্য নিতে হয়। মাটি পরীক্ষা করতে, পানি পরীক্ষা করতে আমরা বিদেশিদের কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাতি। কারণ, আমরা দিন শেষে মুখস্ত বিদ্যায় বিসিএস পাশ করা জাতি। আমরা বিসিএস জাতি।

আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে আমলা হতে চাওয়া বিসিএস ধারী জাতি। হ্যাঁ, আমরা বিসিএস পাশ করা আমলাতন্ত্র নির্ভর জাতি।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com