শিক্ষার উন্নয়নে প্রশংসায় দ্য ইকনোমিস্ট

প্রকাশের সময় : 2022-03-23 09:54:15 | প্রকাশক : Administration
শিক্ষার উন্নয়নে প্রশংসায় দ্য ইকনোমিস্ট

সালেহ্ বিপ্লব: তোতাপাখির মতো মুখস্থ বুলি নয়, প্রকৃত শিক্ষা নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ। বাচ্চাদের স্কুলে নেওয়ার ব্যাপারে দেশটি অভাবনীয় উন্নতি করেছে। চার দশক আগেও শিশুদের তিন ভাগের এক ভাগও প্রাইমারি পার করতো না। এখন ৮০ ভাগ শিশু প্রাইমারি পাস করে। কোভিড মহামারীর আগে স্কুলে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের উপস্থিতি ছিলো বেশি, ভারত ও পাকিস্তানের চিত্র ঠিক উল্টো।

‘বাংলাদেশ ইজ মেকিং অ্যা সিরিয়াস অ্যাটেম্পট টু ইমপ্র“ভ ইটস স্কুলস’শীর্ষক প্রতিবেদনে দ্য ইকনোমিস্ট বলেছে, শিক্ষার মানোন্নয়ন এখন অনেক কৌশলপূর্ণ। তবে মহামারী অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের পথরুদ্ধ করতে পারেনি। ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশটি। প্রবৃদ্ধির মূল দুই খাত রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প ও রেমিট্যান্স তরতর করে বেড়েছে। যদিও বাংলাদেশের অনেক প্রবাসী শ্রমিক কম দক্ষতার কারণে কম মজুরি পায়। এমনকি প্রতিবেশী ভারত থেকে আসা শ্রমিকদের চেয়ে বেতন কম তাদের। অন্যদিকে গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের প্রতিদ্বন্দী চীনা শ্রমিকদের চেয়ে কম বেতন পায়। টেকসই উন্নয়নের জন্য সস্তা দরের শ্রমিককে দক্ষ করে তোলার বিকল্প নেই।

আর সেই দক্ষতা সৃষ্টির সময় এখনই। আর এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার কর্মমুখী শিক্ষার যুগোপযোগী কারিকুলাম প্রণয়ন করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন হবে। শিক্ষার্থীদের মুখস্থ করে পরীক্ষায় বসার প্রবণতা থেকে বের করে আনা হবে। পরীক্ষা পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। শিক্ষার নতুন যে কারিকুলামের কথা বলা হচ্ছে, তা অনেক গবেষণার ফসল।

নিয়োগকারী ও চাকরিপ্রার্থীর কথা বিবেচনা করে এটি প্রণয়ন করা হয়েছে। শিক্ষার সঙ্গে পেশার যে অমিল এখন ব্যাপক প্রচলিত, তা আর থাকবে না। হাইস্কুলে কারিগরী শিক্ষা নিতেই হবে। কাঠের কাজ, গ্রাফিক ডিজাইন, কার মেকানিক, শিশুর যত্ন কিংবা কাঠমিস্ত্রী- এমন বিষয়গুলো থেকে যে কোনো দুটো সাবজেক্ট নিতে হবে। এতে করে শিক্ষার্থীরা স্কুলের গন্ডি পার হতে হতে অর্থনৈতিক কাজে যুক্ত হতে পারবে।

সরকার আরো বেশি কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী। শিক্ষায় এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্ট অনেকে। তবে কেউ কেউ পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন এমন উদ্যোগে। শিক্ষকদের স্বল্প বেতন, প্রশিক্ষণের অভাব এবং ছাত্র: শিক্ষক অনুপাত এসব সমস্যার সমাধান না করে শুধু নতুন কারিকুলাম দিয়ে কি কিছু হবে? শিক্ষা খাতে দুর্নীতিও একটা সমস্যা।

গ্রামে নিয়োগ পেলে শিক্ষকরা যেতে চান না। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল মতে, নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব ও ঘুষ কাজ করে। ভালো স্কুলের হেড মাস্টার পদে পোস্টিং পেতে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। শিক্ষাখাতে উন্নতি করতে চাইলে বরাদ্দের বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশ শিক্ষাখাতে জিডিপির হিসেবে অনেক কম বরাদ্দ দেয়।

ইউনেস্কো যেখানে ৪ থেকে ৬ শতাংশ বরাদ্দ করতে বলে, সেখানে বাংলাদেশ জিডিপির ২ শতাংশের মতো বরাদ্দ দেয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেও শিক্ষার বাজেট বরাদ্দ হয়। সবগুলো যোগ করলে তা নেহায়েত কমও নয়। এসব কারণেই এতোদিন যাবত নেয়া বিভিন্ন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এখন যে সংস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তা খুবই ভালো, তবে যদি বাস্তবায়ন করা হয়।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com