কেঁচো সার উদ্ভাবন করে ভাগ্য পরিবর্তন মোস্তাকের
প্রকাশের সময় : 2022-03-23 10:08:21 | প্রকাশক : Administration
আল আমীন: সার উৎপাদনের পাশাপাশি উদ্যোক্তা তৈরির প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন অনেকেই। ময়মনসিংহ সদরের ঘাগড়া ইউনিয়নের দারিয়াকান্দা গ্রামের নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় তৈরি করছেন কেঁচো সার।
এ সার ছাদ বাগান, সবজি অথবা ফুল গাছ সহ নানা ফসল বা সবজি বাগানে ব্যবহার বেড়েছে। বিষমুক্ত ফলন উৎপাদনই লক্ষ বাস্তবায়নে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে উদ্যোক্তা মোস্তাক। কিন্তু বছর খানেক ধরে তার সবজির ফলন মিলছে বেশ। আর বাগানের ফুলও শোভিত করছে ছাদকে।
বাদল হায়দারের ছাদ বাগানের এমন পরিবর্তনের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, বছর খানেক ধরে ভার্মিটেক (কেঁচো সার) ব্যবহার করছেন তিনি। কৃষিকে স্বনির্ভর করতে এ উদ্যোগ। আর এর জোগান দিচ্ছেন কোম্পানি ভার্মিটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান এর স্বত্বাধিকারী হলেন মোস্তাক আহমেদ। জানা গেছে, মাত্র বছর ছয়েক বয়স হলেও এই প্রতিষ্ঠানটিতে এখন কেঁচোর সংখ্যা ১০ লাখ। আর এই ১০ লাখ কেঁচো থেকে মাসিক সার উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৬ টনের মতো যা বছরে ৭২ টন।
২০১১ সালে মাত্র ৩ হাজার কেঁচো নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল এই প্রতিষ্ঠানটি। শুধু উৎপাদন নয়; বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের বেড়েছে জমির পরিধিও। দুই শতক জমির ওপর এই ব্যবসা শুরু করে এখন ঠেকেছে ১৫ শতকে। আর পুঁজি হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ টাকার মতো। এতে করে মাত্র ১০ বছরেই নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। কোম্পানি ভার্মিটেকের পরিচালক মোস্তাক আহমেদ জানান মাটির মা হলো কেঁচো সার। এ সার মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে ফলন দেয় ভালো।
সরেজমিনে ময়মনসিংহ শহরতলির বেলতলী এলাকায় গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, সার উৎপাদনের পাশাপাশি তিনি প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন শতাধিকজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে। এমনকি তাদের বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে কেঁচো। যা দিয়ে ইতিমধ্যে তারা বিষমুক্ত সার উৎপাদনও করছেন বলে জানিয়েছেন রাকিব নামের এক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা।
রাকিব বলেন, কোম্পানি এগ্রোটেক থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। সেই সঙ্গে আমাদের নিজস্ব জমিতে এই কেঁচো সার নিয়ে চাষও করছি। এতে করে এখন আমরাও স্বাবলম্বী হচ্ছি। কোম্পানি এগ্রোটেকের স্বত্বাধিকারী মোস্তাক আহমেদ বলেন, এ এলাকার কৃষকরা এখন আমার উৎপাদন করা সার ব্যবহার করছেন। এতে করে তাদের ফলন যেমন ভালো হচ্ছে তেমনি টাকাও সাশ্রয় হচ্ছে।
ময়মনসিংহের সীমা পেরিয়ে বগুড়া এবং রংপুর, সিলেট, ছাতক, নোয়াখালি, চট্টগ্রাম সহ দেশের নানা প্রান্তে সারের চালান পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে আমি আর্থিকভাবে এখন বেশ লাভবান। এ ছাড়াও বিষমুক্ত সবজি প্রকল্পের জন্য ময়মনসিংহ সদর উপজেলা অফিসে কয়েক ধাপে দুই থেকে ৩ টন সার দেওয়া হয়েছে।
নগরীতে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য যেসব গাছ লাগানো হয়েছে সেখানেও এই কেঁচো সার ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদিত কেঁচো সার পরীক্ষা করিয়েছি। যেখানে শতভাগ বিশুদ্ধতার প্রমাণপত্র পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিষমুক্ত শাক-সবজি ফলনে মানুষকে যুক্ত করা এবং আন্দোলনে সহযোগিতা করা। সেই সঙ্গে ইট-কাঠের এই নগরীর প্রতিটি ছাদ ও বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে উঠুক বাগান ও কৃষিকে সম্প্রসারণ করা। কৃষি ও ব্যাংক প্রনোদনাসহ সরকারি সহায়তা পেলে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার তাহমিনা ইয়াসমিন বলেন সার উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছি। পরামর্শ সহ বাণিজ্যিক পর্যায়ে নিতে কৃষকদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। - ফেসবুক থেকে