ফাতেমার কারখানায় কাজ করেন ১২০ জন

প্রকাশের সময় : 2022-03-23 10:10:05 | প্রকাশক : Administration
ফাতেমার কারখানায় কাজ করেন ১২০ জন

আকরামুল ইসলাম: অভাবের সংসার ছিল তার। স্বামী মাছের ব্যবসা করতেন। কোনো রকমে দিন পার হতো। তবে এখন আর অভাব নেই। ফাতেমা বেগম ১২০ জন অভাবি মানুষকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলেছেন। চেষ্টা আর পরিশ্রম করলে ভাগ্যটাকে পরিবর্তন করা সম্ভব। স্বামী আবু সাইদকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন এই নারী।

তবে হস্তশিল্পের মাধ্যমে নিজেকে নতুনরূপে মেলে ধরেছেন সমাজে। এখন তিনি সফল ব্যবসায়ী। ৮০ জন পরুষ ও ৪০ জন নারী কাজ করেন তার হ্যান্ডিক্রাফট ফ্যাক্টরিতে। কুড়েঘর থেকে নির্মাণ করেছেন বিলাসবহুল বাড়িও। সফল এই নারী উদ্যোক্তা ফাতেমা বেগম বলেন, ছোটবেলা থেকে আমার হাতের কাজের প্রতি ঝোঁক ছিল। ১৯৯২ সালে বাড়িতে স্বল্প পরিসরে মাত্র চার হাজার টাকা দিয়ে হ্যান্ডিক্রাফটের কাজ শুরু করেন তিনি। বর্তমানে ৫০ লাখ টাকা পুঁজি রয়েছে তার। হ্যান্ডিক্রাফটের ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছেন জমি ক্রয় করে। সেখানেই শ্রমিকরা কাজ করেন। গ্রামের অসহায় নারী ও পুরুষদের প্রথমদিকে হাতে  কলমে শিখিয়ে এখন স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলেছেন তিনি।

তারা নিজেরাই এখন প্রতি মাসে অনেক টাকা রোজগার করেন। পুরুষরা তার ওখান থেকে প্রতিমাসে ২০-২৫ হাজার টাকা বেতন পান আর নারীরা পান ৮-১০ হাজার টাকা। নারীরা একটু কম পাওয়ার কারণ হচ্ছে, বাড়ির কাজ শেষ করে তারা ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। ফলে তাদের প্রডাকশন কম হয়। প্রডাকশন হারে বেতন পান শ্রমিকরা।

দুঃসময়ের কথা মনে করে ফাতেমা বেগম বলেন, ২০১২ সালে স্বামী মারা গেলেন। ছেলে সাকিব হাসান টুটুল ও মেয়ে ফারহানা ফেরদৌস নেহাকে নিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। সে সময়ে কোনো নিকটজনদের সহযোগিতা আমি পাইনি। তবে আমার ব্যবসাটি আগে ছোট পরিসরে থাকলেও স্বামী মারা যাওয়ার পর বড় পরিসরে শুরু করি। তারপর থেকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি।

বর্তমানে শ্রমিকদের বেতন দেয়ার পরও প্রতিমাসে ৪৫-৫০ হাজার টাকা ব্যবসায় লাভ হয়। ঢাকা থেকে কাপড় ক্রয় করে ফ্যাক্টরিতে হ্যান্ডিক্রাফট (হাতের কাজ) করার পর থ্রী পিস, গাউন, সারারা, পাঞ্জাবি, শাড়ি তৈরি করেন। সেগুলো তার কাছ থেকে ঢাকার বসুন্ধরা, গাউসিয়া, ধানমন্ডি এলাকার ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে নিয়ে যান।

এখন সুখে আছেন ফাতেমা বেগম। ছেলেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে দিয়েছেন তিনি। মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। নিজের বাড়ি তৈরি হচ্ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি ধরে রাখা ছাড়া তার আর নতুন কিছু চাওয়ার নেই। সমাজে অবহেলিত ও অলস সময় পার করা নারীদের উদ্দেশ্যে ফাতেমা বেগম বলেন, “আমার মতো নারীরা বাড়িতে বসে না থেকে সবাই কাজে এগিয়ে আসুন।”

অভাবের কারণে অনেক সময় নারীদের নির্যাতিত হতে হয়। অলস সময় পার না করে উদ্যোগী হয়ে যেকোনো কাজ শুরু করুন, পরিশ্রম করুন সফলতা আসবেই। হাতের কাজ করে প্রতি মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা রোজগার করা খুব সহজ। ফাতেমা বেগমের এখান থেকে কাজ শিখে এখন অনেকেই বাড়িতে বসে কাজ করে মাসে অনেক টাকা আয় করছেন।

ফাতেমা বেগমের এই উদ্যেগের কারণে গ্রামে মহিলাদের আয়ের সুযোগ হচ্ছে। তারা আয় করছেন, কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। ফাতেমা বেগম পরিশ্রম করে সফল হয়েছেন। ১২০ জন নারী-পুরুষকে স্বাবলম্বী করেছেন। যেটি অন্য যেকোনো উদ্যোগী নারীদের জন্য অনুকরণীয় একটি বিষয়। - সূত্র: অনলাইন

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com