করোনা টিকায় সাফল্যের দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ
প্রকাশের সময় : 2022-04-20 11:02:26 | প্রকাশক : Administration
করোনার টিকাদানে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে শূন্য থেকে শুরু করা অভিযানে আসতে যাচ্ছে চূড়ান্ত সাফল্য। নির্ধারিত সময়ের আগেই লক্ষ্যপূরণ হওয়ায় কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে ১ম ডোজের টিকাদান কর্মসূচী। এবার শেষ হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় ডোজের টিকাদানও। দেশজুড়ে শুরু হওয়া ২য় ডোজের গণটিকা ক্যাম্পেনের মাধ্যমে লক্ষ্যপূরণ হয়ে যাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এতে করোনা প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচীতে বিশ্বজুড়ে অন্যতম উদাহরণ স্থাপন করতে যাচ্ছে দেশ। স্বাস্থ্য অধিদফতর তথ্যানুযায়ী ২৭ মার্চ পর্যন্ত দেশজুড়ে ১ম ডোজের টিকা পেয়েছেন ১২ কোটি ৬৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭১৮ মানুষ। একই সময়ে দ্বিতীয় ডোজের টিকার আওতায় এসেছেন ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৭১ হাজার ১৬৯ জন। আর বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে ৭ লাখ ৭৮ হাজার ৭৬৭ জনকে। সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দেশে ইতোমধ্যে ১ম ডোজের টিকা পেয়েছেন সাড়ে ১২ কোটির ওপর মানুষ। চলমান ২য় ডোজের বিশেষ ক্যাম্পেনের মাধ্যমে দ্বিতীয় ডোজের টিকাদানেও লক্ষ্যপূরণের আশা রয়েছে। ১৮ বছর বা এর বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর যাদের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের পর চার মাস অতিবাহিত হয়েছে তারা এসএমএস না পেলেও কেন্দ্রে আসলে বুস্টার ডোজ গ্রহণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সম্মুখসারির যোদ্ধা, বয়োজ্যেষ্ঠ ও নারীদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। প্রাপ্যতা অনুযায়ী এ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার বা মডার্নার ভ্যাকসিন বুস্টার ডোজ হিসেবে দেয়া হচ্ছে। ১২ বছর বা এর বেশি জনগোষ্ঠী, যাদের প্রথম ডোজ গ্রহণের পর ২৮ দিন অতিবাহিত হয়েছে তাদের দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা হবে। শুধু এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাপ্রাপ্তদের ১ম ডোজ গ্রহণের দুই মাস পর দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়া হবে।
এছাড়া, ১২ বছর বা এর বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী যারা এখনও ১ম ডোজের টিকা গ্রহণ করেননি তাদের এ বিশেষ ক্যাম্পেন চলাকালে ১ম ডোজ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। ১ম ডোজের বিশেষ টিকাদান ক্যাম্পেনে সারাদেশে ২৮ হাজার ৫৬৯টি কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কাজ করেন ১ কোটি ৪২ লাখ ৭০০ স্বাস্থ্যকর্মী। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে কার্যক্রম চলে সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে না আসা পর্যন্ত।
দেশের সব ইউনিয়নে টিকা দেয়া হবে, মানুষকে কেন্দ্রের নাম ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়। ভোটার আইডি কার্ড, জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়ে গেলেই টিকা পাওয়া যায়। যাদের ভোটার আইডি কার্ড, জন্মনিবন্ধন নেই, তারা নিজের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর দিয়েও টিকা নেন। মোবাইল না থাকলে তার নাম-ঠিকানা নিয়ে টিকা দেয়া হয়। এক্ষেত্রে একটি তালিকা ধরে নাম লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়।
পরে প্রয়োজন মতো ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় সনদ নেয়া যায়। আলস্য হোক বা অন্য কোন কারণেই হোক এখনও লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দেড় কোটি মানুষ টিকা নেয়নি। লক্ষ্যমাত্রা দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার। ২৮ থেকে ৩০ মার্চ তারিখের মধ্যে বাকি দেড় কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হয়। কেউই টিকার আওতার বাইরে থাকবে না। এরপর বুস্টার ডোজের ওপর জোর দেয়া হবে।
যারা এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজের টিকা নেননি তারা এই বিশেষ ক্যাম্পেনে টিকা নিতে কেন্দ্রে আসুন। নিজে সুস্থ থাকুন এবং প্রিয়জনকে সুস্থ রাখুন। এদিকে প্রথম ডোজের মতো দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান কর্মসূচীও শেষ হচ্ছে এমন খবরে টিকাকেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপচেপড়া ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। কোন কোন কেন্দ্রে দৈনিক ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষও টিকা নিচ্ছে। টিকাগ্রহীতাদের ভিড় সামলাতে যতক্ষণ কেন্দ্রে মানুষ থাকবে ততক্ষণ টিকা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। - সূত্র: অনলাইন