পর্যটকদের উপর ইজারাদারদের নির্মম হামলায় আমি হতভম্ব

প্রকাশের সময় : 2022-05-11 15:15:18 | প্রকাশক : Administration
পর্যটকদের উপর ইজারাদারদের নির্মম হামলায় আমি হতভম্ব

আরিফ জেবতিক: জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর ইজারাদারদের নির্মম হামলায় আমি হতভম্ব হয়ে বসে আছি। প্রকাশ্য দিবালোকে পর্যটক একজন নারীর উপর লাফিয়ে লাফিয়ে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে, এই দৃশ্য দেখলে হার্টবিট বেড়ে যায়। যে কোন ঘটনা ঘটার পরে সেটির ভিডিও যদি ভাইরাল হয়, তাহলে পুলিশ দুয়েকটা গ্রেফতার করে; এখানেও তাই হয়েছে। কিন্তু কেন হামলাকারীদের বাকিদের গ্রেফতার করা হবে না, কেন ইজারাদারের ইজারা বাতিল করা হবে না, এই বিষয়ে সিলেটের প্রশাসনকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

বাংলাদেশের চরম দূর্ভাগ্য যে এই ছবির মতো দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশের দায়িত্ব যাদেরকে দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশকেই আমার ছাগল মনে হয়। বাকি ১০ শতাংশ ছাগল নয়, এরা শীর্ষে বসে থাকা রামপাঠা। এই রামপাঠা গোষ্ঠি জীবনেও তাদের ছাত্রজীবনে কোথাও ঘুরতে যায় নি, বেড়ানো নিয়ে কোনো প্যাশন নেই, দুনিয়ার পর্যটন শিল্প কীভাবে চলে সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র কোনো আইডিয়া নেই।

তৃণমূল প্রশাসনের নব্য ডাকাত শ্রেণীর এই গর্দভগুলো একমাত্র যা বুঝেছে সেটি হচ্ছে দেশের সুন্দর সুন্দর জায়গাগুলোতে ইজারাদার বসিয়ে দেয়া। গত ডিসেম্বরে সিলেট গিয়েছি। মেয়েদেরকে বললাম, আসো, একটা সুন্দর জায়গা দেখিয়ে আনি। নিয়ে গেলাম এমসি কলেজের পেছনের আলুর তল বলে যে সংরক্ষিত বন আছে সেখানে। চারপাশে টিলা ঘেরা এই বনের মাঝখান দিয়ে একটা সুন্দর পিচঢালা পথ গেছে। আমরা এমসি কলেজে যখন পড়তাম, তখন সেখানে ঘুরতে যেতাম। বাঁদর ছিল, অন্যান্য বন্য প্রাণীও দেখা যেত। নিঝুম একটা বন। টুকটাক কয়েকটা সিমেন্টের বেঞ্চি বসানো ছিল, বসে বসে আড্ডা মারা যেত।

তো এবার গিয়ে দেখি, সেই বনের সামনে একটা বিশাল রংচংয়ে গেট লাগানো হয়েছে, এক ইজারাদার বসে আছে। টিকিট কেটে বনে ঢুকতে হবে। টিকিট কাটতে আপত্তি ছিল না, কিন্তু যেভাবে লাল নীল হলুদ রং করে চারপাশকে নোংরা দেয়াল আর হাবিজাবি দিয়ে ভরিয়ে দেয়া হয়েছে, সেখানে বনের কোনো স্নিগ্ধতাই আর নেই। বমি আসছিল দেখে।

এই জাফলংয়ে আমরা ছোটবেলা থেকে অসংখ্যবার গিয়েছি, এসব এলাকায় দশকের পর দশক পর্যটক গিয়েছে, কোনোদিন ইজারাদারদেরকে টাকা দিতে হয় নি, এখন কেন দিতে হবে? এত খাইখাই কেন সরকারের? এই বানানো, এসএস এর রেলিং লাগিয়ে সৌন্দর্য ধ্বংস করা- এসব হচ্ছে গবেটদের দৃষ্টিতে উন্নয়ন। বিভিন্ন বনে জঙলে দেখবেন বড় বড় করে ওয়াচ টাওয়ার বানিয়ে তালা মেরে রেখে দিয়েছে। সরকারি টাকা খাবি, অন্যখানে খা; জঙ্গল ধ্বংস করে কেন!

নিজে কোনোদিন একটা ভালো বাথরুমে যায় নাই বলে একটা বাথরুম কীভাবে ডিজাইন করতে হয়, সেই ধারণাই এদের নেই। কন্ট্রাক্টর লাগিয়ে যেসব বাথরুম বানায় সেগুলোর না আছে ব্যবহার উপযোগীতা, না আছে ডিজাইন। আর ইজারাদার ঠিকাদার বসিয়ে চাঁদাবাজির নতুন খাত তৈরি করা আর মানুষকে হয়রানি করা ছাড়া কোনো কাজই হচ্ছে না।

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ আসলে এসব মাথামোটা কাঠ বলদদের হাত দিয়ে কোনদিনই সম্ভব হবে না। কিন্তু সবচাইতে বড় কষ্টের কথা যে আমাদের পরের প্রজন্ম এগুলোকে ঠিকঠাক করারও কোনো সুযোগ পাবে না। এর আগেই আমরা পুরো প্রকৃতি ধ্বংস করে দেব এসব কাঠ বদল 'স্যার'দের ক্রিয়েটিভিটির পরীক্ষা নিরীক্ষায়। মাঝে মাঝে এতো কষ্ট লাগে...

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com