৫০ টাকা ধার করে বাড়ি ছাড়ার গল্প

প্রকাশের সময় : 2022-05-28 09:35:52 | প্রকাশক : Administration
৫০ টাকা ধার করে বাড়ি ছাড়ার গল্প

আলী হোসেন আরিফের গল্পটা রূপকথার মতোই। সততা আর পরিশ্রম যে মানুষকে বিমুখ করে না, এর এক প্রমাণ তিনি। ১৮ বছর আগে এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে মাত্র ৫০ টাকা ধার নিয়ে ঘর ছেড়েছিলেন, আর এখন একজন সফল ফল ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক। কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা তাঁর।

আলী হোসেন এখন বন্দরনগরী চট্টগ্রাম নগরের ‘ফলমুন্ডি’খ্যাত স্টেশন রোডের প্রথম সারির ফল ব্যবসায়ীদের একজন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স তৈয়বীয়া ফার্ম। আলী হোসেনের বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়নের ভরাচর গ্রামে। পিতার নাম নাছির আহমেদ, মাতা সমুদা খাতুন। পরিবারের ৫ বোন ও ৪ ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তাঁর জন্ম ১৯৮৪ সালে। আলী হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল তাঁর সংগ্রাম আর সফলতার গল্প। ২০০০ সালের ঘটনা। তখন আলী হোসেন পড়ালেখা করতেন পটিয়া উপজেলার সাইদাইর এলাকার একটি মাদ্রাসায়, দশম শ্রেণিতে। একদিন মাদ্রাসা ছুটি হলে ঘরে ফিরে দেখলেন, পরিবারে আর্থিক টানাপোড়েনের নানা ছাপ। বিষণ্ণ মন নিয়ে তখনই সিদ্ধান্ত নেন, মা-বাবাকে সাহায্য করতে হবে। কিন্তু পকেটে ছিল না কোনো টাকা। পাশের ওয়ায়েস করোনি নামের এক প্রতিবেশীর  কাছ থেকে ৫০ টাকা ধার করে চলে আসেন চট্টগ্রাম শহরে। সেখানে শাহ আমানত সেতুর উত্তর পাশে একটি ফলের দোকানে চাকরি নেন আলী হোসেন। চাকরিতে সপ্তাহে মজুরি ছিল ২০০ টাকা। সেখানে এক মাস চাকরি করলেন। পরে নগরেরই অলংকার মোড়ের আরেক দোকানে চাকরি নিলেন। সেখানে বেতন ছিল মাসে তিন হাজার টাকা। ওই দোকানে আলী হোসেন চাকরি করলেন দুই বছর।

এবার ঠিক করলেন, আর চাকরি নয়, এবার ব্যবসা করতে হবে। কিন্তু দোকান দেওয়ার সামর্থ্য নেই। ২০০৩ সালে নগরের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকায় আরেকজনের সঙ্গে ভাগে ভাসমান দোকান দেন। দোকানের প্রাথমিক মূলধন সাড়ে সাত হাজার টাকার পুরোটাই দেন তার সেই অংশীদার। মূলধন না থাকায় কেবল পরিশ্রম ছিল আলী হোসেন আরিফের। সেখান থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে।

২০১০ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যেই বহদ্দারহাট এলাকায় আলী হোসেনের মালিকানায় চলে আসে ১১টি ফলের দোকান। একেকটি দোকানের মূলধন ছিল ৮০ হাজার টাকার মতো। এরপর আলী হোসেনের ব্যবসার পরিসর আরও বেড়েছে। নগরের স্টেশন রোডে ১০ লাখ টাকা জামানত দিয়ে একটি দোকান ভাড়া নিয়েছিলেন ২০১০ সালেই। এক বছর পরে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা দিয়ে সেই দোকান কিনে নেন। এখন তার দোকানের সংখ্যা আরও বেড়েছে। ভাইয়েরা তাকে সহায়তা করেন। নগরের বহদ্দারহাটেও আরেকটি দোকান কিনেছেন তিনি।

আলী হোসেন জানালেন, চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৬০০ কার্টুন ভর্তি বিভিন্ন ফল খালাস হয়, যার মূল্য আনুমানিক ৭০ লাখ টাকা। এগুলো দোকানে আসার পর গাড়িতে করে ঢাকা, গাজীপুর, ফেনী, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান। তিনি আরও বললেন, ‘আমরা সময়মতো সরকারের কর পরিশোধ করে থাকি। আর দোকানের কর্মচারীদের মূল্যায়ন করি বেশি। কারণ, তাঁদের হাত ধরেই আমার ব্যবসায়িক সফলতা।’সব শেষে আলী হোসেন বললেন, ‘মেধা ও সততার পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রম করলে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না।’ - সূত্র: অনলাইন

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com