যাতায়াতে সময় বাঁচবে, বাড়বে গতি

প্রকাশের সময় : 2022-10-13 16:11:14 | প্রকাশক : Administration
যাতায়াতে সময় বাঁচবে, বাড়বে গতি

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল: পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক প্রশস্ত ও দোতলাকরণ প্রকল্প বদলে দেবে মুন্সীগঞ্জের সড়ক নেটওয়ার্ক। পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক আধুনিকায়ন হলে যাতায়াতে সময় কমবে অর্ধেকের বেশি আর যানবাহনের গতি বাড়বে প্রায় ৫ গুণ। যানজট কমাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গার আদলে করা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি মোড়। পঞ্চবটি-মুক্তারপুর বর্তমান সরু সড়কের গড় প্রশস্ততা মাত্র সাড়ে ৫ মিটার।

মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের প্রধান এই সড়কের গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলছে। মুক্তারপুরে সিমেন্ট কারখানা, হিমাগারসহ ভারি ভারি শিল্প কারখানায় ২৪ থেকে ৫০ মেট্রিক টন ওজনের যান চলাচল করে। কিন্তু আঁকাবাঁকা সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আর যানজট তো লেগেই থাকে।

এ অবস্থায় পুরো সড়কের চেহারা বদলে দিতে নেয়া হয়েছে আধুনিকায়ন প্রকল্প। ১০ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে ২ দশমিক ৮০৫ কিলোমিটার র‌্যামসহ দোতলা হবে ৯ দশমিক ০৬ কিলোমিটার। পঞ্চবটি মোড় হবে ভাঙ্গার আদলে। পঞ্চবটিকে কেন্দ্র করে সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত হয়ে ৩১০ মিটার করে ফতুল্লা ও নারায়ণগঞ্জ দুই দিকে প্রসারিত হবে। আর শীতলক্ষ্যা-৩ সেতু পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার পথ দোতলা হবে দুই লেনে।

সঙ্গে পুরনো সড়কটি উন্নীত হবে দুই লেনে। আরেকটি গোলচত্বর হবে চর সৈয়দপুরের শীতলক্ষ্যা-৩ পয়েন্টে। এই গোল চত্বর থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার সড়ক হবে সরাসরি চার লেন। পাঁচটি ওজন স্কেল আর টোলপ্লাজা থাকবে চারটি। ২ হাজার ২শ’ ৪২ কোটি ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্যানডন ও সিএসআই তিন বছরের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ করবে।

গেল ২৯ মার্চ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যেই কাজ শুরুর কথা রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য মুন্সীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সমন্বয়সহ যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। আর চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটির কাজ শুরুর যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করেছে।

পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক আধুনিকায়ন হলে যাতায়াতে সময় কমবে অর্ধেকের বেশি আর যানবাহনের গতি বাড়বে প্রায় ৫ গুণ। প্রকল্প গবেষণায় এই বিষয়টিই উঠে এসেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এই সড়ক ভ্রমণে সময় হ্রাস পাবে ৬২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আর যানবাহনগুলোর গতি বেড়ে যাবে ৪ দশমিক ৪৫ গুণ। তাই এই সড়ক ব্যবহারকারীরা স্বাচ্ছন্দ্যে যেমন ঝামেলাহীন গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন আবার সময় কমে যাওয়ায় জ্বালানি অপচয়রোধ হবে।

শিল্প-কারখানাগুলোর কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত সহজ হবে এবং ব্যয় কমে যাবে। তাই এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক প্রশস্তকরণে রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ কমে যাবে। এই অঞ্চলের অনেকেই চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা পড়শোনার জন্য রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তারা নিজ এলাকায় বসবাস করেই রাজধানীতে অফিস করতে পারবেন। স্থানীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখা ছাড়াও গ্রামগুলোর গুরুত্ব বেড়ে যাবে।

মুন্সীগঞ্জ এবং আশপাশের কয়েক হাজার মানুষ এখন রাজধানীতে অবস্থান করছে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকার কারণে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে এখানে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থায়ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক প্রশস্তকরণে জমি প্রয়োজন ৫৬ দশমিক ৭৪৭৫ একর। তবে এরমধ্যে অধিগ্রহণ করতে হবে ৩৭ দশমিক ১১ একর।

যার মধ্যে মুন্সীগঞ্জ জেলায় ২ দশমিক ৯৭ একর এবং নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৩৪ দশমিক ১৪ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া সরকারী খাস সম্পত্তি রয়েছে ১৪ দশমকি ৮৫২৫ একর। পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক আধুনিকায়নে সড়কটি দৈর্ঘ্য হবে ১০ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে দোতলা সড়ক হবে ২ দশমিক ৮০৫ কিলোমিটার র‌্যাম্পসহ ৯ দশমিক ০৬ কিলোমিটার।

যানজট নিরসনে পঞ্চবটি মোড় থেকে ফতুল্লার দিকে ও নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ার দিকে ৩১০ মিটার করে ছয়লেন সড়ক হবে। পঞ্চবটি থেকে ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়ক হবে দোতলা। পঞ্চবটি হতে কাশিপুর পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার নিচ তলায় দুই লেন এবং দ্বিতীয় তলায় দুই লেন সড়ক থাকবে।

আর কাশিপুর থেকে পাশের লো-লেনের ওপর দিয়ে ২ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার দ্বিতল সড়ক পৌঁছবে চরসৈয়দপুরের শীতলক্ষ্যা-৩ সেতুর গোল চত্বর পর্যন্ত। এই অংশে পুরনো সড়কটিও উন্নীত হবে দুই লেনে। তাই পুরো সড়ক জুড়েই অন্তত চার লেন সুবিধা মিলবে। পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়কের আধুনিকায়ন হলেও টোল দিতে হবে দোতলা সড়ক ব্যবহারে।

নিচতলা সড়ক ব্যবহারে কোন টোল নেই। পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়কে এখন প্রতিদিন যান চলাচল করছে ১৭ হাজার ৯১০টি। ট্রাফিক পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২৩ সালে এই সংখ্যা হবে ২৩ হাজার ৯২০, এই সংখ্যা ২০২৫ সালে হবে ২৭ হাজার, ২০৩৩ সালে এই সড়কে চলবে ৩৯ হাজার যান আর ২০৪৩ সালে এই সড়কের যানবাহনের সংখ্যা হবে ৬৩ হাজার ৫৮০।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com