ইঞ্জিঃ সরদার মোঃ শাহীন
করোনা দিনের কষ্টগুলো হয়নি এখনো শেষ
কষ্টগুলো যায়নি মোছা রয়েছে যে তার রেশ।
লকডাউনের বদ্ধ জীবন, বদ্ধ রাস্তার গাড়ি
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে এবার বদ্ধ দুনিয়াদারী।
বিশ্বযুদ্ধ বাঁধার কথা ফিরছে কানে কানে
কে বা জানে পরাশক্তির কিইবা আছে মনে।
অভাগা আমার ছোট্ট খোকা, পায়নি কৈশোরী স্বাদ
জীবন থেকে তিনটি বছর কেমনে যেন বাদ!
ঘরে বসেই তিন বছরে তিনটি ক্লাস পাড়ি
বারো ক্লাস শেষ করলো থেকে নিজের বাড়ি।
অনলাইনে আড্ডা আর ঘরের কোনে জিম
সারাদিনই মাথায় ঘোরে ভবিষ্যতের থিম।
রেডিসনে জিম করে আর মাপে নিজের ভুড়ি
সময় পেলেই ডিয়াবাড়ি চালায় দারুন গাড়ি।
ঘুরে ঘুরে রেষ্টুরেন্টে সন্ধ্যা শেষে খায়
কী আর খাবে, সাধ্যমত যেখানে যা পায়।
বন্ধু বৎসল ছেলে আমার বন্ধু শোকে পাথর
বন্ধুবিনা তিনটি বছর শোনিম শাহীন কাতর।
অনলাইনে বিশ্বব্যাপী শত বন্ধুর মেলা
ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না, করা যায় না খেলা।
অনলাইনের বন্ধু বাছিল ওমান দেশে বাড়ি
মাকে নিয়ে দুবাই আসে, মা-ই চালায় গাড়ি।
দুই বন্ধুর মিলন মেলায় সাক্ষী ছিলাম মোরা
বন্ধু তো নয়, দেখতে যেন কবুতরের জোড়া!
দিনে দিনে বড় হচ্ছে মোদের ছোট্ট পাখি
পরাণ ভরে দেখি আমি মেলে দুটি আঁখি।
কলেজ পর্ব শেষে এবার ভার্সিটিতে যাবে
আল্লাহ মালুম ভালো সুযোগ কোন দেশেতে পাবে!
হাসি খুশির দোলায় ভেসে শোনিম সদা দোলে
মনে হয় যে এই তো সেদিন নিতাম তারে কোলে।
সেই শোনিম আজ মঞ্চ কাঁপায়, নেইকো কোন ভয়
উপস্থাপক শোনিম শাহীন, নতুন পরিচয়।
কীবোর্ড ছেড়ে গিটার বাজায় প্রিয় করুণ সুর
সুরে সুরে গানের তালে মাতাল হওয়া ঘোর।
গানের ডালা পাল তুলে নেয় মোদের স্বপনপুর
সুরের বাঁশী যায় যে ভেসে, দূর সে বহু দূর!
মিষ্টি গলার দরাজ কন্ঠ, সৃষ্টি গলার সুর
উপচে পড়ে সুরের মায়া, উপচে পড়ে নুর।
মানুষ প্রিয়, ভাল মনের দেশ বিদেশী মানুষ
দিবস ভেদে মধ্য রাতে ওড়ায় রঙিন ফানুষ।
সহজ সরল জীবন যাপন, সহজ সরল মন
অহংকারী করেনি তারে বিদ্যা, বুদ্ধি, ধন।
ধনী গরীব, ছোট বড় সবাই প্রিয়জন
সবার উপর মানুষ সত্য, এই হলো তার পণ!
দুঃখ শুধু সবাই ভাবে, শোনিম ছোট্ট খোকা
হয়ত শোনিম হয়নি বড়, হয়ত এখনও বোকা।
আব্বু ভাবুক আম্মু ভাবুক, সবাই কেন ভাবে!
একা একা বাইরে যাবার সুযোগ কবে পাবে!
বড় হবার সখ শোনিমের, কবে হবে বড়
শুধু শুধু তোমরা ওকে ছোট্ট মনে করো।
এখন কি আর ছোট্ট আছে, তোমরা সবাই বলো!
আঠারো বছর পূর্ণ করে সত্যি বড় হলো!!