সিমেক ফাউন্ডেশনের কিছু কথা

প্রকাশের সময় : 2023-02-01 15:07:05 | প্রকাশক : Administration
সিমেক ফাউন্ডেশনের কিছু কথা

আমি সাপ্তাহিক সিমেক পত্রিকার সাথে সম্পৃক্ত অনেক দিন। তারপরও কিছু লিখার সাহস হয়না। কারণ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সরদার মোঃ শাহীন ভাই যাঁর ইতোমধ্যে পাঁচটি বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি এত ভালো লিখেন যে তাঁর লেখা পড়ার পর পাঠকগণ আমার লেখা পড়ে জাস্ট বলবে ছন্দপতন। তারপরও বছরে একবার অন্তত লিখি। ফাউন্ডেশনকে ভালবাসি বলেই লিখি।

আমার খুব করে মনে পড়ে এই দিনটাকে।

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখ ফাউন্ডেশনের ঢাকাস্থ অফিসে একটি মিটিং এর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল সিমেক ফাউন্ডেশন এর যাত্রা। মূলত ধলা এবং এর আশপাশের এলাকার অবহেলিত মানুষের সহায়তা ও সেবার জন্য সিমেক ফাউন্ডেশন এর যাত্রা শুরু ।

প্রতিটি মানুষই স্বপ্ন দেখে। বলতে গেলে স্বপ্ন নিয়েই মানুষ বেঁচে থাকে। আমার মতো আমজনতারা স্বপ্ন দেখি ঘুমের মধ্যে। যার অনেক কিছু ঘুম থেকে জাগার পর আর মনে করতে পারি না। আর যারা খ্যাতিমান হয়েছেন, জীবনে সফল হয়েছেন, তারা স্বপ্ন দেখেন জাগ্রত অবস্থায়। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের। কারাবরন সহ কঠিন সংগ্রাম এর মধ্যে দিয়েই তিনি আমাদের দিয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশ। তাই আমরা আজ স্বাধীন। 

অনেকে স্বপ্ন দেখে কিন্তু তার সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। স্বপ্ন দেখে বসে থাকলে সেই স্বপ্ন কোনদিন বাস্তবায়ন করা যায়না। আমাদের সিমেক ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট শিল্পপতি, লেখক, সাংবাদিক ইঞ্জিনিয়ার সরদার মোঃ শাহীন সিমেক পল্লীর স্বপ্ন লালন করতেন। যেখানে তিনি একটি মিনি স্টেডিয়াম, চমৎকার মসজিদ সহ তেরটি বিল্ডিং বানানোর স্বপ্ন দেখতেন। (সাধারণত তের শব্দটিকে আমরা আনলাকী থারটিন বলি, কিন্তু এই তের সংখ্যাটি তাঁর জন্য লাকী থারটিন)। যেখানে থাকবে একটি তথ্য সমৃদ্ধ রিসার্চ সেন্টার। দেশ বিদেশের উচ্চ শিক্ষার্থীরা এখানে তাঁদের উচ্চতর ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পন্ন করবেন। তাই তিনি  শত বাধা এবং প্রতিকূলতার মাঝেও তাঁর সেই স্বপ্নের হাল ছাড়েন নাই। 

অবশেষে দক্ষিণ বালিপাড়ায় সফল হতে চলেছে তাঁর স্বপ্ন। সিমেক পল্লীর স্বপ্ন। ইতোমধ্যে ডিজাইন প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে। একটি বিল্ডিং এর পাঁচ     তলার ছাদের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। যেখানে থাকবে সিমেক ফাউন্ডেশন এর অফিস, বিনামূল্যে পরিচালিত আবুল কালাম মন্ডল কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রকল্প, বিনামূল্যে পরিচালিত আফছানা খানম সেলাই প্রশিক্ষণ প্রকল্প, শোনিম শাহীন কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি লাইব্রেরী, একটি অডিও ভিজুয়াল মিউজিয়ামসহ আরও অনেক জনকল্যাণমুখী কর্মকান্ড।

সে লক্ষ্যে একটি ব্রসিউর ছাপানো হয়েছে শুরু থেকেই। যেখানে নির্দিষ্ট প্রকল্পের মাধ্যমে উপরোক্ত কাজগুলো করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সিমেক ফাউন্ডেশন এর প্রকল্প সমুহ:-

১)  সাহিয়া-মজিদ শিক্ষা বৃত্তি প্রকল্প

২) আবুল কালাম মন্ডল কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রকল্প

৩) আফছানা খানম সেলাই প্রশিক্ষণ প্রকল্প

৪) জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচি

৫) শোনিম শাহীন কমিউনিটি ক্লিনিক

১) সাহিয়া-মজিদ শিক্ষা বৃত্তি প্রকল্প: সিমেক গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সরদার মোঃ শাহীন এর পিতা মরহুম আব্দুল মজিদ সরদার এবং মাতা মরহুমা সাহিয়া বেগম এর নামে নামকরণ করা হয়েছে এই প্রকল্পটি।

গরীব অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা দিতে এবং আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে সিমেক ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এতে বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছে গরীব অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীরা। ২৬টি স্কুলের প্রায় দুই’শ শিক্ষার্থীর মাঝে চলমান রয়েছে এই প্রকল্প।

২) আবুল কালাম মন্ডল কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রকল্প: আধুনিক বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশের কোন বিকল্প নাই। শুরুতে এই ডিজিটাল শব্দটা নিয়ে কতইনা হাসি ঠাট্টা হয়েছে। কিন্তু আজ এই ডিজিটাল শব্দের গুরুত্ব মানুষ প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুভব করছে। আমাদের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল শিক্ষায় শিক্ষিত করতে ২০১৫ সালে চালু করেন আবুল কালাম মন্ডল কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রকল্প। সিমেক ফাউন্ডেশন খুবই সচেতনতার সাথে সচেষ্ট হয়েছে গ্রামীণ জনপদকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কম্পিউটার শিক্ষায় শিক্ষিত করতে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তারা কিছুটা হলেও অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

৩) আফছানা খানম সেলাই প্রশিক্ষণ প্রকল্প: ‘‘বিশ্বে যা কিছু সুন্দর চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর”। এই নারীদেরকে অবহেলিত রেখে একটি দেশ তথা সমাজ বা একটি সংসারের উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারীদের কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত এবং সাবলম্বী করতে স্থাপিত হয়েছে আফছানা খানম সেলাই প্রশিক্ষণ প্রকল্প। অনেক নারী বিনামূল্যে এই প্রশিক্ষণ নিয়ে কিছুটা হলেও সংসারের হাল ধরতে সক্ষম হয়েছে। অনেকে নিজেরা নিজেদের পোশাক তৈরির পাশাপাশি আশপাশের অনেকের পোশাক তৈরি করে টাকা উপার্জন করে ধরেছেন সংসারের হাল।

৪) শোনিম শাহীন কমিউনিটি ক্লিনিক: সিমেক গ্রুপের অন্যতম সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হলো শিন শিন জাপান হাসপাতাল। বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষে সম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে একটি মডেল হাসপাতাল হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছে জাপান বাংলাদেশ জয়েন্ট ভেনচার শিন শিন জাপান হাসপাতাল।

শুরু থেকেই সুবিধা বঞ্চিত জনগণকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য আয়োজন করেছে বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প। সাড়াও মিলছে প্রচুর। জনগণের সহযোগিতা ও আগ্রহ দেখে গ্রামীণ জনপদের অবহেলিত, অসহায় মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে সিমেক ফাউন্ডেশন স্থাপন করেছে শোনিম শাহীন কমিউনিটি ক্লিনিক। যার কার্যক্রম খুব শীঘ্রই শুরু হবে। এর আওতায় বিনামূল্যে অতীব প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পরামর্শ দিতে সিমেক ফাউন্ডেশন সফল হবে এই কামনা করছি।

৫)  জন সচেতনতামূলক কর্মসূচি: সামাজিক জ্ঞান অর্জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এজন্য দরকার সামাজিক শিক্ষা। সামাজিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে শিক্ষা কারিকুলামে তেমন কিছু আজও যোগ করা হয়নি। ফলে জাতি সর্বদাই বঞ্চিত হচ্ছে সামাজিক জ্ঞান অর্জন থেকে।

এই লক্ষে জনসচেতনতা মূলক নানাবিধ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সিমেক ফাউন্ডেশন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রকাশনা সাপ্তাহিক সিমেক সমাজের সকল স্তরের মানুষের মাঝে বিনামূল্যে নিয়মিত বিতরণ করা হচ্ছে।

সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করে নিয়মিত জাতীয় দিবস সমূহ উদযাপন, র‌্যালি, সভা-সেমিনার, প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম, পাবলিক মোটিভেশান প্রোগ্রাম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মাধ্যমে সামাজিক এই আন্দোলনকে আমরা সবাই মিলে বেগবান করছি।

যাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম আর তীক্ষ্ম মেধার সমন্বয়ে এই সিমেক পল্লীএলাকায় প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সবার প্রত্যাশিত সিমেক ফাউন্ডেশন, সেই মহান মানুষ সিমেক গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সরদার মোঃ শাহীন ভাই এবং তাঁর পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য আমরা সবাই মিলে প্রার্থনা করবো; আল্লাহ তায়ালা যেন তাঁদের সকলকে সুস্থ, আনন্দময়, নিরাপদ জীবন এবং নেক হায়াত দান করেন।

 

শামছুজ্জামান শিবলী

সহ-সভাপতি, সিমেক ফাউন্ডেশন

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com