বিচ্ছেদে দায় কেবলই নারীর!

প্রকাশের সময় : 2023-03-01 13:29:54 | প্রকাশক : Administration
বিচ্ছেদে দায় কেবলই নারীর!

আইরিন আঁচল: বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ। এনিয়ে কতো আলোচনা-সমালোচনা। বিচ্ছেদ আবেদনে নারীরাই যেহেতু এগিয়ে তাই স্বভাবতই তীরটাও এসে পড়ে নারীর ঘাড়ে। বিয়ে দিয়ে শুরু সংসার জীবন। অনেকগুলো ধাপ পেরিয়ে নতুন দম্পতি সাজান তাদের স্বপ্নের সংসার। ভালোবাসা, মান-অভিমান, দুঃখ-কষ্ট সবকিছুর সম্মিলিত কেন্দ্র সংসার। এভাবেই বছরের পর বছর হেসে খেলে দিন কাটান তারা।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শহরকেন্দ্রিক দাম্পত্য জীবনে এসেছে পরিবর্তন। সংসার শুরুর পর অনেকের মাঝে দেখা দিচ্ছে সমস্যা। কেউ কাউকে বুঝে ওঠার আগেই ভেঙে যাচ্ছে সংসার। তথ্যমতে, ঢাকায় দিনে ডিভোর্সের সংখ্যা ৩৯। যেখানে ২৪ ঘণ্টায় ১ দিন সেখানে ৩৯টি ডিভোর্সের আবেদন! অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী করা হয় নারীদের। ঠিকমতো সংসারে সময় না দেয়া, কিংবা আধুনিকতার ছোঁয়ায় নিজেকে রাঙানোই যেন নারীদের মূল সমস্যা।

এগুলো মানতে পারেন না অনেক অভিভাবকই। ফলস্বরূপ সংসারে শুরু হয় অশান্তি। সময়ের পরিক্রমায় বদলেছে সবকিছু। শহরের নারীরা এখন অধিকাংশই চাকরীজীবী ও আত্মনির্ভরশীল। তারা যুদ্ধ করছেন প্রতিনিয়ত। আর তাতেই শুনতে হয়, সংসারে মন একেবারেই নেই! সারাদিন অফিসের ব্যস্ততায় ছুটোছুটির পর অনেকেই নারীর দিকে উড়নচণ্ডী বলে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। অন্যদিকে বলা হয় পর্দানশীল নয়।

আসলে সমস্যাটা পর্দা করা কিংবা না করার নয়। সমস্যাটা মন-মানসিকতার। বিয়ের সময় ছেলেপক্ষ খোঁজে শিক্ষিত, সুন্দরী, আধুনিক, পর্দানশীল, গালে টোল, ভুবন জয় করা হাসির রানীকে। কিন্তু সেই রানীই যখন এসে কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদস্বরূপ জবাব দেন তখন পুত্রবধূ কিংবা স্ত্রী হয় গলার কাঁটা। বিষয়টা এমন হয়ে গেছে, অন্যায় না মেনে প্রতিবাদ করলেই সে নারী অহংকারী। একই ঘরে থেকে ঘরের বউকে পর করে রাখবেন, পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে হেসে খেলে সময় কাটাবেন ও বউয়ের দোষ ধরবেন। আর বউ প্রতিবাদ করলেই বলবেন উগ্রবাদী, বদমেজাজি, মুখে মুখে তর্ক করে বেয়াদব। পাত্রপক্ষ বরাবরই চান ভদ্র পরিবার, বংশীয় নারী। আবার অনেকেই চান চাকরিজীবী মেয়ে। সেইসঙ্গে চান আশির দশকের বউদের মতো পরিপাটি গৃহিণী।

এমন তো আসলে হয় না। ২০১১ সালে ডিএনসিসিতে (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন) তালাকের আবেদন করা হয় দুই হাজার ৮৬৪টি। ডিএসসিসিতে (ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন) করা হয় দুই হাজার ৭৮৬টি। পরের বছর দুই সিটিতে গড়ে তিন শতাধিক বেশি আবেদন জমা পড়ে। ২০১৯ সালে ডিএনসিসিতে তালাকের আবেদন করা হয়েছে ছয় হাজার ১৬৮টি, ডিএসসিসিতে ছয় হাজার ১২৪টি।

এভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে মানসিক চাপসহ পারিবারিক বন্ধন কমে যাওয়াই দায়ী বলে মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা। সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, আগের চেয়ে নারীরা স্বাবলম্বী, স্বাধীন মনোভাব, নারীদের উচ্চ বেতনে চাকরি, আর্থিকভাবে সচ্ছলতা, নির্যাতন সহ্য না করা এবং প্রতিবাদ করার মনোভাবের কারণে তালাকের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।     

২০২০ সালে ডিএনসিসি ও ডিএসসিসিতে ১২ হাজার ৫১৩টি তালাকের আবেদন করা হয়েছে। অর্থাৎ মাসে গড়ে এক হাজার ৪২টির বেশি, যা দিনে গড়ে ৩৫টি, ঘণ্টায় একটিরও বেশি। পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন, ব্যক্তিগত স্বার্থপরতা, উচ্চাবিলাসী মনোভাবের করণে এখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোও সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পেছনে কাজ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে দুইজনের মধ্যে অবিশ্বাসের জন্ম নেয়। এতে করে তালাকের মতো ঘটনা ঘটে। - সংগৃহিত

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com