এবার অপেক্ষা রেল যোগাযোগের
প্রকাশের সময় : 2023-04-12 12:56:08 | প্রকাশক : Administration
মোঃ হাবিবুল আলম: শত বাধা পেরিয়ে গত জুনে চালু হয়েছে নিজেদের টাকার পদ্মা সেতু। চলতি বছরের ডিসেম্বরেই যানজটে নাকাল হওয়া রাজধানীবাসীর অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে মেট্রোরেল চালুর মধ্য দিয়ে। ২০২২ এর মতো ২০২৩ সালেও দেশবাসীকে সুখবর দিবে সরকার। পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে প্রথমবারের মতো ট্রেন চলতে পারে জুন মাসে। এই উদ্যোগের সুফল ভোগ করার অপেক্ষায় আছেন হাজারো মানুষ।
পদ্মা সেতুর মতো রেল সংযোগ প্রকল্প ঘিরেও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবসায়ী, কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষরা। তাদের ধারণা, রেল সংযোগ হয়ে গেলে এ অঞ্চলে গড়ে উঠবে নতুন কারখানা, ফলে বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। অবহেলিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন হবে।
অন্যান্য প্রকল্পের মতোই এখানেও নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। রেলওয়েসূত্রে জানা যায়, ১ হাজার ৬৮০টি নতুন পদ সৃষ্টি হবে। লোকবল নিয়োগের চাহিদা প্রস্তুত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন চাকরি প্রত্যাশীরা। পদ্মা সেতুর অংশে উড়াল রেলপথ থাকবে, ট্রেন চলবে ১২০ কিলোমিটার গতিতে। তাই জুনে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালু হলে প্রথমদিনই এই অভিজ্ঞতা নিতে চান অনেকেই।
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সম্প্রসারিত হবে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র মোংলা বন্দর। রেল যোগাযোগ শুরু হলে মোংলা বন্দর অনেক বেশি সুবিধা পাবে। বন্দরের পণ্য পরিবহনে সড়ক পথ ও নৌপথসসহ রেলপথের সংযোগ জরুরি। কিন্তু মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেল সংযোগ না থাকায় এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন ব্যবহারকারীরা।
মোংলা থেকে সরাসরি রেলপথ চালু হলে এখন থেকে ভুটান বা নেপালে পণ্য যেতে পারবে। এক্ষেত্রে বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের কাজ আরও বেড়ে যাবে। এই প্রকল্পকে সাধুবাদ দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে পদ্মা সেতুর মত রেল সংযোগ প্রকল্পও ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।
১৯৭৪ সালের বাজেটে বঙ্গবন্ধু এ সড়কের জন্য টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। তখন এখানে মাটির রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। তাঁর অসমাপ্ত কাজ তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা করেছেন। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করেছেন। প্রমত্ত পদ্মার বুকে সেতু নির্মাণ করেছেন। আমাদের কল্পনাতেও ছিল না সেতু দিয়ে রেল যাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পদ্মা সেতু দিয়ে রেলসেবা পাচ্ছে।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে যশোর হয়ে খুলনা পর্যন্ত প্রসারিত হবে রেল সেবা। তাই প্রকল্পটি চালু হলে খুলনার মোংলা বন্দর থেকে খালাস করা পণ্য মাত্র ৪ ঘণ্টায় ঢাকায় চলে আসবে। রেল চালু হলে ওই অঞ্চলে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম চাঙ্গা হয়ে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ১ শতাংশ বাড়বে।
নতুন করে রেল নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত হবে মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল। এছাড়াও, বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে ঢাকা-যশোর- বেনাপোল-কলকাতা পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের আরেকটি উপ-রুট স্থাপিত হবে। ফলে এ রুটে জাতীয়, আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ফ্রেইট, ব্রডগেজ কনটেইনার ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
শত ষড়যন্ত্রও পদ্মা সেতুকে রুখতে পারেনি। বিলম্ব হলেও চলতি বছরের ডিসেম্বরে মেট্রোরেল চালু হবে। আশা করা যায়, নতুন বছরের জুন মাসে পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। মেগা প্রকল্পগুলো বিশ্ব বাংলাদেশকে নতুন এক পরিচয় দিবে। - সংগৃহিত