একজন বিচারক এবং বিচারকের মেয়ে

প্রকাশের সময় : 2023-04-12 12:56:50 | প্রকাশক : Administration
একজন বিচারক এবং বিচারকের মেয়ে

আমিনুল ইসলাম: বগুড়ার একটি স্কুলে যে ঘটনাটি ঘটে গেলো, এরপর ওই বিচারক ভদ্রমহিলা কী করে বিচার কাজ চালাবেন। আমি তো সেটিই বুঝে উঠতে পারছি না। মূল ঘটনা হচ্ছে, ওই স্কুলে ছাত্রীদের রোল নাম্বার অনুযায়ী ক্লাস রুম ঝাড়ু দিতে হয়। তো বগুড়ার এক অতিরিক্ত দায়েরা জজের মেয়ের পালা ছিল। ওই মেয়ে কোনোভাবেই ঝাড়ু দেবে না। সে বলেছে, আমার মা বিচারক। আমি এইসব কাজ করতে পারব না। এইসব আমার কাজ না। ওর বান্ধবীরা বলেছে, আমরা সবাই মিলেই তো করবো। কিন্তু এই মেয়ে কোনোভাবেই পরিষ্কার করবে না। অথচ এটি স্কুলেরই নিয়ম। এরপর ক্লাস এইটে পড়া এই মেয়ে বাসায় গিয়ে তার ফেসবুক পেইজে লিখেছে, ‘আমার মা একজন বিচারক। আর তোরা হচ্ছিস বস্তির মেয়ে। আমার সমান হতে হলে তোদের সবার মাকে আগে বিচারক হতে হবে’।

এই স্ট্যাটাস পড়ে ওর ক্লাসের অন্য বান্ধবীরা মন খারাপ করে হয়তো সেখানে কমেন্ট করেছে। তো, কেন তারা কমেন্ট করেছে। এই জন্য ওই মেয়ে এবং তার বিচারক মা স্কুলে এসে ওই ছাত্রীদের মাকে স্কুলে ডাকিয়েছে। এরপর বলেছে, আমার পা ধরে মাফ না চাইলে তোদের ডিজিটাল আইনে মামলা দিয়ে জেলে ভরে দেবো। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে স্কুলের হেডমাস্টার ভদ্রমহিলা পর্যন্ত এতে কিছু বলেননি। শেষমেশ মায়েরা ওই বিচারকের পা ধরে মাফ চেয়েছে।

এই ঘটনার পর ওই স্কুলের ছাত্রীরা রাস্তায় বের হয়ে বিচারক মহিলা সহ প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেছে। চিন্তা করে দেখুন অবস্থা। যে স্কুলে কিনা শেখানোর কথা শ্রেণী বৈষম্যহীন সমাজের কথা। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কিনা উল্টো ভয়ে ওই বিচারকের পক্ষ নিয়েছে। স্কুলে তার পরিচয় কি করে বিচারক হয়? সে যেমন একজন অভিভাবক। অন্য ছাত্রীদের মায়েরাও তো অভিভাবক।

এর বাইরে তো আর কোন পরিচয় থাকার কথা নয়। আমি নিশ্চিত এই বিচারক তার বাসায় এইসবই প্র্যাকটিস করে। যার কারণে ক্লাস এইটে পড়া মেয়ের আচরণও এমন হয়েছে। এই মেয়ে তো বড় হয় আর কিছু না, সাক্ষাৎ ডাইনি হবে। এই বিচারক কী করে বিচারকের চেয়ারে বসে সঠিক বিচার করছেন। আমার তো মাথায় আসছে না। যিনি তার মেয়েকে এই সামান্য শিক্ষাটুকু দিতে পারেননি। উল্টো স্কুলে এসে মেয়ের হয়ে সাফাই গেয়ে অন্য মায়েদের তার পা ধরে মাফ চাইতে বলেছেন। সেই বিচারক কী করে বিচার কাজ পরিচালনা করছে? এই বিচারককে কেন সঙ্গে সঙ্গে তার পদ থেকে সরিয়ে নেওয়া হলো না? আর হেড মাস্টার ভদ্রমহিলা!

উনি ছাত্রীদের আসলে কী শিক্ষা দেবেন? উনার তো সবারই অভিভাবক হবার কথা ছিল। কিন্তু তিনি সেটা হবেন কেন? তিনি হয়ে গিয়েছেন যার অর্থ আর ক্ষমতা আছে, তাদের অভিভাবক। ইনি কি করে এখনো স্কুলের হেড মাস্টার পদে আছেন? দেশের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের উচিত হবে এই ঘটনার প্রতিবাদ করা। ওই বিচারককে শুধু পদ থেকে সরিয়ে ফেললেই হবে না। তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। কারণ তিনি জোর করে কয়েকজন মাকে সবার সামনে পা ধরে মাফ চাইতে বলেছেন। এটি ভয়ানক অপরাধ।

ওই মেয়েগুলোর না জানি কেমন লাগছে এখন। তাদের মায়েদের জনসম্মুখে পা ধরে মাফ চাইতে হয়েছে। এই মানসিক ট্রমা কি এরা এক জীবনে কাটিয়ে উঠতে পারবে? একজন বিচারক যদি অপরাধ করে পার পেয়ে যায়, তাহলে তো আর বিচার কিংবা বিচারকের দরকার নেই। - সংগৃহিত

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com