দশ বছরে রিজার্ভ সাড়ে ৪ গুণ

প্রকাশের সময় : 2018-10-24 17:31:16 | প্রকাশক : Admin
দশ বছরে রিজার্ভ সাড়ে ৪ গুণ

রহিম শেখঃ বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে ৪ দশমিক ৪১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৭ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমদানির বড় ব্যয় পরিশোধ করেও ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষে যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান রিজার্ভ সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। রিজার্ভের দিক দিয়ে প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। যা পাকিস্তানের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে রিজার্ভ বর্তমানে রয়েছে, তা দেশের শক্ত অর্থনীতির বহিঃপ্রকাশ মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, সা¤প্রতিক সময়ে আমদানির উচ্চ ব্যয়ে।

জানা গেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার। গত সেপ্টেম্বর মাস শেষে অর্থনৈতিক সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সাধারণত একটি দেশে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে এমন পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকতে হয়। 

তবে পৃথিবীর উন্নত অর্থনীতির দেশগুলো বড় আকারের রিজার্ভ রক্ষা করে চলে। আর বাংলাদেশের বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে ৯ মাসের আমদানি ব্যয়ের দায় পরিশোধ করা সম্ভব। ২০১৭ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। তারপর আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বড় দেনা পরিশোধ করে সেটি কিছুটা চাপে পড়েছে। প্রতি দুই মাস পর পর আকুর দেনা পরিশোধ করতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩৩ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১৫-১৬ -তে ৩০ দশমিক ১৭ মার্কিন ডলার, ২০১৪-১৫-তে ২৫ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১৩-১৪-তে ২১ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১২-১৩-তে ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১১-১২-তে ১০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১০-১১-তে ১০ দশমিক ৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১০ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তবে ২০০১ সালে রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় কিছুটা দুর্বলতা দেখা দেয়। ওই সময় বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ নেমে আসে ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে। ভাবমূর্তি সঙ্কটের প্রশ্নে আকুর দেনা পরিশোধ আটকে রাখতে হয়। এরপর রিজার্ভ কখনও এত দুর্বল পরিস্থিতিতে পড়েনি। উচ্চ রিজার্ভের ওপর ভর করে সরকার বাংলাদেশ সার্বভৌম সম্পদ তহবিল নামে একটি বড় তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়। ১০ বিলিয়ন ডলারের ওই তহবিলে প্রাথমিকভাবে রিজার্ভ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার জোগানের কথা। তবে সেটি এখনও আলোর মুখ দেখেনি।

গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ডঃ গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, রিজার্ভ রেকর্ড ছুঁয়েছে সেটি ইতিবাচক। তবে আমরা শঙ্কায় রয়েছি যে হারে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। প্রবাসীরা কষ্ট করে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠান। আর আমরা ব্যবসার নামে সেটি বিদেশে নিয়ে যাচ্ছি কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং রফতানি আয় বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের রিজার্ভ বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ও মজবুত পরিস্থিতি ধরে রাখতে রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় অত্যন্ত সতর্ক।

সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান রিজার্ভ সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। রিজার্ভের দিক দিয়ে প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। যা পাকিস্তানের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। রফতানি আয় বৃদ্ধি ও রেমিটেন্স প্রবাহের ইতিবাচক ধারা, বিদেশ থেকে কর্পোরেট ঋণ গ্রহণ এবং কাক্সিক্ষত হারে আমদানি ব্যয় না হওয়া রিজার্ভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে বলে মনে করছেন আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞরা।

সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত কয়েক বছরে দেশের রেমিটেন্স প্রবাহে উর্ধমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। সরকার বিদেশে দক্ষ জনশক্তি প্রেরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় প্রবাসী বাংলাদেশীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে। রেমিটেন্স প্রেরণকারীদের সাবলীল সেবা প্রদানের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকার বিভিন্ন ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোকে সব ধরনের নীতি সহায়তা প্রদান করায় দেশে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া আগের চেয়ে সহজ হয়েছে।  - জনকণ্ঠ

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com