এ মাসে ১২ হাজার মেগাওয়াট ছাড়াবে

প্রকাশের সময় : 2018-12-19 10:28:33 | প্রকাশক : Admin

সিমেক ডেস্কঃ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে বিদ্যুত উৎপাদন ১২ হাজার মেগাওয়াট ছাড়াবে। ২০০৯ সালের ৬ জুন সর্বোচ্চ বিদ্যুত উৎপাদন হয়েছিল ৩ হাজার ২৬৮ মেগাওয়াট। এরপর প্রতিবছরই বিদ্যুত  উৎপাদন বেড়েছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুত  উৎপাদনের রেকর্ড ছিল ১১ হাজার ৬২৩ মেগাওয়াট। ২৬ নভেম্বর বেসরকারি খাতে ১৫০ মেগাওয়াটের আরও একটি নতুন বিদ্যুত  কেন্দ্র উৎপাদনে গেছে।

ডিসেম্বরে আসবে আরও ৫০০ মেগাওয়াট। সে হিসাবে এ বছরের শেষ নাগাদ দেশে বিদ্যুত  উৎপাদন ১২ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে। আগামী বছর জানুয়ারি-ফেব্র“য়ারির মধ্যে আসবে আরও ১ হাজার মেগাওয়াটের মতো। ২০১৮ সালের মধ্যে বিদ্যুত  খাতে সরকার টার্গেটের চেয়ে বেশি বিদ্যুত  উৎপাদন করেছে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত দুই দফা সর্বোচ্চ বিদ্যুত  উৎপাদনের তুলনামূলক চিত্রই বলে দিচ্ছে বিদ্যুত  খাতের অগ্রযাত্রা। দেশজুড়ে লোডশেডিংয়ের যে দুর্বিষহ যন্ত্রণা ছিল তা কমে গেছে। যদিও মাঝেমধ্যে বিতরণ ত্র“টিতে গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েন। এখন বিদ্যুতের জন্য আগের মতো হাহাকার নেই। রাজধানীর সব এলাকায় যেখানে প্রতিঘণ্টায় লোডশেডিং হতো, সেই অবস্থা এখন অনেক সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। শিল্পে সরবরাহে মারাত্মক সংকটও নেই। বিতরণ কোম্পানি আরইবি (পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড) এখন বাসাবাড়ির পাশাপাশি বড় বড় শিল্প কারখানায় দ্রুতগতিতে বিদ্যুত  সংযোগ দিচ্ছে। নির্মাণ করছে মাইলের পর মাইল বিতরণ লাইন।

বিদ্যুত উৎপাদনের এই সক্ষমতা অর্জনে বেসরকারি খাতের অবদান রয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের মোট বিদ্যুত  উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় ৫৫ শতাংশ বেসরকারি খাতের আওতায়। বিদ্যুত  উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে বিদ্যুত  উৎপাদনে স্থাপিত ক্ষমতা ২০ হাজার ৩৪৩ মেগাওয়াট।

তবে উৎপাদনের স্থাপিত ক্ষমতা ২০ হাজার ৩৪৩ মেগাওয়াট হলেও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী দেশে দৈনিক বিদ্যুত উৎপাদনের গড় ১১ হাজার মেগাওয়াটের মতো। পিডিবির তথ্য অনুযায়ী, গত দশ বছরে দেশে  বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা যেমন বেড়েছে তেমনি ব্যবহারকারীর সংখ্যা। পাশাপাশি মাথাপিছু ব্যবহারের পরিমাণও উল্লে−খযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০০৯ সালে যেখানে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৮ লাখ, সেখানে এখন বেড়ে হয়েছে তিন কোটি ১২ লাখ। ২০০৯ সালে দেশের মাত্র ৪৭ শতাংশ মানুষ বিদ্যুত  সংযোগের আওতায় ছিল। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯২ শতাংশ।

সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে, আগামী ১ বছরের মধ্যে দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুত সংযোগের আওতায় নিয়ে আসা। অর্থাৎ আগামী ১ বছরের মধ্যে দেশে সবার জন্য বিদ্যুত  নিশ্চিত হচ্ছে। সরকারের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে বেসরকারি খাত।

বিদ্যুত খাতের উন্নয়নে সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এবং সরকারি নীতি সহায়তার সুযোগে গত ১০ বছরে তারা এ খাতে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা (১২ বিলিয়ন বা ১২০০ কোটি মার্কিন ডলার) বিনিয়োগ করেছেন। ২০৪০ সাল নাগাদ এ খাতে আরও প্রায় সাড়ে চার লাখ কোটি (৫০ বিলিয়ন বা ৫ হাজার কোটি ডলার) বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।

বেসরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগেও (পিপিপি) বিদ্যুত খাতের অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। সরকারের বিদ্যুত  খাত মহাপরিকল্পনা-২০১৬ অনুযায়ী, পিপিপির আওতায় ৫৫টি নতুন বিদ্যুত  প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট।

শুধু উৎপাদন খাতে নয়, বিদ্যুত সঞ্চালন এবং বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণেও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করছে সরকার। সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ উৎসাহিত করার জন্য সরকার নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। বিদ্যুত  খাতের কয়েকটি মেগা প্রকল্পেও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই মেগা প্রকল্পগুলো মূলত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত  কেন্দ্র। বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা সর্বমোট প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত  কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন।

বর্তমান সরকার ক্ষমতার আসার পর বিদ্যুতের যে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, তাতে ২০২১ সালের মধ্যে দেশের মানুষ শতভাগ বিদ্যুত  পাবে। বিদ্যুতের উৎপাদন যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে চাহিদাও। চাহিদা পূরণে সরকার বদ্ধপরিকর। মহাপরিকল্পনার স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এবার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পালা। সেখানে আছে বড় বড় বিদ্যুত  কেন্দ্র। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগামী বছর বেশ কয়েকটি বড় বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদনে আসবে। বর্তমানে মাতারাবাড়ি, রামপাল ও পায়রা বিদ্যুত  কেন্দ্রের কাজ দ্রুত এগুচ্ছে। এগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট করে। -সূত্র : যুগান্তর

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com